লন্ডন: ঘটনা ইন্দোনেশিয়ার। দুনিয়ার আজগুবি ঘটনা। ইন্দোনেশিয়ার নাগরীক একজন শরিফুদ্দীন বন্ধু-বান্ধবদের সাথে নদীতে গোসল করছিলেন। এমন সময় অনাকাঙ্ক্ষিত সেই ঘটনাটি ঘটে।
ওই সময় তাকে পানির গভীরে টেনে নিয়ে গেল লবনাক্ত পানির একটি কুমীর।
তার সাথের লোক ও আত্মীয়-স্বজন খোঁজ করে না পেয়ে পরিচিত ডাকিনীবিদ্যায় পারদর্শী যাদুকর এক ডাক্তারকে ডেকে আনা হয়।
এমন ঘটনা দুনিয়ার সবক’টি বড় বড় সংবাদ মাধ্যমে বিরাট অক্ষরের শিরোনাম হয়ে আসার কথা। তা’ হয়নি। কেনো হয়নি বলতে পারি না। বরং খোদ মেইল পত্রিকা তাদের অনলাইনের নিউজ পাতার অনেক নিচে খবরটি প্রকাশ করেছে।
যাদুকর ওই ডাক্তার শরিফুদ্দীন নাম ধরে কিছু মন্ত্র উচ্চারণের পর অজ্ঞাতভাবে জলের কুমীর সাঁতার কেটে মৃতদেহটি মুখে করে নদীর কিনারে নিয়ে এসে ফেরৎ দিয়ে যায়।
দুনিয়ার আদেখা এ ঘটনাটির খবর প্রকাশ করেছে লন্ডনের “দি মেইল” পত্রিকা, গত কাল বৃহস্পতিবার ২০ জুলাই। খবরটি সংগ্রহ করেছেন সাংবাদিক গারেথ ডেভিস।
ঘটনাটি ঘটে গত মঙ্গলবার ১৮ জুলাই ২০১৭। ঘটে ইন্দোনেশিয়ার বেরাউ এলাকায় বিকাল ৬টা ২০মিনিটের সময়। যারা নিজ চোখে ঘটনাটি দেখেছেন তাদের ভাষায়, ডাক্তার মন্ত্রবলে কুমীরের কাছে শরিফুদ্দীনের দেহ ফেরৎ দেয়ার হুকুম করেন। শুনতে আজগুবি হলেও অনেক মানুষ প্রত্যক্ষ করেছেন এমনকি ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে দৈনিক মেইল। ওই ভিডিওতে স্পষ্টই দেখা যায় একটি কুমীর, মুখে একটি মৃতদেহ নিয়ে সাঁতড়িয়ে তীরে এসে লাশটি রেখে চলে গেল।
এর পর কি আর কোন সাক্ষীসাবুদের প্রয়োজন হয়! অবাক করা ঘটনা বৈকি।
শরিফুদ্দীনকে কুমীর নদীর গভীরে নিয়ে যাবার পর আত্মীয়-স্বজন তাদের পরিচিত এক ‘কুমীরের ডাকিনীবিদ্যা’র উপর সুপরিচিত অভিজ্ঞ এক ডাক্তারকে নিয়ে আসেন। সাংবাদিক গারেথ ডেভিস নিজ চোখে দেখা মানুষজনের কথায় লিখেছেন যে ওই ডাক্তার এসে মন্ত্র পাঠ করে শরিফুদ্দীনের মৃতদেহ ফেরৎ দেয়ার জন্য কুমীরকে হুকুম করেন। আর অমনি কিছুক্ষন পর দেখা গেল একটি কুমীর শরিফুদ্দীনের মৃতদেহ মুখেকরে নিয়ে নদীর তীরের দিকে এসে রেখে চলে গেল।
শরিফুদ্দীনের বন্ধু এন্ডি রেশমিন যিনি নদীতে তার সাথে গোসলে ছিলেন, সাংবাদিক ডেভিসকে জানান যে শরিফুদ্দীন যেই মাত্র পানিতে নেমেছে অমনি কুমীরটি তাকে কামড়ে ধরে নিয়ে যায়। ‘এত’ নামের আরেকজন জানান যে ওখানে মানুষের মধ্যে গল্প আছে কাপড় পড়ে গোসল করলে কোন সমস্যা হয় না কিন্তু উলঙ্গ হয়ে নদীতে গোসলে গেলে কুমীর আক্রমন করে।
শরিফুদ্দীনকে মৃত পাওয়া যায় এবং তার শরীরের ডানদিকের পাঁজরে জখম ছিল।
ঘটনার তদন্তকারী স্থানীয় পুলিশ ইন্সপেক্টর টালিশায়ন ফয়সল হামিদ জানান শরিফুদ্দীনের বন্ধুরা কুমীর আক্রমনের কথা রাতে তাকে জানায় এবং সে রাত্রে তিনি খোঁজখবর নিয়েছিলেন। কিন্তু ওই সন্ধ্যায় শরিফুদ্দীনের কোন খোঁজ না পাওয়ায় আশ-পাশের মানুষজন একজন কুমীর বিশেষজ্ঞকে ডেকে আনেন। পরের দিন বুধবার সকালে ঠিকই শরিফুদ্দীনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। তিনি কিন্তু ভিডিও বা কুমীর লাশ ফেরৎ দিয়েছে এমন কোন কথা বলেননি কিংবা সাংবাদিকও তাকে এ বিষয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করেননি।
তিনি বলেন, একটি ঘটনা অনেকটা আজগুবিই মনে হয় যে ৩টি কুমীরকে নদীতে দেখাগেল। মনে হচ্ছিল যেনো মৃতদেহটি দেখে রাখছিল ওরা যাতে লাশটি ভাল অবস্থায় ফেরৎ দেয়া যায় এমনি এক ভাব। তিনি নিজ থেকেই বলেন, মানুষজন এখানে গোসল তো করবেই। শুধু আফসোস এ লোকটি কুমীরের শিকার হলো। তবে মূল বিষয় হলো যে লাশটি পাওয়া গেছে এবং মানুষজন ওই আক্রমণকারী কুমীরকে খুঁজছে।
ভিডিওটিতে স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে কুমীরটি একটি লাশ মুখে নিয়ে আসছে।