1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
রাষ্ট্র আর পুলিশের কাজ তা’হলে কি? - মুক্তকথা
শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৩ অপরাহ্ন

রাষ্ট্র আর পুলিশের কাজ তা’হলে কি?

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারী, ২০১৭
  • ৬৩৮ পড়া হয়েছে

হারুনূর রশীদ।।

মহিলারা বেঙ্গালুরুতে অবাধ যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন নতুন বর্ষবরণের রাতে। ফলে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করা হয়েছিল। ওই প্রসঙ্গে গেল সোমবারেই ওই রাজ্যের রাষ্ট্রমন্ত্রী তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছিলেন, “বড়দিন ও বর্ষবরণের রাতে এমন তো হয়েই থাকে।” মন্ত্রী আরও বলেছিলেন যে পশ্চিমী ভাবধারা অনুকরণ করতে গিয়েই মেয়েদের এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। পরের দিন সমাজবাদী পার্টির মুম্বই শাখার প্রধান বলেছিলেন, “মেয়েরা ছোট পোশাক পরে বেশি রাতে বন্ধুদের সঙ্গে বেরোলে এমন তো হবেই।” আজমি, সম্ভবত মন্ত্রীর কথায় একটু উৎসাহিত হয়ে বলেন, শুধু চিন্তাভাবনা নয়, পোশাকেআশাকে পশ্চিমী ভাবধারার ছোঁয়া থাকলে এমন ঘটনা ঘটবেই। তিনি আরও যোগ করেন, ’‘নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা পুলিশের কর্তব্য নিশ্চয়ই। তবে মহিলা ও তাঁর অভিভাবকদেরও আগাম সতর্কতা নেওয়া উচিত। মনে রাখা উচিত, নিরাপত্তা শুরু হয় বাড়ি থেকেই।”

শিবাজিনগরের বিধায়ক আরো একটু ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন, “ছোট পোশাক পরে বেশি রাতে পার্টি করা আমাদের সংস্কৃতি নয়। সম্ভ্রান্ত পরিবারের মহিলারা, ভদ্র পোশাকে পরিবারের সঙ্গেই বেরোন। যদি আমার মেয়ে বা বোন পুরুষদের ছাড়া রাতে বেরোতেন, সেটা মোটেই ঠিক কাজ হতো না।”

দায়সারা গোছের হলেও ভিন্ন বক্তব্য রেখেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। বলেছিলেন যে অবশ্য মহিলাদের মান রক্ষা করার দায়িত্ব রাজ্য সরকারেরই। অবশ্য ভারতের ‘মহিলা কমিশন’ পরমেশ্বরের পদত্যাগ দাবি করেছিলেন। আর আজমির মন্তব্যে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মহিলা সমাজকর্মীরা। দিল্লীর মহিলা কমিশনের একজন টুইট করে বলেছিলেন, ’‘পুরুষ রাজনীতিকরা নারীবিদ্বেষী মন্তব্য করলে তাঁদের শায়েস্তা করার জন্য কোনও আইন নেই!’’ জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন শহরের পুলিশ কমিশনার, ডিজিপি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জবাবও তলব করেছিলেন। এমনভাবেই সেদিন লিখেছিল আনন্দবাজার পত্রিকা। এরপরে কি হয়েছে আজ অবদি আর কিছু আমরা জানতে পারিনি।

ভারতের খবর। ভিন্ন রাষ্ট্র, সুতরাং আমাদের নাকগলানো মতলববাজী। কিন্তু এর পরেও দু’টো কথা না বলে পারা যায় না। যদিও সুক্ষ বিচারে বৈদেশের খবর তার পরও আমাদের একেবারে পাশের বাড়ী। ও বাড়ীতে কি রান্নাহয় তার গন্ধ আমাদের উতলা করে। অন্তত বছরে একবার হলেও আমাদের ইলিশ ওদের পাতে না পরলে ওদের মাথা চক্কর দেয়। আর এতো নারী আব্রুর বিষয়। এ নিয়ে, মুসলমান আমরা, অপ্রয়োজনীয় হলেও যদি কিছু না ই বলি তা’হলে হয় কিভাবে। পাশের বাড়ীর নড়াচড়ায় আমরাও যে আন্দোলিত হই।

নারীকে নিজের কল্জের টুকরো বানিয়ে একমাত্র নিজের সম্পত্তির মত বগলদাবা করে চলতে আমরা, ইংরেজ আমলের খ্যাত এই উপমহাদেশের মানুষজন খুব আনন্দলাভ করি। আমাদের ধারণায় এ সংস্কৃতি এক স্বর্গীয় বা বেহেস্তি ভাবধারা। নারীকে ভোগের সামগ্রী ভাবতে আমাদের হিন্দুত্ব বা মুসলমানিত্বে কোন আচড় লাগে না। অর্থ কেলেঙ্কারী আর নারী কেলেঙ্কারীতে আমরা সমান পারঙ্গম। আমাদের নারীরা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির মত দিল্লী আর মুম্বাইয়ের বেশ্যালয়ে বিক্রি হয়। তখন আমাদের ধর্মীয় নেতারা কিছুই বলার প্রয়োজনও অনুভব করেন না। অথচ জমি-বাড়ী দখলের জন্য আমাদের ধর্মীয় নেতা থেকে আমজনতা সকলেই একসুরে গান গেয়ে আনন্দ পাই। একাজে শুধু নারী নিয়ে নোঙরামোই নয়, ধর্ষণ, হত্যাসহ পারিনা এমন কিছু আমাদের অজানা নেই।

আমাদের পুলিশ প্রসাশন তো খুবই বুদ্ধীমত্তার সাথে ওই নববর্ষের দিন সন্ধ্যার পর সবকিছু বন্ধ করে দিয়ে পার পেয়েছিলেন। বেঙ্গালুরু সে পথে হাটেনি। মনের আনন্দ আবেগ মিশিয়ে উৎসব পালনের সুযোগ দিয়েছিল ওরা। কিন্তু চেষ্টা করেও সামলাতে পারেনি। আমাদের মধ্যে তফাৎ শুধু এটুকুই। উপচেপরা আমাদের উপোসি নারীসঙ্গের লালসা পশুপ্রবৃত্তিকে জাগিয়ে দেয় আমাদের উভয় অংশেই। ওই কাজে টুপিধারী আর পৈতেধারী উভয়কেই সমানতালে পাওয়া যায়।

কিন্তু নেতা আর মন্ত্রীর ওই যে কথা, “…এমনতো হয়েই থাকে…”, আর “…সম্ভ্রান্ত পরিবারের মহিলারা…” ওই কথাগুলোতে খুবই আপত্তি আছে। এমনতো হয়েই থাকে পশ্চিমা জগতে! কিন্তু বন্ধু আপনি কি কখনও নিজের চোখে পশ্চিমা কোন অনুষ্ঠানায়োজন দেখেছেন? না-কি অন্ধের হাতী দরশনের মতো বলেছেন। পশ্চিমাদেশে যা হয় তাতো যৌন হেনস্থা নয়। পরস্পর পরস্পরের সুন্দর মন ও মতের আদানপ্রদানের মধ্য দিয়ে সহমতের মাধ্যমে একে ওপরের সাথে মিলিত হয়। ওখানে কোন মহিলা, পুলিশকে নালিশ করার সাথে সাথে পুলিশ জীবনের যেকোন মূল্যে জড়িত ওই দুরাত্মাকে ধরবেই ধরবে এবং বিচারের জন্য কাঠগড়ায় দাড় করাবে। ওদের মানুষ আর পুলিশ গড়ে উঠেছে ওভাবেই। আমাদের মত দুরাত্মা নয়। আপনাদের মত ঋষিরাইতো আমাদের এভাবে দুরাত্মা বানিয়ে তোলেছেন।

সমাজবাদী পার্টির নেতা যে প্রতিক্রিয়া শুনিয়েছেন তাতে, আমরা যারা পাশ্চাত্যের দেশ দেখার সুযোগ হয়েছে, আমরা বলবো ওই নেতা পশ্চিমা বিশ্ব সম্পর্কে কোন ধারণাই রাখেন না। পশ্চিমারা মুম্বাই আর দিল্লীর মত না। দিনে-দুপুরে বিদেশীনিকে ধর্ষণ করার জঘন্য মনোবৃত্তিই ওদের নেই। নিজের দেশের কন্যাকে তো নয়ই। কে আরেকজন বিধায়ক যে সংস্কৃতির কথা বলেছেন ওনাকে এধরনের ‘বকোয়াছ’ না করার উপদেশ দেবো।

এদের একটি প্রশ্ন করতে চাই, আপনাদের ওই কথাগুলোতে দুরাত্মারা যে আরো একটু সাহসী হলো তা কি আপনাদের মগজে কোনভাবেই জাগান দেয়নি? আর সম্ভ্রান্ত ঘরের মেয়েরা পরিবারের মানুষ ছাড়া ঘরের বাহির হয়না। তা’হলে ছোটলোকের মেয়েরা কি দেশের নাগরীক নয়? ওরা বের হলে ওদের উপর দূবৃত্তরা চড়াও হবে আর রাষ্ট্র চেয়ে চেয়ে দেখবে। কিছুই করতে পারবে না। তা’হলে পুলিশ আর রাষ্ট্রের কাজ কি?? দেশের ছোটলোক আর বড়লোক নাগরীকের নিরাপত্তা কে নিশ্চিত করবে?

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT