সূত্র জানায়, ওই প্রকল্পে ৭২টি প্যাকেজে কাজ হওয়ার কথা। ইতিমধ্যে ৭০টির টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়েছে ৫৮টি’র এবং এর মধ্যে ৪৫টি প্যাকেজের কাজ চলছে। প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ৩০ কিলোমিটার তীর সংরক্ষণ, আড়াই কিলোমিটার নতুন ফ্লাড ওয়াল নির্মাণ, ৭৬৫ মিটার পুরাতন ফ্লাড ওয়াল নির্মাণ, ৮৬ কিলোমিটার মনুবাদ শক্তিশালী করণ, ১২ কিলোমিটার চর অপরারণ ও ২২৮ একর ভুমি অধিগ্রহণ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্লক নির্মাণে নির্ধারিত(সিলেকশন গ্রেড) বালু ও পাথর ব্যবহার করার শর্ত থাকলেও স্থানীয়ভাবে নদী থেকে তোলা বালু ও পূর্বে ব্যবহারকৃত নিম্নমানের পাথর ব্যবহার হচ্ছে। ফলে নির্মিত ব্লকগুলো নিয়ে আশংকা করছেন স্থানীয়রা। আবার অনেক জায়গায় নদী থেকে কাদা মিশ্রিত বালু তুলে জিও ব্যাগ ভরার অভিযোগ রয়েছে। যার গুণগতমান নিয়ে স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের মধ্যে নানা প্রশ্ন উঠেছে। প্রকল্পে ঘানি ব্যাগ ব্যবহারের কথা থাকলেও কোথাও এর দেখা মেলেনি।
সরেজমিন মনু প্রকল্পের আওতাধীন রাজনগর উপজেলার কোনাগাঁও-খেয়াঘাট-এ গেলে দেখা যায়, ব্লক তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের পাথর ও বালু। পাথরের সাথে সিমেন্ট মিশ্রিত দেখে ধারণা করা হচ্ছে পূর্বে কোথায় এই পাথর গুলো ব্যবহার হয়েছে। অপরিকল্পিতভাবে জিও ব্যাগ গুলো নদীতে ফেলা হয়। কামারচাক বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায় মনু নদীর মধ্যখানে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে এবং অনেক জিও ব্যাগ চরে বালির নিচে তলিয়ে গেছে। দস্তিদারেরচক, টগরপুর, আদিনাবাদ, খাসপ্রেমনগর, ভোলানগর-মিঠিপুর ও প্রেমনগর অংশে একই চিত্র। খাসপ্রেমনগর এলাকায় গেলে দেখা যায়, টাস্কফোর্স জিও ব্যাগ চিহ্নিত করে যাওয়ার পরেও নদীর চরে পড়ে আছে অরক্ষিত অবস্থায়। অথচ সরকারি নির্দেশনা রয়েছে টাস্কফোর্স জিও ব্যাগ গণনা করার ১৫ দিনের মধ্যে নদীতে সংশিষ্ট স্থানে ফেলার। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যাগ গুলো নদীতে না ফেলায় জিও ব্যাগের গুণগতমান কমে যাচ্ছে। এদিকে স্থানীয়রা বলছে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বর্ষা মৌসুমের অপেক্ষায় রয়েছে। নদীতে পানি বাড়ার সাথে সাথেই জিও ব্য্যগের সেলাই কেটে দিলে জিও ব্যাগ গুলো নদীতে ভেসে যাবে। ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ এলাকায় নেই সাইট অফিস কিংবা ব্যয় নির্দেশিকা সাইন বোর্ড। অথচ প্রকল্পে সাইট অফিস স্থাপনের জন্য রয়েছে বরাদ্দ।
কামারচাক বাজার এলাকার মহব্বত উল্ল্যাহ, আব্দুল করিম, ব্যবসায়ী তছির আলী ও সাজিদ আলী বলেন, খরচ বাঁচানোর জন্য বস্তা(জিও ব্যাগ) নদীর পাশে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় না ফেলে নদীর তল দেশে ফেলা হয়েছে। অনেক বস্তা এখনও চরে বালির নিচে রয়েছে। বর্ষা আসলেই চরের বস্তাগুলো স্রোতের টানে চলে যাবে। এদিকে টাস্কফোর্স গণনা করে যাওয়ার পরেও অনেক বস্তা নির্ধারিত জায়গায় ফেলা হয়নি।
|