ভাবছিলাম, দুনিয়াটা আজগুবি না মানুষ বিচিত্র! একসময় মনে হল দুনিয়া আজব তাই মানুষও আজব। পরক্ষনেই আবার ভাবনায় এলো- না, পৃথিবীটা আজব নয়। মানুষ বিচিত্র তাই দুনিয়াও বিচিত্র আমাদের কাছে। কোনটি সঠিক? মনে মনে এমনি এক হেতুহীন চিন্তা মাথায় নিয়ে ‘ইন্টারনেট’এ ওই দিবসটি পালনের খবর পড়তে গেলাম।
গত ২রা জানুয়ারী লন্ডনে পালিত হয়ে গেল “No Pants Subway Ride” দিবস। বাংলায় বলতে গেলে দাঁড়াবে “পাজামা ছাড়া ফাঁড়িপথে চলা”র দিন। সেদিন কিছু একটা লিখতে বসে ইন্টারনেটে প্রবেশ করতেই পর্দায় ভেসে আসলো এই খবরটি। কখন কিভাবে কতজন মানুষ এমন দিবসটি পালন করলেন দেখার সুযোগ আমার হয়নি। খবরটি পড়ে মনটি খুবই খারাপ হয়ে গেল। আজগুবি কোন কিছু দেখতে আমার খুবই ভাল লাগে। তাই না দেখতে পারার আফসুসে বার বার মনে পড়ছিল দিবসটির কথা।
জানলাম, লন্ডনের শতাধিক মানুষ হাড় কাঁপানো কনকনে শীতের মাঝেও এই দিবস পালনের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আরো জানলাম দিবসটি ২০০২ সালে মস্ত আড়ম্বরের সাথে পরিহাসপূর্ণ জাঁকালো পোষাক পরে রঙ্গকৌতুককরে পালিত হয়েছিল নিউইয়র্কে সর্বপ্রথম। এর পর থেকে এ পর্যন্ত টোকিও, জেরুজালেম ও মস্কোসহ দুনিয়ার ৬০টি বড় বড় শহরে পালিত হয়ে আসছে।
জানাগেল, গত বছরও ৩শত লন্ডনবাসী, পথচারীদের দৃষ্টি বা মনোযোগ আকর্ষণ করার লক্ষ্যে এমন ব্যঙ্গরসপূর্ণ ভঙ্গিতে দিবসটি পালনে এগিয়ে এসেছিলেন। সাধারণতঃ প্রতিবছর জানুয়ারী মাসের প্রথম দিকে অভিনব এ দিবসটি পালিত হয় এবং পালনকারীরা পথচারী দর্শকদেরও অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে থাকেন।
লন্ডন শহরে এটি ছিল ৯বম দিবস পালন। দিবস আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠান ‘The Stiff Upper Lip Society’ সকলকে আহ্বান জানান দিবস পালনে অংশ নেয়ার জন্য। তাদের ভাষায়, বেলা ৩টার সময় বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে নিকটস্ত পাতাল রেল ষ্টেশনে যাবেন। ওখানে প্রত্যেক দলের দলপতি বলবেন- আপনাদের পাজামা যা আছে খুলেনিয়ে কাঁধের থলিতে রাখুন এবং একটি সংবাদপত্র বা ম্যাগাজিন কিছু নিয়ে পড়তে বসে পড়ুন। এভাবেই দিবসটি পালন করা হয়।
কিন্তু কেনো এর পালন আর কিইবা উদ্দেশ্য তা বহু খুঁজেও কোন আখবারে পাইনি। শুধু এতোটুকুই বুঝেছি যে শুধুমাত্র খানিক রঙ্গরসের জন্য এমনভাবে দিবসটি পালন করা হয়। উন্নত বিশ্বের উন্নত মানুষের মন যা চায় তাই সংস্কৃতির নব নব আয়োজন না-কি মানুষ তার আদিমতার দিকে যেতে চায়, জানতে পারিনি। হয়তো সময় একদিন বলে দেবে কি ছিল এসব পালনের পেছনে।