যে কোনও সময়ে ভারত ও আফগানিস্তানে বড়সড় হামলা চালাতে পারে পাকিস্তানের জঙ্গিগোষ্ঠীগুলি। সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসের সেনেট সিলেক্ট কমিটির কাছে এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স-এর ডিরেক্টর ড্যানিয়েল কোটস।
পাকিস্তান জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে ব্যর্থ হওয়ায় জঙ্গিগোষ্ঠীগুলি আরও শক্তি বাড়িয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বলে দাবি করেন ড্যানিয়েল। ফলে ভারত ও আফগানিস্তানে যে কোনও সময় যে কোনও রকমের বড় হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কোটস। এই দুই দেশের সঙ্গে আমেরিকার যা সম্পর্ক, তা নষ্ট করার চক্রান্ত চালানো হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। আফগানিস্তানে যে ভাবে মার্কিন সেনা ও ন্যাটো বাহিনী ২০০১ থেকে লড়াই চালিয়ে তালিবান ও অন্য জঙ্গিগোষ্ঠীগুলিকে একেবারে কোণঠাসা করে ফেলেছিল, নিজেদের গড় উদ্ধারে সেখানে ফের সক্রিয় হতে শুরু করেছে তালিবান। বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলগুলিতে। বিষয়টি নিয়ে কপালের ভাঁজ ক্রমেই চওড়া হচ্ছে আমেরিকার।
একের পর এক হামলা চালানোর জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বহু দিন ধরেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে ভারত। এবং তা তথ্যপ্রমাণ-সহ। কিন্তু পাকিস্তান বরাবরই ভারতের অভিযোগকে খারিজ করেছে। পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা ভারতে যে হামলা চালাচ্ছে, সেই প্রমাণ রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছেও তুলে ধরেছে ভারত। কোটসের দাবি, সন্ত্রাস দমনে ভারত যে ভাবে আমেরিকাকে পাশে পেয়েছে সেটা পাকিস্তানের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের প্রভাবও পাকিস্তানকে চাপে রেখেছে বলে দাবি করেন তিনি। সন্ত্রাস দমন ও জঙ্গিদের রুখতে পাকিস্তানকে বেশ কয়েক বার সতর্কও করেছে আমেরিকা। কিন্তু তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। তাই কোটস সেনেট কমিটির কাছে জানান, বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার ভয়ে পাকিস্তান এ বার চিনকে পাশে পেতে চাইছে। আর বেজিঙও পাকিস্তানের এই আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে ভারত মহাসাগরে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে চলেছে।
তালিবানকে আফগানিস্তান থেকে উচ্ছেদ করার পর বহু সেনা তুলে নিয়েছিল আমেরিকা। কিন্তু সেখানে ফের তালিবান সক্রিয় হওয়ায় সেনা মোতায়েন করতে শুরু করেছে আমেরিকা। কোটস-এর আশঙ্কা আফগানিস্তানে মার্কিন সেনার বহর বাড়ানোর ফলে সে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি, নিরাপত্তা ব্যবস্থারও অবনতি হবে। এবং সেটা হবে ২০১৮-র মধ্যেই! শুধু তাই নয়, আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও খারাপ হবে। যত দিন না তালিবানদের সঙ্গে শান্তি চুক্তি হচ্ছে, তত দিন আফগানিস্তানকে বর্হিশক্তির সহযোগিতা নিয়েই চলতে হবে বলে দাবি করেন কোটস। খবর আনন্দবাজারের।