প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ।। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ন্যাশনাল টি কোম্পানীর মালিকাধীন পাত্রখোলা বাগানে এক সাধারণ চা শ্রমিক আনু কর্মী (২৬)-কে প্রহারের অভিযোগে গত শুক্রবার সকাল থেকে পাত্রখোলা চা বাগানে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এ উত্তেজনায় বেলা দেড়টায় পাত্রখোলা চা বাগানে চা শ্রমিকদের দুই পক্ষের সৃষ্ট সংঘর্ষে এক চা শ্রমিক আহত হয়েছে। পরবর্তীতে কমলগঞ্জ থানার পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হলেও শুক্রবার রাতে একদল চা শ্রমিক প্রতিপেক্ষর উপর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়ে চা বাগানে ফিরে রাত ১টায় কুপিয়ে প্রতিপক্ষের এক চা শ্রমিককে গুরুতরভাবে আহত করে। কুপানোয় আহত চা শ্রমিকের নাম মোহন লাল বাউরী (৩৫)। সে পাত্রখোলা চা বাগানের বাজার লাইনের মাখন বাউরীর ছেলে এবং এ চা বাগানের সে লাইন পাহারাদার। প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হলে কমলগঞ্জ থানার পুলিশ তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে দ্রুত তাকে রাতেই সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
পাত্রখোলা চা বাগান সূত্রে জানা যায়, চা বাগানের লাইন পাহারাদার শ্রমিক রবি দেব শ্রমিক রেনু গড় (৩০)কে মারধর করে। এ ঘটনায় চা শ্রমিক প্রধান ব্যবস্থাপকের নিকট অভিযোগ করেন একদল চা শ্রমিক। অভিযোগ পেয়ে ব্যবস্থাপক সামাজিক বৈঠকে সমাধানের আশ্বাস দেন। পরে প্রতিবাদী শ্রমিকরা শান্ত হয়ে ফিরে যায় যার যার ঘরে। বিচারাধীন থাকাবস্থায় প্রতিপক্ষ এক শ্রমিক শ্রমিক আনু কর্মী ও গোপাল কুর্মীকে মারধরে এ দুই শ্রমিক আহত হন। আহতদেরকে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ খবর চা বাগানে ছড়িয়ে পড়লে দুইদল চা শ্রমিকের মাঝে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে। এ উত্তেজনার খবর পেয়ে কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল পাত্রখোলা চা বাগানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
থানায় অভিযোগ দায়ের করে বাগানে ফিরে বাজার লাইন পাহারাদার মোহন লাল বাউরীকে একা পেয়ে কুপিয়ে আহত করেন। পরে পুলিশের একটি দল গুরুতর আহতাবস্থায় মোহন লাল বাউরীকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ খবর চা বাগানে ছড়িয়ে পড়লে দুইপক্ষ চা শ্রমিকের মাঝে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে। এ ঘটনার পর থেকে পাত্রখোলা চা বাগানে কমলগঞ্জ থানা ও মৌলভীবাজার পুলিশ লাইন থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ মোতায়ের পর উভয় পক্ষের নেতৃস্থানীয় চা শ্রমিকরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে।
পাত্রখোলা চা বাগান ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম দুই দিন ধরে এ চা বাগানের শ্রমিকদে মাঝে উত্তেজনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শুক্রবার মধ্যরাতে একদল চা শ্রমিক লাইন পাহারাদার মোহন লাল বাউরীকে কুপিয়েছে। খবর পেয়ে তিনি রাতেই ঘটনাস্থলে আসেন। এর পর পুলিশ এসে গুরুতর আহত লাইন পাহারাদরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এর পর থেকে পাত্রখোলা চা বাগানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন বাগানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আহত একজনকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।