নিউইয়র্ক থেকে পাঠিয়েছেন মিনহাজ শাম্মু।।
পচানব্বই বছর বয়স্ক নাৎসি ক্যাম্প গার্ড পালিজ আমাদের পড়শি হিসেবে দীর্ঘদিন যাবত পরিচয় লুকিয়ে জ্যাকসন হাইটস-এ আমাদের আশেপাশেই আত্মগোপন করেছিল। সে আমেরিকার নাগরিকও বটে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি! গত একুশ অগাস্ট অবশেষে তাকে তার জন্মস্থান জার্মানিতে পাঠানো হয় তাঁর শেষ পরিণতির মুখোমুখী হতে। প্রেসিডেন্ট ট্র্যাম্পের চাপে জার্মান সরকার আদালতের রায়ের এক বছর পরে তাকে ফেরত নিতে রাজি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুদ্ধাপরাধীকে তার জন্মভূমিতে পাঠানোর এ ঘটনা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বাংলাদেশ যুদ্ধাপরাধী ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী আশরাফুজ্জামান খান যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব নিয়ে বর্তমানে নিউ ইয়র্কে বহাল তবিয়তে অবস্থান করছে যাদের দেশে নেওয়া ও আদালতের দেওয়া রায় অনুযায়ী প্রাপ্য শাস্তি পাওয়া উচিৎ।
দুঃখজনকভাবে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ নথিভুক্ত হওয়ার আগে, পরে, বিচার চলাকালে এবং রায় ঘোষণার পরেও অনেক আসামি বাংলাদেশের বাইরে অবস্থান করছেন দাপটের সাথে। অথচ এদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত টাস্ক ফোর্সের এ নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই। প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতার চেতনার পক্ষাবলম্বনকারী সংগঠন ও সাধারণ প্রবাসী বাংলাদেশিরা এ নিয়ে কিছুদিন দাবি তুললেও বাংলাদেশ সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সক্রিয় না হওয়ায় বিষয়টি দীর্ঘদিন যাবত ধামাচাপা পড়ে আছে।
নাৎসি যুদ্ধাপরাধীকে জার্মানি ফেরৎ পাঠানোর পর যুক্তরাষ্ট্রে আশরাফুজ্জামান ও যুক্তরাজ্যে মইনুদ্দীনের মতো দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক যুদ্ধাপরাধীদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের উর্ধতন মহল ও আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংশ্লিষ্ট টাস্কফোর্সের টনক নড়বে বলে আশা করছি। একই সাথে দেশের ও প্রবাসের স্বাধীনতার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সকল বাংলাদেশী সংগঠন ও ব্যক্তিগণ এ ব্যাপারে সক্রিয় হবেন বলে প্রত্যাশা সকলের।