1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
কালের সাক্ষী কমলারাণীর দীঘি চলে গেছে ব্যক্তি মালিকানায়? - মুক্তকথা
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৩ পূর্বাহ্ন

কালের সাক্ষী কমলারাণীর দীঘি চলে গেছে ব্যক্তি মালিকানায়?

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : বৃহস্পতিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৮
  • ৮৪১ পড়া হয়েছে

এ কি করে সম্ভব?

সৈয়দ বয়তুল আলী।। মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজলোয় প্রায় ৪০০ বছর পূর্বে রাজ রাজন্যের বসবাস ছিল বলে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়। রাজ পরিবারের মধ্যে শেষ বংশধর হিসেবে রাজা সুবিদ নারায়ণের র্কীতি এখনও কালের সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। রাজা সুবুদ্ধি নারায়ন বা সুবিদ নারায়ণ রেখে জাননি রাজ প্রাসাদ অথবা রাজবাড়ী তবে রেখে গেছেন ঐতিহাসিক এক দীঘি। কেউ কেউ বলেন সাগর দীঘি আবার কেউ কেউ বলেন কমলারানীর দীঘি।
সুবিদ নারায়ণের স্ত্রী কমলা রানীর নামেই এই দীঘিটি সমধিক পরিচিত। কিংবদন্তি আছে, প্রজা হিতৈষী রাজা সুবিদ নারায়ন শুষ্ক মৌসুমে জনসাধারণের পানীয়জলের সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি দীঘি খননের পরিকল্পনা নেন। নিজ রাজ্যের ১৫০ বিঘা জমি নিয়ে বিস্তৃত এই দীঘি খনন করা হয়। সহস্রাধিক শ্রমিকের ৫/৬ মাসের ঘামে ও শ্রমে তৈরী হয় শান বাঁধানো ঘাট। কিন্তু রাজার ইচ্ছার পূর্ণতা আসেনি বিস্তৃত দীঘির করুণ দশার কারণে।

জনশ্রুতি আছে, পূর্ণ খননের পর‌ও দীঘিতে পানি উঠছিল না রহস্যজনক ভাবে। এ নিয়ে রাজ মানসে হতাশার কমতি ছিলনা। জনশ্রুতি মতে, ঘুমের ঘোরে একদিন রাজা স্বপ্নাদিষ্ট হলেন যে, তার প্রিয়তমা স্ত্রী কমল রাণী যদি স্নান উপলক্ষ্যে দীঘিতে নেমে পূজা দেন তাহলে আকাঙ্খিত পানিতে দীঘিটি টইটুম্বুর হয়ে উঠবে। রাজা তার ঐ স্বপ্ন বৃত্তান্ত প্রিয়তমা স্ত্রীকে অবহিত করলে কমলারাণী স্বামীর বাসনা পূরণে পূঁজো দিতে আগ্রহী হয়ে উঠলেন। রাজার আদেশে পূজার ব্যবস্থা হলো। শান বাঁধানো ঘাট দিয়ে রাণী দীঘিতে নেমে মন্ত্রপাঠ শেষে দীঘির বিরাণ জমিতে সষ্টাংগে প্রণাম জানানোর পর পরই মাটি ভেদ করে স্ফটিক জলের উদগীরণ শুরু হয়। দীঘিতে কোমর সমান পানি হলে রাণী সেই জলে স্নান করেন। অতঃপর মধ্য দীঘি থেকে জলের ঘাটে আসার আগেই অথৈ জলে কমলারাণী ডুবে যান। ঐ বিয়োগান্তক ঘটনায় এলাকায় শোকের পাশাপাশি বহুবিধ কল্পকাহিনী ডানা মেলে।
অন্য দিকে রাজা সুবিদ নারায়ণ স্ত্রীশোকে নির্বাক হয়ে যান। ঐ দিন রাতেই কমলারাণী স্বপ্ন যোগে রাজসম্মুখে হাজির হয়ে বলেন, তোমার ঘরে ফিরা আমার জন্য অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে। আমার দুগ্ধপোষ্য সন্তানকে প্রতিদিন সন্ধ্যা বেলায় দীঘির পশ্চিম পাশে রেখে দিও। আঁধার নামলেই আমি এসে তাকে দুধ পান করিয়ে চলে যাবো। খবরদার-আমাকে র্স্পশ করার চেষ্টা করবে না। স্পর্শ না করলে আমি হয়তো এক সময় তোমার কাছে ফিরে আসবো। যদি স্পর্শ করো তা’হলে চির দিনের জন্য আমার আশা ছেড়ে দিও।
রাণীর কথা অনুযায়ী দিন কয়েক রাতের আধাঁরে শিশুপুত্রকে দীঘির কিনারে উঠে এসে রাণী দুধ পান করান। একদিন স্ত্রী বিরহে মত্ত রাজা ঘাপটি মেরে আড়ালে বসে শিশুকে দুগ্ধদানরত অবস্থায় রাণীকে ঝাপটে ধরলেন। রাণী তখন দীঘিতে ঝাঁপ দিয়ে ডুব দেন। রাজার হাতে শুধু রয়েগেলো রাণীর এক গুচ্ছ কেশ। আর কোন দিন রাণী শিশু পুত্রকে দুগ্ধ দানের জন্য ডাঙ্গায় উঠেননি। এই মিতটি ডালপালা মেলে লোকালয়ে এখনও বেঁচে আছে আপন মহিমা নিয়ে।
রাজা নেই তার রাজ্যও এখন নেই। কালের করালগ্রাসে বিলীন হয়ে গেছে রাজ ভিটা। কিন্তু এখনও সেই দীঘিটি কমলারাণীর বিস্মৃত স্মৃতিকে বুকে ধারণকরে অতীত কালের কাহিনীর সাক্ষী হয়ে ঋষির মৌনতা নিয়ে স্থিতমান। দীঘির জলে আগে যেমন ঢেউ ছিল এখনও তেমনি ঢেউ আছ। তবে বদলে গেছে অনেক কিছু। বিশাল এ দীঘিটি রক্ষনাবেক্ষণে কিংবা চৌকস করার কোন উদ্যোগ নেই। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে রাজার দীঘি চলে গেছে ব্যক্তি মালিকানায়, মানুষের মাঝে এমন গুঞ্জন আছে এলাকায়।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT