আমিষগন খুব ভাল মানের কৃষক। তারা নিজেদের প্রয়োজনীয় সকল খাদ্য সামগ্রী নিজেরাই মাঠে কাজ করে উৎপাদন করে থাকে। কৃষি উৎপাদনের জন্য তারা আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে না। অতি পুরাতন গাধা বা ঘোড়ায় টানা লাঙ্গল ব্যবহার করে কৃষি উৎপাদন করে থাকে।
শষ্যরাখার গোলাঘর তৈরীতে আমিষগন খুব নিপুন। গোটা সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ সকলে মিলে এই গোলাঘর নির্মান করে থাকে। গোলাঘর তৈরীর সময় মেয়েরা পুরুষদের খাবার ব্যবস্থা করে থাকে। গোলাঘর নির্মাণের পর প্রতি গোলাঘরে একটি করে ‘হ্যাক্স’ চিহ্ন আঁকা হয়। এ চিহ্ন দুষ্ট বদশক্তিকে বিতারিত করে এমনই তাদের ধারণা। ‘পেন্সিলভানিয়া ডাচ’ আমিষদের মধ্যে এর প্রচলন রয়েছে। এ প্রথা, আমিষদের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীনমত, সম্প্রদায়, শিল্প ও কুটীর শিল্পের কথাই তাদের স্মরণে রাখতে সহায়তা করে।
আমিষগন তাঁদের জীবনযাপনের ছবি তোলায় খুব একটা উৎসাহবোধ করেন না। যদিও ছবি তোলাতে তেমন আপত্তি করেন না তবে তারা মনে করেন ছবি তোলা বিষয়টি তাদের ‘সেকেণ্ড কমাণ্ডমেন্ট’কে লঙ্ঘন করে। এই একই কারণে আমিষ উঠতি বয়সের বালিকারা যে পুতুল দিয়ে খেলা করে সে পুতুলের মাথা থাকে না।
কাজে, খেলাধূলায়, বাড়ীতে কিংবা গীর্জায়; গান অবশ্য আমিষ জীবনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে সেখানেও নিজস্ব কিছু গোত্রসংগীতই সাধারণভাবে গাওয়া হয়ে থাকে। দলবেঁধে গান গাওয়া আছে তবে ঐকতানে নয়। একই পরদার ধ্বনিতে গাইতে হয়।
|
বাদ্যযন্ত্র বাজানোও প্রাচীনপন্থী আমিষদের নিষিদ্ধ! কারণ তারা বিশ্বাস করেন এটি একটি মানুষের তৈরী কাজ যা আমিষ জীবনযাত্রায় যে অবমানিতাবস্থা, নম্রতা ও লৌকিকতাবর্জিত মূল্যবোধ মনের গভীরে কাজ করে বাদ্যযন্ত্র এর বিপরীত এবং যীশু খৃষ্ট তা নিষিদ্ধ করে গেছেন। তবে নিচক ব্যক্তিগতভাবে বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারেন যেমন ‘একোর্ডিয়ান’ অথবা ‘হারমোনিকা'(হারমোনিয়াম) তবে কখনই জানসাধারণ্যে নয়।
তোষক, রেজাই বা লেপ আমিষ নারী ও বালিকারা সম্মিলিতভাবে খুবই সতর্কতার সাথে তৈরী করে থাকে। তাদের তৈরী এ সামগ্রী পর্যটকদের কাছে খুবই প্রিয় মনোহারী একটি জিনিষ। এই তোষক বা রেজাই তৈরী আমিষ নারীদের জীবনে একধরণের গোত্রীয় মেলামেশার মাধ্যমে আয়েশী অবসর কাটানোর সুযোগ তৈরী করে। এ ধরনের কাজ আমিষদের গোত্রীয় পূণ্য ও সহযোগীতা ভাব প্রকাশ করে।
|