কমলগঞ্জ সংবাদ।। দেশব্যাপী শৈত প্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কমলগঞ্জের জনজীবন। প্রচন্ড ঠান্ডায় দু’দিনে শমশেরনগর ইউনিয়নের কানিহাটি, ডবলছড়া চা বাগানের নারীসহ বয়োবৃদ্ধ চার জন ও আলীনগর ইউনিয়নের কামুদপুর আশ্রায়ন প্রকল্পের এক বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। কুয়াশা, প্রচন্ড ঠান্ডা ও মৃদু বাতাসে গরম কাপড়ের অভাবে চা শ্রমিক, শব্দকর পরিবার ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। খড়খুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারন করছেন চা বাগান ও বস্তির নিম্ন আয়ের লোকজন। ঠান্ডায় সর্দি, জ্বর, শ্বাসকষ্ঠ ও নিউমোনিয়া রোগের উপদ্রুবও বাড়ছে। গরম কাপড়ের অভাবে কমলগঞ্জের গরীব মানুষজন চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
শনিবার সরেজমিন চা বাগানসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঘন কুয়াশা, মৃদু বাতাসে নিম্নবিত্ত পরিবার সদস্যরা হিমশিম খাচ্ছেন। হাড়কাঁপানো শীতে হতদরিদ্ররা যেখানে সেখানে খড়খুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন। প্রচন্ড ঠান্ডায় আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার দুপুরে শমশেরনগর ইউনিয়নের ফাঁড়ি ডবলছড়া চা বাগানের সুবল চাষার ছেলে রাখাল চাষা(৪৬), আপ্পালু কূর্মীর স্ত্রী দাঙ্গামা কূর্মী(৬০) মারা যান। শনিবার সকাল ১০ টায় ডবলছড়া বাগানের রাজেন্দ্র তুলিয়ার স্ত্রী বুলেশ্বরী তুলিয়া(৬০) এবং সকাল ১১ টায় কানিহাটি চা বাগানের মিরা বীন এর ছেলে হরিয়া বীন(৬০) মারা যান। শনিবার ভোরে আলীনগর ইউনিয়নের কামুদপুর আশ্রায়ন প্রকল্পের বাসিন্দা আঞ্জব আলী(৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে শনিবার দিনভর কূয়াশা ও প্রচন্ড ঠান্ডা থাকায় কোথাও সূর্যের আলো দেখা যায়নি।
শমসেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য কানিহাটি চা বাগানের শ্রমিক নেতা সীতারাম বীন চার জনের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রচন্ড ঠান্ডায় বয়োবৃদ্ধ এসব লোকের মৃত্যু হয়েছে। চা শ্রমিকদের গরম কাপড়ের অভাব রয়েছে বলে তিনি জানান।
শব্দকর সমাজ উন্নয়ন পরিষদের সম্পাদক উপেন্দ্র শব্দকর বলেন, উপজেলার মুন্সীবাজার, আলীনগর, আদমপুর ও পতনঊষার এলাকায় বেশ কিছু শব্দকর পরিবার রয়েছেন। আয় রোজগার কম ও পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায় হিসাবে গরম কাপড়ের তীব্র সঙ্কট রয়েছে। শীতে তাদের চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে।
শমশেরনগর, ভানুগাছ ও মুন্সীবাজারের কয়েকজন প্রাইভেট চিকিৎসক জানান, সর্দি, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি পাওয়া যাচ্ছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স্রের চিকিৎসক বিশ্বজিৎ সিংহ বলেন, ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ২ শিশু ভর্তি রয়েছে। তবে ঠান্ডায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশেকুল হক বলেন, ঠান্ডাজনিত রোগে দুইদিনে কমলগঞ্জে ৫ জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ চলমান রয়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষজনদের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম জোরদার করা হবে।