লন্ডন: বৃহস্পতিবার, ২০শে পৌষ ১৪২৩।। বৃটেনের শিক্ষা কর্তৃপক্ষ, জাল শিক্ষা সনদ বিক্রির জন্য এক অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত ৪০টি শিক্ষার ভূয়া সনদ প্রদানকারী ওয়েবসাইট বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছেন। বন্ধ করা এসব সাইটের মধ্যে বেশ কয়েকটি ছিল যারা বৃটেনের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ভাঙ্গিয়ে আসল সনদের মত হুবহু দেখতে এমন সনদ বিক্রি করছিল। বাকীরা “দূরে থেকে প্রশিক্ষন” প্রদানের দায়ীত্বে কাজ করছিল কিন্তু এরা বৃটেনের বৈধ সনদদাতা সংস্থা ছিলনা।
জাল সনদের এই বিষয়টি তদন্তের জন্য একটি সংস্থা গঠন করা হয়, “হাইয়ার এডুকেশন ডিগ্রী ডাটাচেক”(Hedd) নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি মোট ৯০টি ভূয়া প্রতিষ্ঠানের হিসেব দিয়েছিল। “কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়” এর জাল ‘স্নাতক সনদ’ মাত্র ৫০০পাউন্ডে চীন দেশে বিক্রির একটি ঘটনা বিবিসি’র “সাউথ ইস্ট ইনভেস্টিগেশন”এর হাতে প্রথম ধরা পড়লে এই তদন্তের সূচনা হয়।
‘উচ্চশিক্ষা সেবা’র পরিচালক ‘জেইন রোলি’ যিনি ‘Hedd’ও দেখাশুনা করেন বলেন যে, যদ্দুর বলা যায়, গত সেপ্টেম্বর (২০১৬) ছিল এই প্রক্রিয়ার ব্যস্ততম মাস কারণ ওই সময়ই ৪টি ভূয়া বিশ্ববিদ্যালয় ‘সাইটস’ এবং ৩টি ওয়েবসাইটস বন্ধ করা হয়। তিনি বলেন, “এরা বৃটেনের বহু বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ভূয়া স্নাতক সনদ বিক্রি করছিল। এদেরই একটি ‘স্টাফ্ফর্ড বিশ্ববিদ্যালয়’ ওই সেপ্টেম্বরেই আমরা বন্ধ করে দেই। অবশ্যই এদেশে ‘স্টাফ্ফর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে একটি খাঁটি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, আর ওরা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের উপর সোয়ার হয়েছিল।” আরো কতক ‘সাইটস’ যারা সারে এলাকার খাঁটি বিশ্ববিদ্যালয় “সারে বিশ্ববিদ্যালয়”র নাম ভাঙ্গাতে শুরু করে। কয়েকমাস আগে এরকম একটি ভূয়া প্রতিষ্ঠানকে আমরা বন্ধ করে দেই যার নাম ছিল ‘সারে বিশ্ববিদ্যালয়’।” এবং আরেকটি ছিল ‘ওলভার হেম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়’ যারা বানান ব্যবহার করতো ওলভার হেম্পটন শব্দের পি অক্ষরটি বাদ দিয়ে (Wolverhampton এর বদলে ‘Wolverhamton’)। অন্যান্য ভূয়া সনদসমূহ ‘সালফর্ড’ এবং ‘এঙ্গলিয়া রাসকিন’ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করে তৈরী করা। ‘মানচেষ্টার বিশ্ববিদ্যালয়’ এর জাল স্নাতক সনদ, নিলাম ওয়েবসাইট ‘ইবে’তে বিক্রি হয়েছে।
সরকার ২০১৫ সালের জুন মাসে এসব ভূয়া সেবাদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের লক্ষ্যে এক আইনী অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দেয়। পরিচালক জেইন রোলি বলেন, হেড(Hedd) এসব অপকর্মকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ দেশের ভেতরে এবং বাইরেও নিয়েছে। তিনি বলেন, বৃটেনের আইনানুযায়ী কেউ নিজেকে ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ বলতে পারবে না যতক্ষন না তিনি স্বরাষ্ট্র সচিব থেকে কোনরূপ নির্দেশ পাননি। “কেউ এরকম কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করলে তিনি প্রচলিত ‘ট্রেডমার্ক’ আইন ভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত হবেন। একটি প্রতিষ্ঠানের নামে অন্য কেউ ব্যবসা করতে পারেনা।” ‘Hedd’ নব্য স্নাতকধারীদের, তাদের স্নাতক সনদের নিয়ে ছবি তোলা থেকে বারণ থাকতে বলেছে কারণ এই ছবি প্রতারকদের সুযোগ করে দিতে পারে।
শিক্ষা বিভাগের একজন মুখপাত্র বলেন: “স্নাতক সনদ জালিয়াৎ ঠকবাজ উভয় খাঁটি শিক্ষনার্থী এবং নিয়োগদাতাগন, অতএব আমরা সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে যারা লাভবান হতে চায় তাদের বিরুদ্ধে চরম ব্যবস্থা নিয়েছি।”