মুক্তকথা সংবাদকক্ষ।। জানুয়ারীর ১৯তারিখ ২০২০সাল। মোদীভারতের সামাজিক, রাজনৈতিক কিংবা সাংস্কৃতিক ইতিহাসে এক মাইলফলক হিসেবে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে এ দিনটি।
স্বাধীন রাষ্ট্রচিন্তার জন্ম লগ্নের ভাবধারা ধর্মনিরপেক্ষতা থেকে সরে এসে ভারত সাম্প্রদায়ীকতার দিকে ধাবিত হয়েছে, বিশ্বব্যাপী এমন দুঃখজনক ধিক্কারের বাক্যতীর যখন ভারতের দিকে ঘুরে ঘুরে ফিরছিল ঠিক তখনই কেরালা রাজ্যের এ ঘটনাকে অনেকেই সাহবাশ সাহবাশ করছেন আবার অনেকেই এ ঘটনাকে ধিক্কার থেকে নিষ্কৃতির নতুন করে মোদী রাজনীতির সাজানো নাটক বলে অনুমান করছেন।
কেরালার আলাপ্পুজা শহরের কাছে ‘চেরুভেলি জামাত মসজিদ’-এ উল্লিখিত তারিখে এক হিন্দু দম্পতির বিবাহানুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। গণমাধ্যম কৌড়ায় প্রকাশিত সৈকত হালদারের সংবাদে জানা যায় যে, পরিবারের কঠিণ অর্থনৈতিক সংকটময় বেহাল অবস্থার কারণে কণ্যার মাতা পার্শ্ববর্তী মসজিদ কমিটির কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। মসজিদ কমিটি সাথে সাথে তার কথায় সায় দেন। ফলে আলাপ্পুজার ‘চেরুভেলি জামাত মসজিদ’-এ নিখরচায় তাদের মেয়ের বিবাহানুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। শুধু তাই নয়, মসজিদের নামাজকক্ষকে হিন্দু বিবাহের মণ্ডপের নমুনায় সাজানো হয়, যেখানে হিন্দু প্রথানুসারে কনে অঞ্জু ও বর শরৎ-এর শুভবিবাহ সম্পন্ন হয়।
বিবাহের রীতি অনুসারে প্রায় ১হাজার অতিথিকে মসজিদের পক্ষ থেকে মসজিদের ভেতরেই নিরামিষ খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এখানেই শেষ নয়, বর-কনেকে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে মুদ্রাখচিত ১০টি সোনার খণ্ড ও নগদ ২লাখ রুপি উপহার স্বরূপ দান করা হয়। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই ভিজয়ান তার ফেইচবুকে বর-কনেকে অভিনন্দন জানিয়ে লিখেছেন।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ ভারত যখন কালের এক ভয়ঙ্কর সংকটকাল অতিক্রম করছে ঠিক তখনই এমন সম্প্রীতির ঘটনা কার মনে না খুশীর জোয়ার তুলে দেয়। এ ঘটনা ভারত, পাকিস্তান কিংবা বাংলাদেশের মসজিদ সংস্কৃতির ইতিহাসে এক যুগান্তকারী নতুন সংযোজন। ধর্মীয় সম্প্রীতির এমন উদাহরণ কেবল ভারতেই সম্ভব।