লন্ডন: সোমবার, ২৪শে পৌষ ১৪২৩।। স্ত্রী-র বদলি চেয়ে ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে টুইট করেছিলেন এক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। আর যায় কোথায়, বদলির আশ্বাস তো পেলেনই না, উল্টে মন্ত্রী তাঁকে বরখাস্ত করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। গেল রোববার ওই তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর টুইট এবং সুষমার পাল্টা টুইটে সরগরম হল সোশ্যাল মিডিয়া। লিখেছে আনন্দবাজার পত্রিকা।
সুষমা স্বরাজ এমনিতেই টুইটারের মাধ্যমে অনেককে সাহায্য করেন। কখনও চিকিৎসার জন্য ভিসা পেতে মিশরীয় মহিলাকে সাহায্য করেন, তো কখনও নরওয়ে থেকে ভারতীয় দম্পতির কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন তাঁদের সন্তানকে। তাঁর এই মনমোহিনী কাজের জন্য সব সময়ই তাঁর টুইটারে একের পর এক সাহায্যের আবেদন উপচে পড়ে। রবিবারও তেমনই একটা টুইট করেছিলেন ওই তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী স্মিত রাজ।
স্মিত পুণেতে কর্মরত। তাঁর স্ত্রী রেলে কাজ করেন। কর্মসূত্রে গত এক বছর ধরে ঝাঁসিতে রয়েছেন স্ত্রী। স্ত্রীর বদলি চেয়ে টুইট করেন তিনি। সুষমার উদ্দেশে তিনি লেখেন, “আমি আর স্ত্রী বছরখানেক ধরে আলাদা রয়েছি। দয়া করে আমাদের এই বনবাসের ইতি ঘটান।” তাঁর এমন অনুরোধ দেখে ভীষণ বিরক্তই হন সুষমা। পাল্টা টুইট করেন, “আপনি বা আপনার স্ত্রী যদি আমার মন্ত্রকের কর্মী হতেন। তা হলে বদলির বদলে বরখাস্তের নির্দেশ দিতাম।” এই টুইটে ট্যাগ করে দেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুকেও। রেলমন্ত্রীও সায় দেন সুষমার জবাবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য রেলের উচ্চপদস্থ কর্তাদের নির্দেশ দেন।
তাঁর ব্যবহৃত ‘বনবাস’ শব্দটিতেও ঘোর আপত্তি জানিয়েছেন সুষমা। কারণ, ওই দিনই আমেরিকা থেকে এক ব্যক্তি সুষমাকে টুইট করে জানান, স্ত্রী ভিসা পাচ্ছেন না তাই অনেক দিন ধরেই আলাদা রয়েছেন তাঁরা। বিষয়ে সুষমার হস্তক্ষেপ চান তিনি। যার জবাবে সুষমা দুঃখপ্রকাশ করে বলেছিলেন, “এই বনবাস খুব তাড়াতাড়ি শেষ হওয়া উচিত।” এর পরই স্ত্রীর বদলি চেয়ে টুইট করেন ওই তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। যেখানে তিনি ‘বনবাস’ শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন।
দুই মন্ত্রীর কড়া টুইটের পরে অবশ্য আর কোনও কথা বলেলনি ওই তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। তাঁর টুইট যে এই ভাবে উল্টো দিকে মোড় নেবে তা হয়ত বুঝে উঠতে পারেননি তিনি।
এসব নিয়ে সাবেকি প্রথায় সম্পাদকীয় উপসম্পাদকীয় লিখার যেমন সময় নেই তেমনি মানুষেরও ওতো লম্বা ফিরিস্তি পড়ার সময় নেই। তাই এখানেই অত্যন্ত কম কথায় বলতে চাই, সুষমা স্বরাজের ব্যবহৃত ‘বনবাস’ শব্দটি এই ছোট্ট কাজের লোকটি ব্যবহার করায় অপরাধটি কি করেছে আমরা বুঝতে পারিনা। শ্রীমতি সুষমাজি তো হেসে বিষয়টিকে সুন্দর মানসিকতায় দেখতে পারতেন? এতো জনসেবার সুখ্যাতি, যশোকীর্তি, জ্ঞানগরীমা থাকার পরও রাষ্ট্রের দায়ীত্ববান একজন মহিলা হয়ে তিনি তা পারেননি। আমি একজন সাধারণ মানুষের কাছে তো তিনিই বেশী অসুভন করেছেন। কিন্তু আমাদের মত সাধারণ মানুষের কথা তো তাদের কানে উঠেনা। তাই দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে শুধু আক্ষেপের সুরে বলতে হয়- হায়রে দেশ আর আমাদের অভাগা মানুষ!