মুক্তকথা: সোমবার ২২শে আগষ্ট ২০১৬।। প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠ মৌলভীবাজার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০শতক জায়গা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর দখল করতে যাচ্ছে বলে বাজারে রটনা হয়েছে। এহেন সংবাদটি আমার পরিচিত এক ছোট ভাই “ওয়াটস এপ” এর মাধ্যমে আমার কাছে পাঠিয়েছে কোন সংবাদপত্রে ছাপার ব্যবস্থা করার জন্য। কোন সংবাদপত্রে দেই, কেই বা ছাপবে ছোট্ট এ খবরটি। পাকিদের লেলিয়ে দেয়া জঙ্গি-সন্ত্রাসীরা গণতান্ত্রিক কর্মকান্ডের আস্কারা পেয়ে যেভাবে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির লক্ষ্যে পামরি করে যাচ্ছে তার জবাবে সংবাদপত্রসহ সারা দেশ হিমশিম খাচ্ছে। অবশেষে সংবাদটি আমাদের অতিব ক্ষুদ্র এই অনলাইনে দেয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই আমার হাতে। কোন কাজ হবে কি-না তাও জানিনা। তবে হাজার কয়েক মানুষ পড়বে এতটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি।
ওয়াটস এপ-এ পাঠানো সংবাদটি পড়ে বুঝতে পারলাম, সরকারী বিদ্যালয় মাঠের পুরাতন ছাত্রাবাস হতে প্রধান শিক্ষকের বাসভবন পর্যন্ত ২০শতক জায়গা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর দখল করতে যাচ্ছে। যদিও “শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর” বিদ্যা-শিক্ষা পথেরই একটি দপ্তর, তবুও একটি বিদ্যালয়ের জমি তারা দখল করতে যাবেন কেনো? তাদের যদি জমির প্রয়োজন হয়, সরকার খাস জমি থেকে তাদের দিতে পারেন অথবা হুকুম দখল করে জমি দিতে পারেন। একটি বিদ্যালয়ের জমি যা কি-না বহু দাতাদের দানকৃত ভুমি ছাড়াও কিছু কিছু অর্থ দিয়ে কেনা সেই দানকৃত জমি যিনি দান করেছিলেন তিনি বিদ্যালয়ের জন্য দান করেছিলেন, কোন দপ্তর করার জন্য দান করেননি। আর যা খরিদ করা হয়েছিল তাও হয়েছিল ওই বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য। তা’হলে কোন আইন বা যুক্তিবলে একটি সুপ্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ের জমি একটি দপ্তরকে দিয়ে দেবার নির্দেশ মন্ত্রনালয় দেবে? আমার বিদ্যেয় কুলোয় না।
এমনিতেই মৌলভীবাজার শহরে সরকারী বিদ্যালয়ের এই মাঠ ছাড়া মানুষের চিত্ত বিনোদনের অন্য কোন খোলা যায়গা নেই। নেই কোন মুক্তাঙ্গন। বিগত পৌরসভার আমলে শহরের সুন্দর্য্য, পরিবেশবান্ধব অতি প্রাচীণ বৃক্ষরাজী কর্তন করে বিক্রি করা হয়। ফলে শহর হয়ে উঠেছে ছায়াহীন। এ অবস্থায় মাঠের বৃক্ষময় ওই ২০ শতাংশ ভুমি অন্য দপ্তরকে দেয়া একধরনের হটকারীতা বলে মানুষ মনে করে।
প্রাপ্ত ওই সংবাদে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে কোনো রূপ আলাপ আলোচনা ছাড়াই শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের পরামর্শে গোপনে মন্ত্রণালয় হতে জায়গা দখলের আদেশ নিয়ে আসা হয়েছে। আর গত ১৬ আগষ্ট প্রধান শিক্ষকের নিকট জায়গা দিয়ে দেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি আসে।
এ ঘটনায়, শহরের মানুষ ও দেশে-বিদেশে অবস্থানরত ওই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রগন তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। ওয়াটস এপ-এ একজনতো বলেছেন- “আমরা বিদ্যালয় সম্পদের একসূতা জায়গা কাউকে দিতে চাই না। আমাদেরকেই আমাদের জায়গা রক্ষা করতে হবে। আমরা সরকারি স্কুলের ছাত্রগণ জীবনের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত চেষ্টা করে যাব স্কুলের সম্পদকে বাঁচাতে।” তিনি আরও লিখেছেন- “কিছুদিনের মধ্যে আমরা বিশাল মানববন্ধন আয়োজন করব। যা চৌমুহনা থেকে ডিসি অফিস পর্যন্ত বিশাল হবে।”
বিদ্যালয় বিষয়ে অভিজ্ঞগন বলেন যে ২শিফটের স্কুল, সরকারের নির্দেশেই আবাসন সমস্যা দূর করার জন্য ছাত্রাবাস বা শিক্ষকদের কোয়ার্টার নির্মাণের কথা ছিল অনেক আগেই। আজও তা হয়নি। এখন দীর্ঘদিনের এই প্রয়োজনীয়তাকে উপেক্ষা করে নতুন করে অন্য একটি দপ্তরকে জমি দিয়ে দেবার নির্দেশ জনমনে একটু রহস্যের সৃষ্টি করেছে । স্থানীয় মানুষের প্রশ্ন, কোন হিতে মন্ত্রণালয় এই নির্দেশ দিতে পারে? ঠিকই যদি মন্ত্রণালয় নির্দেশ দিয়ে থাকেন তা’হলে অবিলম্বে এ নির্দেশ ফিরিয়ে নেবার জন্য স্থানীয় মানুষ ও বিদ্যালয়ের প্রবাসী ছাত্রগন দাবী করেছেন।