কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের শ্রীসূর্য্য টিকরপাড়া ও নোয়াগাঁও গ্রামের জনসাধারণের চলাচলের সরকারি রাস্তা জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় প্রভাবশালী ও আওয়ামীলীগ নেতা রুস্তুম আলীর বিরুদ্ধে রাস্তা দখলের অভিযোগ তুলে গত ৯ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গ্রামবাসী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
গ্রামবাসী জানান, পতনঊষার ইউনিয়নের শ্রীসূর্য্য টিকরপাড়া ও নোয়াগাঁও গ্রামের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত সরকারি রেকর্ডভূক্ত রাস্তা বিদ্যমান রয়েছে। এ রাস্তা দিয়ে দুই গ্রামের প্রায় সহস্রাধিক জনসাধারণ চলাচল করেন। তবে জনসাধারণের চলাচলের সরকারি এই রাস্তা কেটে নিজের জমির সাথে মিলিয়ে নিয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সহসভাপতি রুস্তুম আলী। তিনি এলাকায় প্রভাবশালী ও আওয়ামীলীগ নেতা থাকার কারনে বিগত কয়েক বছরে এই রাস্তা কেটে দখলে নিয়েছেন। পতনঊষার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জনসাধারণের চলাচলের রাস্তা উদ্ধারের চেষ্টা করেও রুস্তুম আলীর অসহযোগিতার কারনে ব্যর্থ হয়েছেন।
অভিযোগ করে গ্রামের জলিল মিয়া, গণি মিয়া, মখলিছ মিয়া, আপিজুন বেগম, চুমকি বেগম বলেন, রুস্তুম আলী প্রভাবশালী থাকার কারনে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা কেটে নিজের জমির সাথে মিলিয়ে নিয়েছেন। ফলে আমরা গ্রামের লোকজন এখন রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে পারছি না। বিষয়টি সমাধানের জন্য ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের কাছে গেলে চেয়ারম্যান সাহেবের কথাও রুস্তুম আলী শুনতে রাজি হননি। পরবর্তীতে আমরা বাধ্য হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে সরকারি রাস্তা উদ্ধারের জন্য লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
রাস্তা দখলের অভিযোগ বিষয়ে রুস্তম আলী বলেন, আমার জমি সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।
![]() |
এ ব্যাপারে পতনঊষার ইউপি চেয়ারম্যান অলি আহমদ খান বলেন, রাস্তা উদ্ধারের চেষ্টা করলেও রুস্তুম আলী আদালতে মামলা দিয়েছেন বলে কোন সমাধানে আসেননি। বর্তমানে গ্রামের লোকজনের যাতায়াতের এই রাস্তাটি বন্ধ রয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়ে ইউনিয়ন সহকারী তহশিলদারকে তদন্তের জন্য দিয়েছি।
মুন্সিবাজার ইউনিয়ন তহশিল অফিসের সহকারী তহশিলদার কমলেন্দু ভট্টাচার্য্য বলেন, সরেজমিনে তদন্ত করে রাস্তা দখলের সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে সার্ভেয়ারের মাধ্যমে জরিপের প্রয়োজনীয়তাসহ এই বিষয়ে ইউএনও বরাবরে প্রতিবেদন দাখিল করবো।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ শমশেরনগর লামাবাজার হতে আব্দুল মছব্বির একাডেমী রাস্তায় সিসি ঢালাই কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা হাটবাজার উন্নয়ন তহবিলের অর্থায়নে প্রকল্প কাজে ৩০২ ফুট রাস্তা সিসি ঢালাই কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। কাজ চলাকালীন সময়ে এলজিইডি প্রকৌশলী অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও কাউকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি।
জানা যায়, শমশেরনগর লামাবাজার হতে আব্দুল মছব্বির একাডেমী ইটসলিং রাস্তায় ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে ৩০২ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৮ ফুট প্রস্তে রাস্তায় সিসি ঢালাই প্রকল্প কাজে ৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। হাটবাজার উন্নয়ন তহবিল হতে বরাদ্দকৃত টাকায় প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করেন শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. ফজলুর রহমান(দিলদার) ও সানোয়ার হোসেন। তবে এই কাজে অতি নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে এবং প্রাক্কলিত ব্যয় মোতাবেক কাজ না করে এবং উপজেলা এলজিইডি অফিসের কোন প্রকৌশলী কিংবা সাব সহকারী প্রকৌশলীর অনুপস্থিতিতে নামকাওয়াস্তে কোন রকমের ঢালাই কাজ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ তুলেছেন।
![]() |
শমশেরনগর ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি এনামুল হক শামীম অভিযোগ করে বলেন, এ রাস্তার কাজে অনিয়ম বিষয়ে ইউএনও মহোদয়কে অবহিত করা হয়েছে। পূর্বে অভিযোগ দেয়ার পর সাইনবোর্ডের পরিবর্তে কাগজের মধ্যে দেয়ালে সাইনবোর্ড টাঙ্গানো হয়েছে। এছাড়া নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে উপরে উপরে নামমাত্র কাজ করা হচ্ছে। এলজিইডি অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল ইসলাম আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে এভাবে যার যার ইচ্ছে মতো কাজ করাচ্ছেন। ফলে কিছুদিনের মধ্যেই রাস্তার ঢালাই কাজ ভেঙ্গে পড়তে শুরু করেছে। এভাবে নিম্নমানের কাজে রাস্তা বিনষ্ট করা ঠিক হয়নি।
অভিযোগ বিষয়ে প্রকল্প সভাপতি শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. ফজলুর রহমান(দিলদার) বলেন, কাজে কোন অনিয়ম দেখছি না। কাজ নিয়ম মোতাবেক সম্পন্ন হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর(এলজিইডি) এর কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী সাইফুল আজম জানান, বিষয়টি তার জানা নেই।
এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।