“জিয়াউর রহমান খুনী ছিল, খালেদা জিয়াও খুনী আর তারেক রহমানও খুনী। বিদেশে বসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছে। ফৌজদারী অপরাধের দায়ে তারেককে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।” এমন মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ায় যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রীকে এক সংবর্ধনা প্রদান করে। গতকাল শনিবার ২১শে এপ্রিল বিকেলে লন্ডনের ওয়েষ্টমিন্সটার সেন্ট্রাল হলে এই সংবর্ধনার ব্যবস্থা করা হয়। ওখানেই আওয়ামীলীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
সভায় উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান দেশে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করেছে, আর এখন লণ্ডনে বসেও একই ধরনের অপরাধ করছে, চিন্তা করে দেখুন কত বড় সন্ত্রাসী সে।’
তিনি আরো বলেন, “লণ্ডনের হাইকমিশনে ঢুকে জাতির জনকের ছবি ভাঙ্গচুর করার মত দুঃসাহস এরা কোত্থেকে পায়? তারেক রহমানকে ফেরৎ নেয়ার বিষয়ে ব্রিটিশ সরকারের সাথে আমরা কথা বলেছি।”
মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হবার পরও সে কিভাবে লন্ডনে থাকে এমন প্রশ্ন তুলে আওয়ামীলীগ সভানেত্রী বলেন, “আমরা তাকে অবশ্যই দেশে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করবো। প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা তাকে দেশে ফিরিয়ে নিতে সক্ষম হব ইনশাল্লাহ এবং সে তার কৃতকর্মের জন্য বিচারের সম্মুখীন হবে।”
হাইকমিশনে বিএনপি সন্ত্রাসীদের ভাংচুরের প্রসঙ্গে তিনি হাইকমিশনের ভূমিকারও সমালোচনা করেন।
বিএনপি বিষয়ে বলতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, তারা কিভাবে একজন পলাতক আসামীকে দলের চেয়ারম্যান মনোনীত করে। তারা আসলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চায় যাতে দেশ ধ্বংস হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা জাতির পিতার প্রতিকৃতি ধ্বংস করেছে তাদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। আমি প্রবাসী বাংলাদেশীদের বলবো আপনারা দেখেছেন কারা জাতির পিতার প্রতিকৃতিকে অবমাননা করেছে এবং তাদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করতে হবে।
এদিকে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমানকে লন্ডন থেকে দেশে ফেরাতে ব্রিটিশ সরকারের কাছে দরবার করছে বাংলাদেশ সরকার। এ তথ্য দিয়ে খবর প্রকাশ করেছে ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা। আনন্দবাজার লিখেছে, কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলন(চোগাম)-এ অংশ নিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডনে গিয়ে এ খবর জানানোর পরে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে খালেদার দল বিএনপি।
তারা আরো লিখেছে, জিয়া অনাথালয় তহবিল দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার আগে বিএনপির অস্থায়ী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়ে যান ছেলে তারেককে। তিনিই লন্ডন থেকে দল চালাচ্ছেন। কিন্তু একই মামলায় তারেককেও ১০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। খালেদা জিয়া সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিভিন্ন দুর্নীতির মামলায় তারেককে গ্রেফতার করে। জামিনে মুক্তি পেয়ে ২০০৮-এ তিনি সপরিবার লন্ডনে যান। বছর দুই আগে দেশ থেকে অর্থ পাচারের একটি মামলায় তারেকের দু’বছরের জেল হয়েছে। তার পরে জিয়া অনাথালয় তহবিল মামলাতেও কারাদণ্ড হয়েছে। তারেকের বিরুদ্ধে আরও প্রায় এক ডজন মামলা চলছে।
তারেক রহমানকে ফেরৎ নেয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরে বুধবার বিএনপি-র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি অভিযোগ করেন, সরকার তারেককে নিশানা করেছে। প্রধানমন্ত্রী প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছেন।