মুক্তকথা সংবাদকক্ষ।। ভারতের দক্ষিনাঞ্চলের সাথে সম্পর্ক আরো দৃঢ় করতে বাংলাদেশ চেন্নাইতে হাইকমিশনের নতুন প্রতিনিধি দপ্তর খুলার চিন্তা-ভাবনা করছে। ভারতের হিন্দু পত্রিকার সাথে আলাপকালে দিল্লীতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এমন খবর দিয়েছেন।
গত শনিবার “দি হিন্দু” সংবাদপত্রের সাথে আলাপকালে হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী বলেছেন, “আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের কাছে অনুরোধ রেখেছি। ভারত সরকারের পররাষ্ট্র দফতর অনুমতি দেয়ার সাথে সাথেই আমরা চেন্নাই’তে প্রতিনিধি মিশন স্থাপন করবো।” ভারতে এটি হবে বাংলাদেশের ৬ষ্টতম প্রতিনিধিত্বমূলক হাইকমিশন। দিল্লীতে বাংলাদেশের হাইকমিশন ছাড়াও কলকাতা ও মোম্বাইয়ে রয়েছে প্রতিনিধিত্বমূলক হাইকমিশনের অফিস এবং গৌহাটি ও আগরতলায় রয়েছে সহকারী অফিস।
হাইকমিশনার আলী জানান, বিপুল সংখ্যায় ভারতীয়গন বাংলাদেশে কাজ করছেন এবং তারা মূলতঃ দক্ষিনভারত থেকে। বহু বাংলাদেশীও দক্ষিনভারতে আসেন। তারা মূলতঃ আসেন চিকিৎসা নিতে। মোটামুটি যুক্তিসংগত খরচে এখানে ভাল চিকিৎসা পাওয়া যায়। এখানকার মানুষের সাথে আমাদের মানুষের ব্যক্তিগত যোগাযোগ দৃঢ় করার লক্ষ্যেই এই প্রতিনিধিত্বমূলক হাইকমিশনের অফিস খুলতে চায় আমাদের সরকার।
“দি হিন্দু”কে হাইকমিশনার আরো বলেন, বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক অতীতের সকল সময় থেকে তুঙ্গে আছে। উভয় দেশই সহযোগীতার সকল ক্ষেত্র চিহ্নিত করতে পেরেছে। এখন আমাদের সীমান্ত পুরোপুরি চিহ্নিত। সীমান্ত যোগাযোগ আগের জায়গায় পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। বিদ্যুৎশক্তি বাড়ানোর সহযোগীতা অপর একটি প্রধান দিক। রাশিয়া বর্তমানে একটি পারমানবিক ‘রিএক্টর’ নির্মাণের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ভারত এক্ষেত্রে কারিগরী সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যও দৌড়ে দৌড়ে বাড়ছে। যা কি-না বর্তমানে ৯বিলিয়ন ছাড়িয়ে যেতে পারে।
হাইকমিশনার তার আলাপে রোহিঙ্গা বিষয়কে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে বলেন যে এ কাজে একমাত্র ভারতই পারে আমাদের প্রয়োজনীয় সঠিক সহায়তা দিতে। তিনি বলেন, আমাদের দেশে বর্তমানে ১.১মিলিয়ন রোহিঙ্গা শ্মরণার্থী রয়েছে, যারা মূলতঃ কক্সবাজার এলাকায় রয়েছে। আগে ৪শ হাজার রোহিঙ্গা এসেছিল। এর পর সাম্প্রতিককালে আরো ৭শ হাজার এসেছে। এপর্যন্ত শেখ হাসিনা সরকার অবস্থা সামাল দিয়েছেন। এখানে একটি আঞ্চলিক সমাধানের প্রয়োজন রয়েছে খুবই শক্তিশালীভাবে। আঞ্চলিক শক্তিসমূহকে এ বিপুল সংখ্যার শ্মরণার্থীকে ফিরিয়ে নিতে মায়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মাঝে বর্তমানে বিরূপ কিছু আছে কি-না এমন জানার বিষয়ে হাইকমিশনার বলেন, বেআইনী সীমান্ত পারাপার এখনও একটি বিষয় তবে বহুলাংশে কমে এসেছে এবং সীমান্ত হ্ত্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে। অবশ্য এ সীমান্ত হত্যাকে শূণ্যের কোটায় নিয়ে আসতে হবে।
হাই কমিশনারের মতে অপর একটি প্রধান বিষয় হলো দু’দেশের মধ্যে জলবন্টন। উভয়দেশ গঙ্গার জল ভাগ করে নেয়ার দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু তিস্তার জল বন্টনে এখনও দু’দেশ কোন চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছতে পারেনি। যৌথ নদী ব্যবস্থাপনা এবং উন্নয়নে আমাদের এগিয়ে আসা উচিৎ।