উৎসবে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রবি কিরণ সিংহ রাজেশ, ইবুংহাল শ্যামল, রাকেশ নাওরেম, অওয়াতোবম সমরেন্দ্র। “নিঙোল চাকৌবা” অনুষ্টানের শুরুতে ৪৮০ জন সম্মিলন অতিথিদের বরন করেন এমসিসি সাধারণ সম্পাদক সমরজিৎ সিংহ।
অনুষ্টানে বাংলাদেশের মণিপুরি অধ্যুষিত বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় ২শত জন ভাই-বোনের উপস্থিতি ভুরিভোজ ও উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়। আলোচনা শেষে মনোঞ্জ সাংস্কৃতিক অনুষ্টানে মণিপুরি শিল্পীরা সংগিত পরিবেশন করেন।
উল্লেখ্য, “নিঙোল চাকৌবা” আক্ষরিক অর্থে ভাই কর্তৃক বোনকে ভুরিভোজের আমন্ত্রন জানানো হয়। “হিয়াঙ্গৈগী নিনি পানবা” বা বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে এই উৎসব পালিত হয়। এটি মণিপুরিদের ঐতিহ্যবাহী একটি জাতীয় উৎসব। ভারতের মণিপুরে ও বাংলাদেশে মণিপুরি অধ্যুষিত অঞ্চলে এ উৎসব ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় পালিত হয়। ভাইয়েরা তাদের বোনদের ভূরিভোজে আমন্ত্রণ জানায়, খাওয়া দাওয়ার পর ভাইয়েরা বোনদের নানা উপহার সামগ্রী দিয়ে আশির্বাদ করে। বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে এই উৎসব পালিত হয়।
নিঙোল চাকৌবা উৎসবের প্রাচীন ইতিহাস অনুযায়ী প্রথম শতাব্দীতে রাজত্বকারী মণিপুরি রাজা পাখংবা বিয়ে করেন তার প্রতিদ্বন্ধীপোইলৈতোনের বোন লাইস্নাকে। লাইস্না একবার তার স্বামীর অনুমতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা ভাই পোইরৈতোনকে রাজ প্রাসাদে আমন্ত্রণ জানিয়ে ভূরিভোজের আয়োজন করে। তারপর নানা উপহার সামগ্রী দিয়ে ভাইকে খুশি করে বিদায় জানায়। পোইরৈতোনও আসার সময় বোনের জন্য বিভিন্ন উপহার সামগ্রী নিয়ে এসে বোনকে আশির্বাদ করে। এ উপলক্ষে দীর্ঘ বিরতির পর ভাই বোনের সম্মিলন ঘটে এবং সম্প্রীতি স্থাপিত হয়।
বাংলাদেশে নিঙোল চাকৌবা পালিত হলেও খুব ব্যাপক আকার পায়নি কখনও। এবার বৃহস্পতিবার আদমপুর মণিপুরি কালচারাল কমপ্লেক্স, পেট্রিওটিক রাইটার্স ফোরাম, মণিপুর এবং মণিপুরি ইয়ূথ ফোরাম বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে কমলগঞ্জের আদমপুরে মণিপুরি কালচারাল কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে ব্যাপক আয়োজনে উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয়।
|