কুশিয়ারায় নদী ভাঙ্গনের কবলে ৩টি ইউনিয়ন বছরের ৩/৪ মাস বন্যা লেগেই থাকে। যেনো এটি নিয়মই অথচ এ দায় যেনো কারো নয়! |
মৌলভীবাজারের কুশিয়ারায় নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে দুই উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন। প্রায় তিন যুগ ধরে নদী পাড়ে ভাঙ্গন দেখা দিলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসছেন না। এতে রাজনগর ও সদর উপজেলার উত্তরভাগ ফতেপুর ও মনুমুখ ইউনিয়নের প্রায় ৩০টি গ্রামের দুইশতাধিক বাড়ি ঘর ও ফসলি জমি নদী গর্ভে হারিয়ে গেছে। উজানের বরাক নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে আসা কুশিয়ারা নদীতে প্রতি বছর অন্তত তিন চার মাস লাগাতার বন্যা থাকে। এত দীর্ঘ সময়ে পানির সাথে লড়াই করেন নদীতীরের প্রায় তিন লাখ মানুষ। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙ্গন রোধে যৎসামান্য ব্লক ও জিও ব্যাগ নিক্ষেপ করলেও পরিকল্পনা নিয়ে কোন কার্যক্রম গ্রহন করছেন না তারা। বছর ঘুরে এলেই একই খবর সংবাদপত্রে প্রতিবারই আসে কিন্তু অবস্থা দেখে মনে হয় এ দায় যেনো কারো নয়।
সরেজমিনে গেলে নদী পাড়ের ভুক্তভোগীরা বরাবরই অতীতের সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দোষারোপ করছেন। তারা এ প্রতিবেদককে জানান, ভাঙ্গন রোধে এখনই ব্যবস্থা না নিলে আরো শতাধিক বাড়িঘর নদীতে তলিয়ে যাবে। জেলার রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ও ফতেপুর ইউনিয়নের বাড়ী-ঘরহারা বাসিন্দারা বলেন- ‘যতটুকু হারিয়েছি তা পূরণ করা এ জীবনে সম্ভব নয়। এখন যে জমিটুকু আছে এগুলো যদি সরকার রক্ষা না করেন, তা’হলে পথে বসতে হবে।’ নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের বকশিপুর, ছিক্কাগাঁও, কামালপুর, আমনপুর, সুরীখাল, যোগীকোনা, কেশরপাড়া, সুনামপুর, উমরপুর, কান্দিগাও, জোড়াপুর ও ফতেপুর ইউনিয়নের সাদাপুর, হামিদপুর, বেড়কুড়ি, শাহাপুর, জাহিদপুর, আব্দুল্লাহপুর ও মনুমুখ ইউনিয়নের আরো বেশ কয়েকটি গ্রাম। এদিকে উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের ছিক্কাগাও’র অর্ধেক গ্রাম গেল দু’বছর ধরে নদী গর্ভে তলিয়ে গেছে। গ্রামের ফারুক মিয়া,নেওয়ার মিয়া ও আরকান মিয়া জানান, ঘরবাড়ি হারিয়ে আমরা খোলা আকাশে বসবাস করছি। নদী ভাঙ্গন রোধ করতে খুব দ্রুত যেন সরকারের পক্ষ থেকে একটি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এদিকে গেল দেড় বছর পূর্বে উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী বেড়কুড়ি গ্রামটি ভাঙ্গন রোধে ৩৪ লক্ষ টাকার জিও ব্যাগের একটি প্রজেক্ট একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হলেও নানা সমস্যা দেখিয়ে এখনো কাজ করছেন না তারা। নদী তীরের বেড়কুড়ি গ্রামের ভুক্তভোগী শাহাবুদ্দিন বলেন, কিছুদিন আগে ভয়াল রাতে আমাদের বাড়ির অর্ধেক ঘর ধসে নদীতে তলিয়ে যায়। ভাগ্যিস আল্লাহ আমাদের বাঁচিয়েছেন। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ বিন অলীদ বলেন, দুই উপজেলার ভাঙ্গন কবলিত এলাকা সার্ভে করে একটি তালিকা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়েছে। পাশ হলে ভাঙ্গন রোধে কাজ করা হবে। |