মোহাম্মদ মরহিব মিয়া সেফিল্ড বিশ্বঃ বিদ্যালয় থেকে কেমিক্যাল ইন্জিনিয়ারিংএ ডিগ্রী লাভ করে মেলটন কিংসে চাকুরীরত ছিলেন। তিনি কার্ডিফের প্রবীন মোরব্বী মরহুম আলহাজ্ব মোজাম্মিল মিয়া সাহেবের ছোট ছেলে। মৌলভীবাজার জেলার কচুয়া গ্রামে উনাদের বাড়ী। উনার বয়স আনুমানিক ৩০ বছর। সুস্বাস্থ্যের জন্য উনি নিয়মিত হাঁটতেন এবং কার্ডিফে অনুষ্ঠিত বাৎসরিক মেরাতনেও কয়েকবার অংশগ্রহণ করেছিলেন। এম্যাচুর বক্সার হিসেবে গত শনিবার একটি বক্সিং প্রতিযোগিতায় উনি অংশগ্রহণ করেন এবং বিজয়ীও হন। কিন্তু সে খেলায় মরহিব মিয়া প্রচন্ড আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। খেলায় উপস্থিত প্যারা মিডিকস্ কতৃক প্রাথমিক চিকিৎসা লাভের পর তাকে নিজ বাসায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। জনাব মরহিব মিয়ার বড় ভাই জনাব মবশ্বির মিয়ার কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী(উনার ফেইসবুক একাউন্ট ও সরাসরি আলাপের সূত্রধরে) উনার ভাই পরদিন রোববার বিকেল বেলা উনাদের বোনের কাছে সর্বশেষ টেকস্ট মেসেজে জানিয়েছিলেন উনি ভালো আছেন এবং ছোটখাটো যেটুকু সমস্যা আছে তা থেকে সেড়ে উঠবেন ইন শাহ আল্লাহ। তারপর থেকে সোমবার এবং মঙ্গলবার উনারা আর কোন সংবাদ পাচ্ছিলেন না। দুদিন কাজে অনুপস্থিত থাকায় বুধবার উনার অফিস থেকে বড় ভাইয়ের কাছে মরহিব মিয়ার খবরা-খবর জানার জন্য ফোন আসে। এবং তখনই পরিবারের পক্ষ থেকে মেলটন কিংসের যে বাসায় উনি ভাড়া থাকতেন সেখানে ছুটে যান লন্ডন পুলিশের ফরেনসিক বিভাগে কর্মরত উনাদের মেজ ভাই। উনার বাসার দরজায় নাড়া দিয়ে যখন কোন সাড়াশব্দ পাচ্ছিলেন না তখন বাসার মালিকের সাহায্যে দরজা খুলে দেখতে পান জনাব মরহিব মিয়ার মৃতদেহ বিচানায় পড়ে আছে( ইন্না-লিল্লাহী ওয়াইন্না ইলাহি রাজিউন)। এ সংবাদের জন্য উনারা কেহই প্রস্তুত ছিলেন না, বিশেষ করে মরহুম মরহিব মিয়ার মায়ের কান্না শুনলে চোখের পানি ধরে রাখা কঠিন। বর্তমানে মরহিব মিয়ার মৃত দেহ ময়না তদন্তের জন্য কতৃপক্ষের হেফাজতে আছে। মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে বক্সিং খেলায় আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার পর প্যারা মেডিকস্ কতৃক প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হয়েছে কিনা তাহা সুষ্ঠু তদন্তের জন্য জোর দাবী জানানো হয়েছে। কার্ডিফের বাঙালী কমিউনিটিতে এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর সংবাদে গভীর শোক বিরাজ করছে। উল্লেখ্য যে কিছুদিন পূর্বে কার্ডিফের রিভারসাইড এলাকা থেকে জনাব রফিকুল ইসলাম উনার পরিবারের সদস্যদেরকে নিয়ে বাংলাদেশে গিয়েছিলেন উনার ছোট ছেলের চিকিৎসা করাতে। সিলেটের একটি ভাড়া করা বাসাতে সবাই রাতের খাবার খেয়ে ঘুমানোর পর জনাব রফিকুল ইসলাম ও উনার ছোট ছেলে আর জেগে উঠেন নি। উনার স্ত্রী, বড় ছেলে ও একমাত্র মেয়েকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পর কিছুদিন মৃত্যুর সাথে সংগ্রাম করে উনার মেয়েটিও গতকাল পরলোক গমন করেছেন(ইন্না লিল্লাহী ওয়াইন্না ইলাহি রাজিউন)। উভয় ঘটনায় এখানকার বাঙালী কমিউনিটি গভীরভাবে শোকাহত ও ঘটনাগুলোর নিরপেক্ষ তদন্ত সহ পাশাপাশি দেশে বেড়াতে গিয়ে যেন কোন প্রবাসী নিরাপত্তাহীনতার শিকার না হোন সেই দাবীও জানিয়েছেন। |