মুক্তকথা সংবাদকক্ষ।। জায়গা-জমি বেচা-কেনা হয়। এটি বিশ্বব্যাপী সকলেই জানে। কিন্তু দেশ বেচা-কেনা হয় তা কোন কালেই শুনিনি। কখনও শুনবো এমন ভাবতেও পারিনি। দেশে-দেশে যুদ্ধ হয়। এক সময় ছিল যুদ্ধে হেরে গিয়ে এক দেশ বিজিত দেশের দখলে চলে যেতো। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পর্যন্ত এমন ঘটেছে। এই আধুনিক কালেও ইরাক-আমেরিকা যুদ্ধের পর গোটা ইরাক আমেরিকার দখলে নিয়ে নেয়া হয়। দশকেরও উপর সময় ইরাক আমেরিকার দখলে ছিল। বিশ্বের প্রাচীনতম সভ্যতার দেশ ইউফ্রেটিস বিধৌত মেসোপটেমিয়া সভ্যতার দেশ ইরাকের পূরাকীর্তি অবাধে লুন্ঠন হয়েছে। পুরো যাদুঘর ভেঙ্গে লুঠপাট হয়েছিল সে সময়।
বিগত দুই দশক সময় পার হয়েছে তেমন কোন যুদ্ধ বা দখলের ঘটনা বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করেনি। কারণ হিসেবে এটিই বলা যায়, হয় যুদ্ধবাজদের তহবিল সংকট নয়তো কোথায়ও এখনও গোলবাঁধানো সম্ভব হয়ে উঠেনি। অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকের অভিমত যে, বেশ কয়েক যুগ ধরে চেষ্টা চলছে কাশ্মীর সমস্যাকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তানের মাঝে কোন গোল বাঁধানো যায় কি-না! কয়েক বছর পর পরই একবার করে কাশ্মীর বিষয়কে চাঙ্গা করে তুলা হয়। বিশ্বময় গরম গরম খবর তৈরী হয় কাশ্মীর নিয়ে। মাস কয়েক অবস্থা গরম রাখে, দুই পারমানবিক শক্তিধর তাদের অস্ত্রের ধার পরীক্ষা করে নেয় এ লঙ্কাকাণ্ড বাঁধিয়ে আর এতে আত্মাহুতি দেয় কাশ্মীরের নিরীহ মানুষজন। বাইরে দাড়িয়ে দুনিয়ার শক্তিধরেরা এ সুযোগে তাদের অস্ত্রের ধারও কম-বেশী পরীক্ষা করে নেয়ার সুযোগ করে নেয়। কাশ্মীরের সমস্যার আর কোন সমাধান হয় না। যেমন আজো হয়নি ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান। তবে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন বিগত আট দশকে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলতে খেলতে হয়রান হয়ে পড়েছে। আর কত মায়ের বুক খালি হবে? আর কত রক্ত দিতে হবে?
কাশ্মীর তাই নতুন ভরসা! আপাততঃ রোহিঙ্গা বিষয় খুব কাজে না লাগলেও ভবিষ্যতে কাজে লাগানো যেতে পারে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।
জায়গা-জমি বেচা-কেনার মত এবার দেশও বিক্রি হবে বলেই মনে হয়। গ্রিনল্যাণ্ড ভূপৃষ্টের উত্তর গোলার্ধের দেশ। ডেনিশদের একটি স্বায়ত্ব শাসিত এলাকা। মোট জনসংখ্যা মাত্র ৫৬,৬৮৮জন। এদের সকলেই ডেনিশ বংশোভুত মানুষ। বিক্রেতা ডেনিশ রাণী আর ক্রেতা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! কথাটি শুনতেও অবাক লাগে। কিন্তু আমরা যতই বাকহীন হই না কেনো চমক লাগানোর মত এসব ঘটনা ছিঁটে ফোঁটা হলেও বিশ্বে ঘটছে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুরো গ্রীনল্যাণ্ড খরিদের ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। এ নিয়ে তার ওভাল অফিসেও আলাপ হয়েছে। শিল্পে ব্যবহার্য্য ধাতব পদার্থের জন্য চীনাদের সাথে প্রতিযোগীতা ও রুশীয়দের নব্য সামরিক পরিকল্পনা মোকাবেলার উদ্দেশ্যে মিঃ ট্রাম্পের গ্রীনল্যাণ্ড খরিদের প্রস্তাবনা। কারণ গ্রীনল্যাণ্ডের বরফের নিচে রয়েছে আধুনিক শিল্প ধাতবের বিশাল মওজুদ। কিন্তু ডেনমার্ক প্রধানমন্ত্রী মেতে ফ্রেডেরিকসেন না বলে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন গ্রীনল্যাণ্ডের মালিক আমরা নই বরং গ্রীনল্যাণ্ডের বসবাসকারী মানুষই মূল মালিক। গ্রীনল্যাণ্ডের নেতা কিম কিয়েলসন, ডেনমার্ক প্রধানমন্ত্রী মেতে ফ্রেডেরিকসেন ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ নিয়ে আলাপে বসার কথা ছিল কিন্তু ডেনিশ প্রধানমন্ত্রী বিক্রির বিষয় নাকোচ করে দেয়ার পর ট্রাম্পও তার ডেনমার্ক সফর বাতিল করে দিয়েছেন। হোয়াইট হাউস মনে করে ন্যাটোর খরচ হিসেবে অনেক পাওনা হয়েছে সদস্যদেশ ডেনমার্কের কাছে। আর তাই গ্রীনল্যাণ্ড খরিদের তার এমন দাবী।