মুক্তকথা: বৃহস্পতিবার ৮ই সেপ্টেম্বর ২০১৬।। ২০১৫ সালে হজ্জ্বের সময় সৌদিদের আরবে কয়েক হাজার হাজীর অকাল মৃত্যুর আসল কারণ জানা গেছে। মোহাম্মদ জাফরি, যুক্তরাজ্যের ভ্রমণ ও সফর ব্যবস্থাপকদের একজন উপদেষ্টা, যিনি ওই দূর্ঘটনার সময় উপস্থিত হাজীদের সাথে কথা-বার্তা বলার সুযোগ পেয়েছিলেন। একটি বিশাল ভ্রমণ ব্যবসা নেটওয়ার্কের উপদেষ্টা হিসেবে ভ্রমণের সাথে সংশ্লিষ্ট এ ধরণের ঘটনা-দূর্ঘটনার মূল কারণ খুঁজে দেখাও জাফরির কাজের একটি বিশেষ অংশ। জাফরি বলেছেন তিনি এসব কুটিনাটি খুঁজতে গিয়ে যা পেয়েছেন তা’হল- ‘ওই দিন সৌদি রাজা তার প্রাসাদে সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রীসহ “গাল্ফ কোপারেশন কাউন্সিল”এর সদস্যদের নিমন্ত্রণ করেছিলেন। নিমন্ত্রণ রক্ষায় লোক-লস্কর নিয়ে নিরাপদে রাজপ্রাসাদে যাবার জন্য রাজপ্রহরীরা, শয়তানকে পাথর মারা অঙ্গনে সাধারণ মানুষ যাতায়াতের দু’টি রাস্তা হঠাৎই বন্ধ করে দেয়। আর এই কারণেই আত্মঘাতি দূর্ঘটনাটি ঘটে।’
তিনি আরও বলেন-‘এটি সম্পূর্ণই সৌদি সরকারের একটি অবিবেচনা প্রসূত নির্দেশের ফল। কারণ প্রায়শঃই প্রাসাদে কোন রাজকুমার আসা-যাবার পথকে নিরাপদ করার লক্ষ্যে মানুষের জরুরী গমনাগমনের রাস্তাকে হঠাৎ করেই এভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়। বন্ধ করার আগে কিংবা পরে কর্তৃপক্ষ মানুষের যাতায়াতের বিষয়টি একেবারেই মাথায় নেয় না। এর ফলেই ওই দিনের বেদনাদায়ক ভয়াবহ নির্মম দূর্ঘটনাটি ঘটে।’
গত সপ্তাহে ‘রেডিও ৪-এর একটি অনুষ্ঠানে আলাপকালে জাফরি আরও বলেন-“ফালিহ’ (সৌদি এনারজি মন্ত্রী) ঘটনার জন্য আল্লাহ কে দোষ দেন। আমার রাগ হয়। প্রত্যেক দূর্ঘটনায়ই সৌদিরা এভাবে বলে ‘এটি আল্লাহ’র ইচ্ছা। কিন্তু এসব ঘটনা আল্লাহ’র ইচ্ছা নয়- বরং মানুষের অযোগ্যতা।”
ওই মর্মন্তুদ দূর্ঘটনা থেকে নিজের মা’কে নিয়ে অজ্ঞাতেই বেঁচে গিয়েছেন ৪৫ বছর বয়েসি লিবিয়ান যুবক আবু বকর আহমদ ‘রেডিও-৪’ কে বলেন-‘হাজী ক্যাম্পের যাতায়াতের একটি রাস্তা খোলা রেখে বাকী সবক’টি রাস্তা পুলিশ বন্ধ করে দেয়।’ বকর বলেন-‘আমি নিজের চোখে মৃতদেহের স্তুপ দেখেছি, জখমি মানুষ দেখেছি; তাদের মৃত্যু যন্ত্রণা দেখেছি। পুলিশের সাথে জখমিদের সরিয়েছি।’ বকরের মতে তিনি দেখেছেন পুলিশের এসব কাজে কোন অভিজ্ঞতা নেই। ‘পুলিশ সেখানকার কোন রাস্তাঘাটই চেনে না।’