জাতিসংঘ ঘোষিত “ইন্টারন্যাশনাল ডে অফ দ্য ভিকটিমস অফ এনফোর্সড ডিজএপিয়ারেন্স” বা অন্তর্ধান হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে যুক্তরাজ্যে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষ্যে “সাউথ এশিয়ান পলিসি ইনিশিয়েটিভ”এর আহ্বানে যুক্তরাজ্যের ১৭টি মানবাধিকার সংগঠন সমাবেশে অংশ গ্রহণ করে।

সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, নিরুদ্দিষ্ট করে ফেলা বা অন্তর্ধানে রাখা একটি মানবতাবিরোধী অপরাধ। দেশে দেশে ফ্যাসিবাদ এভাবেই নিরুদ্দিষ্ট করে খুনের মাধ্যমে ভিন্নমতকে দমন করে রাখতে চায়। ছেলেহারা মায়ের ডাক-ফ্যাসিবাদ নিপাত যাক ধ্বনিতে মুখরিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ সহ বিশ্বের দেশে দেশে মানবতা বিরোধী অপরাধের সাথে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে ঐক্যবদ্ধ লড়াই চালিয়ে যেতে হবে এবং  ফ্যাসিবাদ বিরোধী এ লড়াইয়ে সফল হতে হবে। ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করেই মানবতা বিরোধী অপরাধের সাথে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

বক্তারা আরও বলেন, দেশে দেশে ফ্যাসিবাদী সরকার রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোকে ব্যবহার করে ভিন্নমতের লোকদের গুম করে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করছে। রোহিঙ্গাদের উপর নিপীড়ন ও গুমের ঘটনা গুলোর বর্ণনা দিয়ে বলেন, এমন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে।
ব্যারিস্টার ইকবাল হোসেন বলেন, শুধু বাংলাদেশেই নয়, গুমের মত মানবতা বিরোধী অপরাধ অন্যান্য ফ্যাসিবাদী সরকারের দেশ গুলোতেও ঘটছে। আন্তর্জাতিক এই দিবসটিতে ফ্যাসিবাদী শাসকদের বার্তা দেওয়া হচ্ছে গুমের মত মানবতা বিরোধী কাজগুলো এক সময় বিচারের আওতায় আসবে। এই অপরাধের সাথে যারা জড়িত তাদের একদিন আইনের মোকাবেলা করতেই হবে এবং শাস্তি ভোগ করতে হবে।

১৭টি মানবাধিকার সংগঠনের মধ্যে সিটিজেন মুভমেন্ট ইউকে, সোসাইটি ফর ডেমোক্রেটিক রাইটস, সলিডারিটি ফর হিউম্যান রাইটস ইউকে, পিস ফর বাংলাদেশ, নিরাপদ বাংলাদেশ চাই (এনবিসি), ফাইট ফর রাইটস ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যানিটি ক্লাব ইউরো বিডি, জাস্টিস ফর বাংলাদেশ, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম ইউকে, রাইট কনসার্ন, রাইটস মুভমেন্ট ইউকে, স্ট্যান্ড ফর বাংলাদেশ, সাপোর্ট রাইটস ইউকে, ইউনিভার্সাল ভয়েস ফর জাস্টিস, ভয়েস ফর জাস্টিস ও হোয়াইট পিজিয়ন ইন্টারন্যাশনাল।

‘আমার দেশ ইউকে’র নির্বাহী সম্পাদক অলিউল্লাহ নোমানের সভাপতিত্বে ও সাপ্তাহিক সুরমার সম্পাদক শামসুল আলম লিটনের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গুমের শিকার হওয়া ব্যবসায়ী মশিউর রহমান মামুন, ক্যাপ্টেন ওয়াহিদ উন নবী ও মেজর অবঃ এ কে এম জাকির হোসেন। এছাড়া বক্তব্য রাখেন গুমের শিকার ব্রিগেডিয়ার আবদুল্লাহ আমান আযমীর বড় ভাই মামুন আল আযমী, ব্রিগেডিয়ার আযমীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা চৌধুরী আমিন ও আক্রান্ত পরিবারের সদস্য তরিকুল ইসলাম।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-জাস্টিস ফর রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশনের যুক্তরাজ্য সভাপতি ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক সেন্টারের সভাপতি প্রফেসর ড. শেখ রামজি, সলিডারিটি ফর হিউম্যান রাইটস ইউকে’র সভাপতি প্রফেসর আবদুল কাদির সালেহ, সিটিজেন মুভমেন্ট ইউকে’র আহ্বায়ক এম এ মালিক, বিএনপি’র আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান, মুফতি শাহ সদর উদ্দিন, ব্যারিস্টার এম এ সালাম, সোসাইটি ফর ডেমোক্রেটিক রাইটস-এর সভাপতি ব্যারিস্টার ইকবাল হোসাইন, সাবেক যুবদল নেতা আশিকুর রহমান আশিক, মানবাধিকার সংগঠন নিরাপদ বাংলাদেশ চাই-এর সভাপতি মুসলিম খানম, ফাইট ফর রাইটের সভাপতি রায়হান উদ্দিন, কর্ণেল শহিদ উদ্দিন খান, সাবেক ছাত্রশিবির নেতা আবদুল্লাহ আল মুমিন, পিচ ফর বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ডলার বিশ্বাস, সেক্রেটারি মো: মাহিন খান, সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম মুকুল, মানবাধিকার কর্মী আসাদুল হক, মোর্শেদ আহমদ খান, ফাইট ফর রাইট’স ইন্টারন্যাশনাল এর সহকারী সেক্রেটারী ও সাবেক শিবির নেতা মোঃ আমিনুল ইসলাম সফর, আলী হোসেন, এডভোকেট আমির হোসেন সরকার, আরিফ আহমদ, মির্জা এনামুল হক ও মঞ্জুর আহসান পল্টু প্রমুখ।