এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে জামায়াতের
সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে মৌলভীবাজারে সমাবেশ করেছে বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী মৌভলীবাজার জেলা শাখা। সমাবেশকে কেন্দ্র করে ওইদিন সারা মৌলবীবাজার শহর জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল।
মঙ্গলবার সকালে মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মিছিল পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মৌলভীবাজার জেলা আমীর ইঞ্জিনিয়ার মো: শাহেদ আলীর সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারী মো: ইয়ামীর আলীর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য, মৌলভীবাজার-৩ আসনের জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী মো: আব্দুল মান্নান, প্রবীণ রাজনীতিবীদ ও সাবেক জেলা আমীর দেওয়ান সিরাজুল ইসলাম মতলিব, মৌলভীবাজার-১ আসনের মনোনীত প্রার্থী মাওলানা আমিনুল ইসলাম, মৌলভীবাজার-৪ আসনের মনোনীত প্রার্থী সিলেট মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী এডভোকেট মো: আব্দুর রব, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুর রহমান, মৌলভীবাজার পৌরসভার আমীর হাফেজ তাজুল ইসলাম, সদর উপজেলা আমীর ফখরুল ইসলাম, রাজনগর উপজেলা আমীর আবু রাইয়ান শাহীন, কুলাউড়া উপজেলা আমীর আব্দুল মুন্তাজিম, জুড়ী উপজেলা আমীর আব্দুল হাই হেলাল, বড়লেখা উপজেলা আমীর এমাদুল ইসলাম, ছাত্রশিবিরের মৌলভীবাজার শহর সভাপতি তারেক আজিজ ও জেলা সভাপতি নিজাম উদ্দিন প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের ৬ মাস ১০ দিন অতিবাহিত হচ্ছে। বর্তমান সরকারের আমলে এই প্রথম জামায়াতে ইসলামী রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছে। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের পর দেশবাসী আশা করেছিল তারা সকল প্রকার জুলুম নির্যাতন থেকে উদ্ধার পাবে। যারা মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটক ছিলেন তারা মুক্তি পাবে। শেখ হাসিনার পতনের পর অনেকে মুক্তি পেলেও মুক্তি পাননি জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম অথচ অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের ৬ মাস ১০ দিন অতিবাহিত হচ্ছে। দেশের মানুষ আশা করেছিলেন এ সময়ের মধ্যেই এটিএম আজহারুল ইসলাম মুক্তি পাবেন কিন্তু তার মুক্তি না হওয়ায় দেশবাসী বিস্মিত ও হতবাক।
বক্তরা বলেন, এটিএম আজহারুল ইসলাম ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় ট্রাইবুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করেন। আপিল বিভাগের চারজন বিচারপতির মধ্যে তিনজন বিচারপতি ট্রাইবুনালের রায় বহাল রাখলেও একজন বিচারপতি এ রায়ের সাথে দ্বিমত পোষণ করেন। জনাব এটিএম আজহারুল ইসলাম সেখানেও ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হন।
২০২৪ সালে ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যায়। দেশ স্বৈরাচারের কবল থেকে মুক্তিলাভ করে। রাজনৈতিক মিথ্যা মামলায় ফ্যাসিস্ট সরকারের গ্রেফতারকৃত অনেক নেতাকর্মী মুক্তিলাভ করেন। রাষ্ট্রপতির আদেশে অনেককে তৎক্ষণাৎ মুক্তি দেওয়া হয়। দেশবাসী আশা করেছিল যে, চরম জুলুম-নির্যাতনের শিকার জনাব এটিএম আজহারুল ইসলাম স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশে মুক্তিলাভ করবেন। কিন্তু তা হয়নি। স্বৈরশাসনামলে, জামায়াত জুলুম এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আর স্বৈরশাসন মুক্ত বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী এখনো বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।
স্বৈরাচারী শাসনামলে বিচারিক কার্যক্রমসমূহ সারা বিশ্বে বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধ ও প্রত্যাখ্যাত। স্বৈরাচারের আমলে গ্রেফতারকৃত এটিএম আজহারুল ইসলামকে কারাগারে আটক রাখা তার প্রতি চরম জুলুম ও অন্যায় ছাড়া আর কিছুই নয়। ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে তাঁকে এখনো আটক রাখায় জাতি বিস্মিত ও হতবাক। দেশবাসী স্বৈরাচারের কবল থেকে পরিপূর্ণভাবে মুক্তি চায়। এই পরিস্থিতিতে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি এটিএম আজহারুল ইসলামকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার জন্য আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি প্রেসক্লাব চত্বর ঘুরে শাহ মোস্তাফা রোড, বেরিরপার, কুসুমবাগ পয়েন্টে হয়ে চৌমুহনী পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশ ও মিছিলে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের কয়েক হাজার নেতাকর্মীরা অংশ গ্রহণ করেন।