জাতিভেদই হল সবচেয়ে বড় দেশদ্রোহীতা
-অমর্ত্য সেন
মুক্তকথা:২০শে ২টা ১১মিনিট::
জুন সাধারণ মানুষের কাছে পরিচিত ছিলেন বাবাসাহেব বলে। পত্র-পত্রিকা লিখতো বাবাসাহেব আম্বেদকর। পুরো নাম ভিমরাও রামজি আম্বেদকর। জন্ম ১৪ এপ্রিল ১৮৯১ইং। একজন খ্যাতিমান আইনজ্ঞ, রাজনীতিবিদ আর সমাজ সংস্কারক। ভারতে দলিত বৌদ্ধ ধর্ম পুনর্জাগরনের “নির্ভানা” আন্দোলনের পুরোধা। ভারতের, আধুনিক দুনিয়ার কলঙ্ক জাতিভেদ প্রথার নিষ্ঠুর নিষ্পেষণের হাত থেকে নিরীহ কোটি কোটি মানুষকে সমাজে জায়গা করে দেয়ার জন্য আজীবন নিবেদিত হয়ে কাজ করে গেছেন এই মহাজন। সে তো যেই সেই কাজ ছিল না। নীপিড়ন নিষ্পেষণে জর্জড়িত নিম্নবর্গের মানুষদের সমাজে একটুখানি ঠাঁই করে দেয়ার জন্য নিজেই ধর্মান্তরীত হয়ে বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহন করেছিলেন। তিনি মনে করেছিলেন, ভারতের নৃশংস বর্ণপ্রথার কঠিণ কঠোর নিষ্পেষণ থেকে এসব মানুষকে উদ্ধার করে সমাজে ঠাঁই করে দেয়ার একমাত্র পথই অবশিষ্ট আছে ধর্মান্তরীত হয়ে বৌদ্ধ হয়ে যাওয়া। এ চিন্তা থেকে ১৯৫৬সালে তিনি নিজে ধর্মান্তরীত হয়ে বৌদ্ধ ধর্মে ধর্মান্তরীত হবার জন্য সকল দলিত সম্প্রদায়ের মানুষকে তার কালোজয়ী আহ্বান জানান। তিনি ছিলেন ভারতের প্রথম আইন মন্ত্রী ও ভারত সংবিধানে প্রধান রূপকার। তার মৃত্যুর অনেক পরে ১৯৯০সনে তাকে সর্বোচ্চ “ভারতরত্ন” উপাধি দেয়া হয়।
এই মহামানবের ১২৫তম জন্মতিথি পালন করলো লন্ডনে “লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স”। আর এই আয়োজনে আরেক নোবেল বিজয়ী মহাজন অমর্ত্য সেন তার যুগান্তকারী বক্তব্য ভারতের নিকৃষ্ট জাতিভেদ প্রথার বিরুদ্ধে। তিনি বলেছেন ভারতে তারাই আসল দেশদ্রোহী যারা আজও নিকৃষ্ট জাতিভেদ প্রথাকে মনেমনে হলেও লালন করে যাচ্ছেন। তিনি রাজনীতিকদের দিকেই মূলতঃ আঙ্গুল তুলে বলেছেন যে রাজনীতির ব্যবসায়ীরাই এই ঘৃণ্য জাতিভেদ প্রথার ফায়দা তুলেন বেশী। তাই জাতিভেদ ভিত্তিক রাজনীতির চেয়ে ভয়ংকর দেশদ্রোহী কাজ ভারতে আর কিছু নেই কথাটি সোঝাসুঝি বলে দিলেন নোবেল বিজয়ী অমর্ত্যসেন।