মুক্তকথা নিবন্ধ।। দুনিয়ার বড় শক্তিশালী দেশগুলোর একটি হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পূর্ণ গায়ের জোড়ে মানুষ খুনের সনদধারী হয়ে কাজ করে যাচ্ছে বিগত শতাব্দী ধরে। তাদের দাবী তারা সন্ত্রাসবাদীদের দমনে এমন কাজ করছে। আর নরহত্যার মত মহাঅপরাধের একাজ সম্পন্ন করতে ইদানিং তারা ‘ড্রোন’ দ্বারা আক্রমন চালিয়ে যাচ্ছে তাদের পছন্দসই বিভিন্ন লক্ষ্যে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় এসেই ‘ড্রোন’ আক্রমনের যে আর্জিতে সই করেছিলেন সেই আক্রমনে ইয়েমেনে ২৩জন সাধারণ মানুষকে প্রান দিতে হয়। তাদের মধ্যে ১০জনই ছিল নিরপরাধ মানবশিশু। একটি সদ্যজাত শিশুও ছিল সে তালিকায়।
এতোবড় পাশবিক হত্যাকান্ডের পর কোথায় মার্কিনীরা ক্ষমা চেয়ে ভুল স্বীকার করবে; অথচ ট্রাম্প খুবই আনন্দিত হয়ে অমানবিক এ হত্যা ঘটনাকে তার বিজয় বলে আখ্যায়িত করলেন। সাথে সাথে মার্কিনীদের এহেন বেআইনী নরহত্যা কর্মসূচীকে আরো একধাপ এগিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিলেন। আমেরিকার এই ‘ড্রোন’ আক্রমন প্রথম অনুমোদন পায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা’র সময়। সে সময় ওবামা প্রশাসন হাজার হাজার নিরপরাধ সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছিল। আমরা অনেকেই জানিনা মার্কিনীদের সেই হত্যা তালিকায় কারা কারা আছেন! মানুষ জানুক বা না জানুক তাতে আমেরিকানদের কিছু যায় আসে না। সন্ত্রাসী হত্যার নামে তাদের ওই নরবলী তালিকায় অতীতে সাংবাদিক, রাজনীতিক, শান্তিকর্মীসহ অসংখ্য নমুনার সমাজকর্মী ছিল যাদের তারা ‘ড্রোন’ হামলার মাধ্যমে হত্যা করেছে। সবচেয়ে জঘন্য নিন্দনীয় কাজ হচ্ছে আমেরিকা প্রশাসন সবসময়ই তাদের এই জঘন্য অপরাধকে নির্বঘ্ন নির্বিবাদে চালিয়ে যাচ্ছে এবং নিরপরাধ মানুষ হত্যাকে ভিন্নভাবে দেখিয়ে চলেছে অবিরাম। বলতে গেলে বিগত শতাব্দী ধরে।
বিগত কয়েক দশক ধরে “রিপ্রিভ” নামের লন্ডন ও নিউইয়র্ক ভিত্তিক একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান এই মানব হত্যা বন্ধের পক্ষে তুমুল লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। আমেরিকা প্রশাসনের এমন আমানবিক হত্যাযজ্ঞ চিরতরে বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত “রিপ্রিভ” তাদের প্রতিবাদী কাজ চালিয়ে যাবে এটি নিশ্চিত। কিন্তু এ বিশ্বে আর কি কেউ নেই, কোন অন্য শক্তিধর দেশ বা কোন নোবেল বিজয়ী কিংবা অন্য কোন রাজনৈতিক শক্তি যারা এগিয়ে আসবেন উদ্বাহু হয়ে সাম্রাজ্যবাদী মার্কিনীদের এ নরবলি বন্ধের কাজ এগিয়ে নেয়ার জন্য!