1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
নৈরাজ্যবাদ - মুক্তকথা
শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:১৩ অপরাহ্ন

নৈরাজ্যবাদ

হারুনূর রশীদ
  • প্রকাশকাল : শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৪৩০ পড়া হয়েছে

নৈরাজ্যবাদ যেমন রাজনীতির কূফল তেমন সুফলও

 

বলা যায়, বাসস্থান ও জীবিকা সংকটের পাশাপাশি জবাবদিহিহীন কর্তৃত্বের কারণে সৃষ্ট বহুমাত্রিক আন্দোলন মানব মনে নৈরাজ্যিক চিন্তার জন্ম দেয়। তাই নৈরাজ্যবাদ এক ধরনের রাজনৈতিক দর্শন যা মনে করে যে রাষ্ট্র- ব্যক্তির বিকাশে ক্ষতিকর তাই অপ্রয়োজনীয়। রাষ্ট্রবিহীন ব্যক্তিস্বাধীন সমাজই তাদের কাম্য হয়ে উঠে। মানুষের সাথে সম্পর্কের মাধ্যমে কর্তৃত্বের বিলোপ চায় নৈরাজ্যবাদ। নৈরাজ্যবাদীরা অবশ্য কোন সময়ই একমত হয়নি যে কি উপায়ে এটা করা যাবে। নৈরাজ্যবাদের অনেক রকম প্রকারভেদ ও ধরন আছে সেগুলো সব পারস্পরিকভাবে স্বতন্ত্র নয়। এ চিন্তাধারাকে সামাজিক ও ব্যক্তিগত নৈরাজ্যবাদ এই ২ ভাগে ভাগ করা যায়।

“জোসেফ স্তালিন বলেছিলেন, আমরা সেই ধরনের লোক নই, যারা নৈরাজ্যবাদ শব্দটার উল্লেখ হলেই অবজ্ঞাভরে মুখ ফিরিয়ে এবং উন্নাসিকভাবে হাত নেড়ে বলে, ‘ও সম্পর্কে সময় নষ্ট করে কি হবে? ওটা তো আলোচনারই যোগ্য নয়!’ আমরা মনে করি এ রকম সস্তা সমালোচনা মর্যাদাহানিকর ও নিরর্থক।”

“আমরা আবার সে ধরনের লোকও নই, যারা এই চিন্তা করে নিজেদের সান্তনা দেই যে নৈরাজ্যবাদীদের ‘পেছনে কোনো ব্যাপক জনসাধারণ নেই এবং সেজন্য তারা ততটা বিপজ্জনক নয়।’ আজ কার কত বেশি বা কম গণসমর্থন আছে তা গুরুত্বপূর্ণ নয়, যা গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো মতবাদের সারবস্তু। যদি নৈরাজ্যবাদীদের মতবাদ সত্য প্রকাশ করে, তাহলে বলা নিষ্প্রোয়জন যে, তা নিশ্চয়ই নিজের পথ নিজেই কেটে নেবে এবং তার চারিপাশে জনগণকে সমবেত করবে। কিন্তু যদি তা অযৌক্তিক ও মিথ্যা ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে তা বেশিদিন স্থায়ী হবে না এবং শূন্যে ঝুলতে থাকবে। কিন্তু নৈরাজ্যবাদের অযৌক্তিতা অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে।”

“আমরা বিশ্বাস করি, নৈরাজ্যবাদীরা মার্কসবাদের প্রকৃত শত্রু। তদনুযায়ী আমরা এই মত পোষণ করি যে, প্রকৃত শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রকৃত সংগ্রাম অবশ্যই চালাতে হবে। সুতরাং গোড়া থেকে শেষ পর্যন্ত নৈরাজ্যবাদীদের মতবাদ পরীক্ষা নিরীক্ষা করা এবং সমস্ত দিক থেকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তার মূল্য নির্ণয় করা প্রয়োজন।”

নৈরাজ্যবাদকে সংস্কারপন্থী বাম ধারার আদর্শবাদ হিসেবেও ধরা যেতে পারে। বেশির ভাগ নৈরাজ্যবাদী দর্শন প্রতিফলন করে অর্থনীতির রাষ্ট্রবিহীন ব্যাখা। নৈরাজ্যবাদ ব্যক্তিগত চেষ্টাকে অন্তঃর্ভূক্ত করে যা বাজার অর্থনীতি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন সম্পদ ও নৈতিকভাবে অপ্রতিরোধ্য অহমবোধকে সমর্থন করে। অনেকেই মনে করেন, কিছু কিছু নৈরাজ্যবাদীরা সমাজতন্ত্রের কথাও বলে।

লেখক উইলহেলম ওয়েইলিং-এর মতে, নৈরাজ্যবাদ একটি সমাজ ও রাজনৈতিক দর্শন যা রাষ্ট্র-ব্যবস্থার অবসানের কথা প্রচার করে। আইন ও তা প্রয়োগকারী বাহিনী, প্রশাসন, ইত্যাদির সমন্বয়ে গঠিত রাষ্ট্র-ব্যবস্থা প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তি-বিকাশের জন্য বাধা, একটি অত্যাচারের যন্ত্রস্বরূপ, এমন ধারণা থেকে এই মতবাদের উৎপত্তি। এই দর্শনানুসারে রাষ্ট্র, মানুষ ও সমাজের জন্য অপ্রয়োজনীয়।

এ তত্ত্বের স্বাভাবিক অনুসিদ্ধান্ত হল রাষ্ট্র-ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে রাষ্ট্রবিহীন সমাজ-ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা। এই লক্ষ্য অর্জনের উপায় নিয়ে নৈরাজ্যবাদীদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। কেউ বিপ্লবের কথা বলেন, আবার কেউ – মানুষের সদিচ্ছার স্বাভাবিক বিজয়ের মাধ্যমে নৈরাজ্যবাদের প্রতিষ্ঠার কথা বলেন। রাষ্ট্রহীন সমাজ-ব্যবস্থার বিষয়ে তাদের দিকনির্দেশনায়ও পার্থক্য দেখা যায়। সাধারণভাবে – পারস্পরিক চুক্তি ও সদিচ্ছার ভিত্তিতে একটি বিকল্প অর্থনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথা কল্পনা করা হয়।

অরাজকতা বা সন্ত্রাসী-কর্মকান্ডের সাথে নৈরাজ্যবাদকে যুক্ত করা হলেও তত্ত্বগতভাবে এগুলোকে নৈরাজ্যবাদের সরাসরি পরিণতি বলা যায় না।

সমসাময়িক নৈরাজ্যবাদ

৬০-এর দশকে ও ৭০-এর দশকে নৈরাজ্যবাদ বৃদ্ধি পায়। অন্তর্জালে উইকিপিডিয়া থেকে যতদূর জানা যায়, ১৯৬৮ সালে ইতালির কারারাতে একটি আন্তর্জাতিক নৈরাজ্যবাদী সম্মেলনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক নৈরাজ্যবাদী ফেডারেশন গঠিত হয়েছিল। ইংল্যান্ডেও নৈরাজ্যবাদী আন্দোলন শুরু হয় পাঙ্ক রকের মাধ্যমে যাতে ছিল সেক্স পিস্তল ও ক্রাসের মতো ব্যান্ডগুলো। ওই সময় বাসস্থান ও কর্ম সংকটের কারণে পশ্চিম ইউরোপে বহু আন্দোলন নানা ভাবে দানা বাধতে থাকে।

যদিও নারীবাদ নৈরাজ্যবাদের একটি অংশ কিন্তু ৬০-এর দশকে তা ফিরে আসে বিপুল উদ্দ্যমে দ্বিতীয় স্রোতের মাধ্যমে। আমেরিকার নাগরিক অধিকার আন্দোলন ও ভিয়েতনাম যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন, উত্তর আমেরিকায় নৈরাজ্যবাদের উদ্ভব ঘটিয়েছিল বলে উইকিপিডিয়া লিপিবদ্ধ করেছে। অনেকের মতে বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে শ্রমিক আন্দোলন ও প্রাণী অধিকার আন্দোলন নৈরাজ্যবাদে নতুন মাত্রা যোগ করেছিল।

তবে নৈরাজ্যবাদ বিষয়ে সর্বশেষ কথা অবশ্যই বলা যায় যে বিশ্বের কোথায়ও মতবাদ হিসেবে ‘নৈরাজ্যবাদ’ কোন কালেই স্বীকৃতি বা স্থায়ীত্বলাভ করতে পারেনি। আবার নৈরাজ্যবাদীতার আঁস্তাকুড় থেকেই সফল বিপ্লব জন্ম নেয়। নৈরাজ্যবাদ সবসময়ই হিসেবহীন বা জবাবদিহিতাহীন ব্যবস্থা থেকেই জন্ম নেয় যা একসময় রাষ্ট্র কাঠামোর সৎসবলতায় বিলীন হয়ে যায়। [সূত্র:উইকিপিডিয়া ও লাল সংবাদ]

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT