মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক গৃহকর্মীকে দেড় বছর ধরে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় রবিবার (১৭ এপ্রিল) দিবাগত গভীর রাতে শ্রীমঙ্গল থানা, জেলা পুলিশ ও র্যাবের যৌথ অভিযানে মৌলভীবাজার সদরের জগৎসী গ্রাম থেকে চন্দন নামে একজনকে আটক করে।
শ্রীমঙ্গল ষ্টেশন রোডের হিরম্ময় প্লাজার তিন তলার একটি বাসা থেকে গত ১৬ এপ্রিল সকালে হাত-পা বাধা অবস্থায় ধর্ষনের শিকার ১৭ বছর বয়সি এক গৃহকর্মীকে উদ্ধার করে। এসময় শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ বাসার গৃহিণী সাধনা ধর(৬০) পূর্ণা ধর(৩০) নামে দুই নারীকে গ্রেফতার করে। প্রধান অভিযুক্ত চন্দন পুলিশের চোখ ফাকি দিয়ে পালিয়ে যায়।
মেয়েটি অভিযোগ করে- এসএসপি পাশ করার পর আর্থিক দুরাবস্থার কারণে গত দেড় বছর আগে তার পরিবার তাকে ওই বাসায় কাজের জন্য রেখে যায়। এরপর চন্দন তাকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। এই ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে পাষন্ড চন্দন দীর্ঘ দেড় বছর যাবত তার উপর যৌন নির্যাতন চালায়। প্রতিবাদ করলে হাত পা বেধে রাখে।
পুলিশ জানায়, ভিকটিম অরেড ফ্যাশন নামীয় কাপড়ের দোকানে বিগত দেড় বছর যাবৎ সেলসম্যান হিসেবে চাকরি করতো। আসামী চন্দন ধর ভিকটিমকে বিভিন্ন কলা-কৌশল ও প্রলোভন দেখাইয়া বিগত প্রায় দেড় বছর যাবৎ বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে তাহার দোকানের ২য় তলায় স্টোর রুমে নিয়া তাহার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক একাধিকবার ধর্ষন করে। একপর্যায়ে ভিকটিম বাধ্য হয়ে গত ৫ থেকে ৬ মাস পূর্বে চাকুরি ছাড়িয়া আসামীর দোকান হইতে চলিয়া যায়। গত ৩১ মার্চ সকাল অনুমান ১১.০০ ঘটিকার সময় আসামী চন্দন ধর পুনরায় ভিকটিমকে ডাকিয়া তাহার দোকানে আনিয়া বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখাইয়া দোকানের ২য় তলায় স্টোর রুমে নিয়া ভিকটিমকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষন করে।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি মোঃ শামীম অর রশিদ তালুকদার বলেন, বিগত কয়েকদিন যাবৎ আসামী চন্দন ধর ভিকটিমকে আবার তাহার দোকানে অথবা বিভিন্ন রিসোর্টে যাওয়ার জন্য বলিলে ভিকটিম বিষয়টি ১নং আসামীর বাসায় জানানোর জন্য ১৬ এপ্রিল সকালে শ্রীমঙ্গলের স্টেশনরোডস্থ হিরন্ময় প্লাজার ৩য় তলায় আসামীদের বাসায় যাইয়া আসামীর মা সাধনা ধর নিকট বলিলে আসামীর স্ত্রী পূর্ণা ধর সহ সকল আসামীপন ভিকটিমকে তাহাদের বসতঘরে আটক রাখিয়া ওড়না দিয়া হাত-পা বাধিয়া এলোপাথারী মারপিট করিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিলাফুলা জখম করে। পরে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে। ভিকটিম বর্তমানে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
তিনি আরও জানান, ভিকটিম নিজে বাদি হইয়া চন্দন ধর, তার মা সাধনা ধর, আসামির স্ত্রী পূর্ণা ধর এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশের চৌকস টিম আসামী গ্রেফতারের জন্য সাড়াশি অভিযান পরিচালনাকালে মামলার ২নং ও ৩নং আসামীকে শ্রীমঙ্গল থানাধীন স্টেশন রোড এলাকা হইতে গ্রেফতার ও প্রধান আসামী চন্দন ধরকে মৌলভীবাজার সদর থানাধীন জগৎসী সুত্রধর বাড়ি হইতে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।