মুক্তকথা নিবন্ধ।। ৯০-এর দশকের শেষের দিকে প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা সৌদি আরবে গিয়েছিল। তাদের একটি বড় অংশকে সৌদি সরকার সে সময় শরণার্থী হিসেবে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে এবং এখনও দেখভাল করছে। তবে ২০১৪সালের দিকে এবং এর পরে বাংলাদেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে বহু রোহিঙ্গা সৌদি আরব গিয়েছিল এবং বিভিন্ন জায়গায় কাজ নিয়েছিল। এদের কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবার পর এখন তারা অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। এদেরকে নিয়ে সৌদি সরকার খুব জোড়ালো প্রশ্ন তুলেছে। তাদের ইচ্ছা যেহেতু এরা বাংলাদেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে সৌদিতে গিয়েছিল অতএব অনিয়মিত হয়ে পড়ার পর এখন তাদের বাংলাদেশেই ফেরত পাঠাতে হবে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন যোগাযোগও করেছে সৌদি আরব।
বিষয়টি প্রথম উঠে আসে সম্প্রতি আবুধাবীতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতগনের এক সম্মেলনে। তখনই জানাজানি হয় যে সৌদি সরকার প্রায় ৪২ হাজার বাংলাদেশের পাসপোর্টধারী রোহিঙ্গাকে ফেরত নেয়ার জন্য বাংলাদেশকে তাগিদ দিচ্ছে। সৌদি মতে যেহেতু এদের পাসপোর্ট বাংলাদেশের এবং এখন এরা অনিয়মিত হয়ে পড়েছে সুতরাং এদেরকে বাংলাদেশেই ফেরত পাঠাতে হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের কিন্তু ভিন্ন মত। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে এরা রোহিঙ্গা মায়ানমারের মানুষ। যদি ফেরত পাঠাতেই হয় তা’হলে মায়ানমারে পাঠাতে হবে। বাংলাদেশ নিতে যাবে কেনো! বিবিসি’কে এমন জবাব দিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্দুল মোমেন। তিনি আরও বলেছেন যে, এ নিয়ে সৌদি সরকার বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। তবে আসন্ন ১২ ফেব্রুয়ারী ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য উভয় দেশের দুইদিনব্যাপী যৌথ কমিশনের সভায় সৌদি পক্ষ থেকে বিষয়টি উত্থাপন করা হবে বলে কূটনৈতিক মহলের ধারণা।
এমন অবস্থায় যৌথ কমিশনের বৈঠকে যদি এ আলাপ উঠে আসে তা’হলে বাংলাদেশ কোন দিকে যাবে সে বিষয়ে কূটনৈতিক মহল সঠিক করে কিছু বলতে পারছেন না।