1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
কপ-২৬ : ক্লান্তিহীন এক সফল রাষ্ট্রনায়ক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা - মুক্তকথা
শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৮ অপরাহ্ন

কপ-২৬ : ক্লান্তিহীন এক সফল রাষ্ট্রনায়ক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : সোমবার, ৮ নভেম্বর, ২০২১
  • ৫০০ পড়া হয়েছে

-জাকির হোসেন জুমন

স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে চলমান জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন(কপ-২৬) এর অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখার কথা ভাবছিলাম, কিন্তু কিভাবে শুরু করবো বুঝতে পারছিলাম না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর সুযোগ্য উত্তরসূরি, বাংলার মানুষের আশা-ভরসার শেষ ঠিকানা, সফল রাষ্ট্রনায়ক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এঁর কপ-২৬ এ দুটি কর্মব্যস্ত দিন স্বচক্ষে দেখার মাধ্যমে যে এক অনন্যসাধারণ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি তা পরিপূর্ণভাবে উপস্থাপন আসলেই কষ্টসাধ্য।
কপ-২৬ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য ১ নভেম্বর এবং ২ নভেম্বর দুদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি ছিলো। প্রথম দিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপ-মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এবং উল্লিখিত মন্ত্রণালয়গুলোর সচিববৃন্দসহ উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগণ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও সফরসঙ্গী হিসেবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ আরও অনেক বুদ্ধিজীবী এবং স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিবর্গও যোগদান করেছেন কপ-২৬ সম্মেলনে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দ অবস্থানের কারণে সম্মেলন কেন্দ্রের আশেপাশের এলাকাসহ পুরো গ্লাসগো শহর ছিলো নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি অনুযায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পরিবেশ মন্ত্রী ১ নভেম্বর ভোর বেলা রওয়ানা হন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করতে, কেননা সকাল ১০টায় কমনওয়েলথ প্যাভিলিয়নে কপ-২৬ এর প্রথম প্রোগ্রামটি অনুষ্ঠিত হবার কথা যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। সেখানে পৌঁছে দেখতে পেলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কে নজিরবিহীন নিরাপত্তা দিচ্ছে স্কটল্যাণ্ড সরকার। মনে হলো আমার দেশের প্রধানমন্ত্রী বহির্বিশ্বে যে সম্মানে সম্মানিত হচ্ছেন তা যদি দেশের সকল মানুষ জানতে পারতো, তাহলে গর্বে তাদের বুক ভরে যেতো। বিদেশের মাটিতে নিজের দেশের প্রধানমন্ত্রীর এই সম্মান পাওয়া মানে হলো বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ সম্মানিত হওয়া আর নিঃসন্দেহে প্রবাসী মানুষের জন্য তা গৌরবের।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আবাসস্থলের মূল ফটকে উপস্থিত হতেই দুজন অফিসার এগিয়ে এসে মন্ত্রীদ্বয়কে জানালেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখনই যাত্রা করবেন। তাই আমরা পুনরায় যাত্রা শুরু করে যথাসময়ে সম্মেলনস্থলে পৌঁছালাম এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করতে থাকলাম। মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পরিবেশ মন্ত্রী উভয়েই কমনওয়েলথ প্যাভিলিয়নে গেলেন। এদিকে বাংলাদেশ হাইকমিশন যুক্তরাজ্য হাইকমিশনের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানালেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২/৩ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছাবেন। কমনওয়েলথ প্যাভিলিয়নে ২টি দিক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করা যায়। আমি ঠিক সামনে অপেক্ষা করতে থাকলাম আর এদিক ওদিক তাকাচ্ছি কারণ কেউ বলতে পারেন না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কোন দিক দিয়ে আসবেন।

কিছুক্ষণের মধ্যেই হঠাৎ দূরে থেকে দেখলাম বীরদর্পে মৃদু পায়ে হেঁটে আসছেন আমাদের গৌরব আর অহংকার, জাতির পিতার রেখে যাওয়া আমানত, আল্লাহর তরফ থেকে বাংলার মানুষের জন্য প্রেরিত আশীর্বাদ, সফল রাষ্ট্রনায়ক জননেত্রী শেখ হাসিনা। উনি এসে পৌঁছালেন এবং অবনত চিত্তে উনাকে অভ্যর্থনা জানানো হলো কমনওয়েলথের পক্ষ থেকে। কানে ভেসে আসলো এক ভিনদেশি মহিলা পাশের সঙ্গীকে বলছেন – “She is the Prime Minister of Bangladesh Her Excellency Sheikh Hasina”(উনি বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা)!
সম্মান কখনোই জোর করে আদায় করা যায় না, সম্মান জিনিসটা অর্জনের, সম্মান জিনিসটা ভালোবাসার! কমনওয়েলথ প্যাভিলিয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে যে সম্মান দেয়া হয়েছে তা বিরল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন বিশ্বের বুকে নিজেকে সেভাবেই প্রতিষ্ঠিত করেছেন যার জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দ উনাকে কুর্নিশ করে, সমীহ করে, শ্রদ্ধা করে আর বিশ্বের সাধারণ জনতা সবাই উনাকে চিনে এবং ভালোবাসে! কমনওয়েলথের প্রোগ্রাম শেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন হেঁটে পরের কনফারেন্স রুমের দিকে রওয়ানা হলেন তার একটু পরেই কমনওয়েলথ সেক্রেটারি প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যাণ্ড এসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে একটি ছবি তোলার অনুরোধ করলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হেসে সম্মতি দিলেন। তারপর কমনওয়েলথ সেক্রেটারি জেনারেল অবশিষ্ট প্রোগ্রামগুলোতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে উপস্থিত থাকার অনুমতির জন্য অনুরোধ করলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিলেন এবং উনিও বাকী সময়টা সাথে থাকলেন। কমনওয়েলথ প্যাভিলিয়ন, স্কটল্যান্ড প্যাভিলিয়ন, বিল গেটস্ এবং প্রিন্স চার্লস-সহ বিশ্ব নেতাদের সাথে বিরতি ছাড়া একটার পর একটা মূল সম্মেলনে বক্তব্য প্রদান করে বিকেল বেলা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্মেলন স্থল ত্যাগ করলেন।
দ্বিতীয় দিন যথারীতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য আমরা কপ-২৬ এর সভাপতির ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা করতে থাকলাম। সেদিন ছিলো সকাল ৮টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত বিরতিহীন প্রোগ্রাম। কোনো সাধারণ মানুষের পক্ষে বাস্তবায়ন করার জন্য অসম্ভব একটি শিডিউল। ১২ টা মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করা তাও আবার প্রতিটি মিটিংয়ের আলাদা সম্মেলন কক্ষ, একটা থেকে আরেকটা মিটিংয়ের সময়ের ব্যবধান মাত্র ৫ মিনিট এবং প্রতিটি মিটিংয়ের স্থায়িত্বকাল ৪০ মিনিট থেকে এবং ১ ঘন্টা। আমি নিজে যতটা সন্দিহান হয়েছিলাম ঠিক ততটাই অবাক হয়েছি যখন দেখলাম কোনো বিরতি না নিয়ে, দুপুরের খাবারও না খেয়ে সকাল থেকে রাত বারোটা পর্যন্ত অকল্পনীয় পরিশ্রম করলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। তিনি সদা হাস্যোজ্জ্বল মুখে প্রতিটা মিটিংয়ে যথাসময়ে উপস্থিত হয়ে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন।

কপ-২৬ এর মূল সম্মেলন কক্ষে কপ-২৬ এর সভাপতি, সেক্রেটারি সহ সকল দেশের প্রতিনিধিগণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে যে বিরল সম্মান দেখিয়েছেন তা সত্যিই অনন্য। বাংলাদেশের একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধু কন্যা সময়ের অভাবে বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দিয়েছেন এবং দেখা করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। উনার সাথে ১ মিনিট দেখা করার জন্য অপেক্ষা করেছেন বিশ্ব নেতৃবৃন্দ। আমাদের আর কী পাওয়ার আছে?! আমি গত কয়েকদিন সার্বক্ষণিকভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রোগ্রামগুলো দেখে যে কয়েকটি বিষয় অনুধাবন করেছি তা হলো, উনি আপাদমস্তক একজন আমানতদার। উনার কর্মস্পৃহা দেখে মনে হলো উনি বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া আমানতকে যতদিন পর্যন্ত নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে না পারবেন ততদিন পর্যন্ত উনার এই পরিশ্রম অব্যাহত থাকবে। ১৯৮১ সালে এই বাংলাদেশের মানুষের সেবা করার জন্যই আমাদের কাছে এসেছিলেন, তাই তিনি আজ সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন এদেশের মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষমতা বা পদবির চেয়ে বড় হলো বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। সেটা তিনি করবেন কারণ তাঁর নেতৃত্বে সেই দৃঢ়তা রয়েছে। তাই আমি দেশের সকলকে এই কথাই বলবো যে, জননেত্রীকে ভালোবেসে সত্যিকার অর্থে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে সবাই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। নিজের অন্তরকে পরিষ্কার রেখে বিবেকের আদালতে নিজের বিচার করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুযায়ী প্রতিটি কাজ করতে হবে। রাজনীতিতে সাময়িক সুযোগের সন্ধান না করে জননেত্রীর ভিশন অনুযায়ী কাজ করলে আজ কিংবা কাল মূল্যায়ন পাবেন তাতে কোনো সন্দেহ নাই। কিন্তু আদর্শে যদি কোনো ধরনের শঠতা থাকে তাহলে প্রকৃতি এর বিচার করবে যেটা অতীতেও হয়েছে। কেননা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই পৃথিবীর বুকে একমাত্র রাজনৈতিক দল যারা ৭ কোটি মানুষেকে নেতৃত্ব দিয়ে মাত্র ৯ মাসে বিশ্ব মানচিত্রে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছে। তাই সবার প্রতি অনুরোধ থাকবে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দিন রাত যেভাবে পরিশ্রম করছেন সেটা যেন আমাদের কারণে বাধাগ্রস্থ না হয়। আমাদের কোনো কাজে দল যেন প্রশ্নের সম্মুখীন না হয়। সবাই ভালো থাকবেন আর মহান আল্লাহর কাছে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘজীবন কামনা করে দোয়া করবেন।

(লেখকঃ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রীর জ্যেষ্ঠ পুত্র এবং কপ-২৬ সম্মেলনের অন্যতম অংশগ্রহণকারী)

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT