মৌলভীবাজারে কলমকরা টমেটোর ফলনের অতিপ্রাচুর্যে সাবলম্বী কৃষকরামৌলভীবাজার, ১৮ অক্টোবর ২০২১ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় অসময়ের কলম বা জোড়া দেয়া পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করে সাবলম্বী হচ্ছেন অনেক কৃষক। আবহাওয়া অনুকুল থাকায় এবছরও বর্ষাকালীন এই টমেটোর ফলন হয়েছে অতিপ্রচুর। লাভজনক ফসলের ফলন প্রাচুর্যে খুশি চাষীরা। চাষীরা জানান, পাত্রখোলা ক্লাব এলাকায় উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা কয়েকজন চাষী আলাদাভাবে প্রায় এক’শ কেদার জমি এক বছরের জন্য বন্দোবস্ত নিয়ে টমেটোর চাষ করেছেন। প্রতি কিয়ার জমি পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকায় ইজারা নিয়েছেন তারা। মো. আব্দুল মতিন কয়েক বছর ধরে এখানে তরমুজ শসা ও টমেটোর চাষ করছেন। এবার তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে টমেটোর চাষ করেছেন। এক বিঘা জমিতে শ্রমিক, বাঁশ, চারা, সার ও কীটনাশক বাবদ খরচ হয় প্রায় লাখ টাকা। প্রতিটি চারার দাম আট থেকে ১০ টাকা। এখন পর্যন্ত তিনি প্রায় ৫ লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। এখনো মাঠে রয়েছে অসেক ফসল। টমেটো চাষী মো. আব্দুল মতিন বলেন, বন বেগুনের সাথে টমেটো চারা জোড়া লাগিয়ে বর্ষাকালে এই ফসলের চাষ এই এলাকায় শুরু হয় প্রায় ২০ বছর আগে। এই টমেটো চাষ করে অনেকের দিন বদলেছে। হবিগঞ্জ, কুলাউড়া, সিলেট, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানের পাইকাররা মাঠে এসে টমেটো নিয়ে যান। |
|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বনগাঁও গ্রামের টমেটো চাষী মনির মিয়া বলেন, এবার টমেটোর চাষ এবং দাম ভালো। টমেটো চাষ করে তার আর্থিক সচ্ছলতা এসেছে। তিনি জানান, এবছর চার কিয়ার জমিতে টমেটোর চাষ করেছেন। তাঁর খরচ হয়েছে সাড়ে চার লাখ টাকা। এরইমধ্যে সাড়ে তিন লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। আরও চার থেকে পাঁচ লাখ টাকার বিক্রি করতে পারবেন। চাষীরা জানান, এসব ক্ষেত থেকে অন্তত কোটি টাকার টমেটো বিক্রি হবে। তবে চাষীদের অভিযোগ এখানে কৃষি বিভাগের লোকজন আসেন না। শুধু ওষুধ কোম্পানির লোকজনই আসেন। এসব ক্ষেতে অস্থায়ী কর্মসংস্থান হয়েছে অনেকের। বিশেষ করে চা বাগানের অনেক বেকার নারী কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। |
|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার জেলা কার্যালয়সূত্র জানায়, এবছর ৭৩ হেক্টর জমিতে কলমকরে টমেটো চাষ হয়েছে এরমধ্যে কমলগঞ্জে ৫০ হেক্টর আর বাকিগুলো অন্যান্য উপজেলায়। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ৯৯০ মেট্রিক টন। প্রতি হেক্টরে প্রায় ২২ টন টমেটো উৎপাদিত হয়েছে। কলম করা চারা বিক্রি করেও অনেক চাষী লাভবান হয়েছেন। একজন কৃষক পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকার চারা বিক্রি করেছেন। জেলার মধ্যে কমলগঞ্জ ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলাতেই বেশি টমেটোর চাষ হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী বলেন, টমেটোর ফলন এবং দাম দুটোই ভালো। প্রথম দিকে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত খুচরা বিক্রি হয়েছে। আর এখন ৭০-৮০ টাকা টমেটোর কেজি। বারি-৪ ও ৮ জাতের এই টমেটোর একটি গাছে গড়ে ৬ থেকে ৭ কেজি ফলন পাওয়া যায়। কৃষকদের অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, চা-বাগানসহ প্রত্যন্ত এলাকায় আমাদের লোকজন কম যায়। তবে কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তাদের না পাওয়ার কথা না। কৃষকদেরও হয়তো যোগাযোগ কম। যোগাযোগ বাড়ানো হবে। |