লন্ডন: বুধবার, ১৫ই চৈত্র ১৪২৩।। এবার কুমিল্লায় সন্দেহভাজন একটি জঙ্গি আস্তানা ঘিরে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
পুলিশ জানিয়েছে, কুমিল্লার বাড়িটিতে একজন জঙ্গি পাঁচ থেকে ছয়টি শক্তিশালী বোমা ও বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ে অবস্থান করছেন। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির মধ্যেই এই জঙ্গি আস্তানার খবর পাওয়া গেল।
বুধবার কুমিল্লা নগরের ২৪ নাম্বার ওয়ার্ডের দক্ষিণ বাগমারা সংলগ্ন গন্ধমতি বড় কবরস্থানের পশ্চিম পাশের একটি ভবনে সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানার খবর পায় পুলিশ। তিনতলা বাড়িটির নিচতলায় সন্দেহভাজন জঙ্গিদের অবস্থান আছে- এমন তথ্যের ভিত্তিতে বিকাল পাঁচটা থেকে বাড়িটি ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দেলোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তি ওই বাড়িটির মালিক।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ আবিদ হোসেন বলেন, ‘গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট এক জঙ্গিকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কুমিল্লা নগরের দক্ষিণ বাগমারা এলাকার দেলোয়ার হোসেনের বাড়িটি ঘেরাও করে রাখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ওই বাড়িতে একজন জঙ্গি আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সরেজমিন ঘটনাস্থলে দেখা গেছে, মূল রাস্তা থেকে ২০ গজ পশ্চিমে নির্মাণাধীন তিনতলা একটি ভবন। ভবনটির নিচতলার এক পাশে বিজিবির এক সদস্যের পরিবার ভাড়া থাকেন। দ্বিতীয় তলায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মেস করে থাকেন। তৃতীয়তলা নির্মাণাধীন। খবর পেয়ে রাব-১১-এর অধিনায়ক কামরুল, কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ আবিদ হোসেন, রেব-১১ কুমিল্লা কোম্পানির উপপরিচালক মেজর মোস্তফা কায়জারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য সেখানে উপস্থিত হন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘জঙ্গিদের এ চক্রের মধ্যে অন্তত ৩৫ জন রয়েছে। এর মধ্যে গত ৮ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টায় কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার কুটুম্বপুর এলাকা থেকে আজওয়াজ ইমতিয়াজ অমি ওরফে জসিম এবং হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সীতাকুণ্ডে অপারেশনে চারজন জঙ্গি মারা যায়। সিলেটের আতিয়া মহলে চারজন, মৌলভীবাজারে একটি বাসায় ১৩ জন এবং মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম থেকে একজন গ্রেপ্তার হন। কুমিল্লার দক্ষিণ বাগমারা এলাকার এই ভবনে একজন রয়েছেন।আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাড়িটি ঘেরাও করে রেখেছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ আবিদ হোসেন আরও বলেন, ‘বৃহস্পতিবার কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন। তাই এখনই কোনো অভিযান চালানো হবে না। শুক্রবার থেকে অভিযান চালানো হবে। বাড়িটি এখন ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। আশপাশের লোকজনকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।’ এদিকে নির্বাচনের আগের দিন কুমিল্লা শহরে একটি জঙ্গি আস্তানা ঘিরে পুলিশের অবস্থানে উদ্বিগ্ন না হতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা।
ভোটের পরিবেশ নির্বিঘ্ন রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেছেন, প্রয়োজনে ভোট শেষে ওই জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালাবে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা তাকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘পুলিশ সংশ্লিষ্ট বাড়ি ঘিরে রেখেছে। সেক্ষেত্রে ভোটের কোনো অসুবিধা হবে না। ভোটারদের নির্বিঘ্ন পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে। কোনোভাবেই আতঙ্কিত হবেন না।'(বিভিন্ন সংবাদপত্র থেকে সংগৃহীত। ছবি: ট্রিবিউন থেকে)