লণ্ডন।। এখনও পুরো ফলাফল ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি। আংশিক ফল ঘোষণা করা হয়েছে পাকিস্তানে। নির্বাচন কমিশন, জাতীয় পরিষদের ২৭২টি আসনের মধ্যে ২৫১টি আসনের ফল জানিয়েছে। এই ফলাফলে ‘পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ’ (পিটিআই) একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা না পেলেও সবচেয়ে বেশী আসন পেয়েছে। তাদের আসন সংখ্যা মোট ১১০টি। বিশ্বজোড়া প্রায় সকল সংবাদ মাধ্যম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমন ফলাফল জানা গেছে।
কোটি কোটি পাকিস্তানী ভোট দিয়েছে গত বুধবারের নির্বাচনে। এ নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিবিসি’র বক্তব্য বেশ উল্লেখ করার মত। বিবিসি’র মতে, ভোটের পর এখন কি হবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশটিতে। প্রথমতঃ দেশটি ভারত বিরুধী একটি পারমানবিক শক্তিধর দেশ। পাকিস্তানের রয়েছে এক উন্নয়নশীল অর্থনীতি এবং বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুসলিম প্রধান দেশ। বিবিসি’র মতে পাকিস্তানের এ ভোট সবচেয়ে তাদের ইতিহাসের জঘণ্যতম খারাপ ভোট। পাকিস্তানের ইতিহাসে এটি একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য সরকার পরিবর্তনের বিষয়। একটি গণতান্ত্রিক ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকার ভোটে বিজয়ী অন্য একটি সরকারের হাতে শান্তিপূর্ণভাবে পূর্ণমেয়াদ শেষে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। এটিই প্রত্যাশিত। কিন্তু পাকিস্তান সেই ১৯৪৭ এর পর থেকে অদ্যাবধি একবার যদি হয় ভোটের সরকার তো এর পরের বার হয় সামরিক সরকার। এভাবে দেয়াল ঘড়ির ‘পেন্ডুলাম’এর মত দুলে দুলে এসেছে। এ নির্বাচনটি ছিল সে হিসেবে একটি শুভ সূচনা ফলক। কিন্তু এ ভোটের সময় দেখাগেল মানুষের কাঁধে ভর করে বসা নেওয়াজের মুসলিম লীগ ও সামরিক বাহিনীর কঠিন টানা-টানি অবস্থা যার জেরে বোমা হামলা। ফলে নির্বাচনের ফলাফলের বিজয় গরীমা এবং তার উচ্ছাস আনন্দ ভোগ করছেন ক্ষুদ্র একটি গোষ্ঠী। বৃহৎ জনগোষ্ঠী সেখানে অনুপস্থিত।
দেরিতে হলেও অবশেষে আংশিক ফল ঘোষণা করল পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন। এক সময়ের পাকিস্তান ক্রিকেট দলের ‘ক্যাপটেন’ ইমরান খাঁ’কে ‘কাপ্তান’ উপাধিতে ভূষিত করে আনন্দবাজার লিখেছে- প্রত্যাশিত ভাবেই একক বৃহত্তম দল হিসাবে উঠে এসেছে ইমরান খানের পিটিআই। তবে সরকার গঠনের জন্য জোটের রাস্তা খুঁজতে হবে ‘কাপ্তান’কে।
‘ডন’ পত্রিকার বরাত দিয়ে ইত্তেফাক লিখেছে- আনুষ্ঠানিক ফল প্রকাশের আগেই তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) কাছে পরাজয় স্বীকার করে নিলো সাবেক পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)। প্রধান বিরোধীদল হিসেবে সংসদেও যাবে তারা।
পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নেওয়াজ (পিএমএন-এন) ৬৩টি আসন পেয়েছে। পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৪২টি আসন। নির্দলীয় বিজয়ীগন চার নম্বর স্থানে আছেন। নির্দলীয় হয়ে ভোট জিতেছেন মোট ১২ প্রার্থী। স্থানীয় দলগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০টি আসনে জিতেছে মুত্তাহিদা মজলিস-ই-আমল। পাকিস্তান মুসলিম লিগ-কায়েদ পিএমএলএন-কিউ’এর প্রার্থীরা পেয়েছেন পাঁচটি আসন।
গত কাল বুধবার ২৫শে জুলাই পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের ১১তম জাতীয় নির্বাচন হলো। নির্বাচনে মোট ২৭২টি আসনের ভোটগ্রহণ হয়। কোয়েটায় বোমা বিস্ফোরণের কারণে দু’টি আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত রাখা হয়। ফলে, ২৭০টি আসনের মধ্যে ২৫১টি আসনের ফল ঘোষণা করে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন। বাকি আসনগুলির ফলাফলও শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে বলে কমিশন জানিয়েছে। পত্রিকান্তরে জানা গেছে বেলুচিস্তানের ঘোষিত ফলাফলে এখনও স্পষ্ট ছবি আসেনি।