মামুনূর রশীদ মহসিন।। অন্যদিকে, ইউপি সদস্য ওই সুফিয়া বেগম অন লাইন প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সন্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন চেয়ারম্যান তাকে চেয়ার থেকে লাতি মেরে ফেলে দেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন শনিবার দুপুরে ইউনিয়ন অফিসে বসে মাষ্টার রোলের নাম লিখছিলেন। এমন সময় চেয়ারম্যান মিলন বখত এসে তার কাছে জানতে চান তিনি কি করছেন। উত্তরে তিনি যখন বলেন যে মাষ্টার রোলের নাম লিখছেন। এ কথা শোনার সাথে সাথেই তাকে লাতি মেরে চেয়ার থেকে ফেলে দেন। এ সময় সামনে উপস্থিত ছিলেন একজন শিক্ষা অফিসার ও ইউপির অন্যান্য লোকজন। তখন ওখানে চাল বিতরণ হচ্ছিল। সেখানে গিয়ে চেয়ারম্যান জানতে চান কার চাল বিতরণ চলছে। তিনি যখন জানতে পারেন যে সুফিয়া বেগমের চাল বিতরণ হচ্ছে তখন সুফিয়া বেগমকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। ঘটনার খবর পেয়ে সুফিয়া বেগমের ছেলে আলমগীর ইউনিয়নে আসলে দুই পক্ষের মাঝে হাতাহাতি শুরু হয়। সুফিয়া বেগমের আরো অভিযোগ ইউনিয়নের চৌকিদার ছাদেক ও চেয়ারম্যানের প্রিয় ভাজন পরকিছ মিয়া তাহাকে মারধর করে তার গলা থেকে ৮আনা ওজনের প্রায় ২৫হাজার টাকা মূল্যের সোনার অলঙ্কার ও তার হাতব্যাগে রাখা আরো ৩হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। এদিকে এ ঘটনাকে নিয়ে রাজনগরের বিশিষ্ট কৃষক লীগ নেতা সমাজসেবী তরুণ ব্যক্তিত্ব মাহমুদুর রহমান একটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের গত ২৭মে প্রকাশিত সংবাদের সংযোগসূত্র আমাদের কাছে পাঠিয়েছেন। পাঠক স্বার্থে সে সংবাদের হুবহু আমরা নিম্নে পত্রস্ত করলাম। মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার মনসুরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের উপর সন্ত্রাসী হামলার অনুসন্ধান করতে গিয়ে যেন কেঁচো খুড়তে সাপ বেরনোর অবস্থা। ঘটনার নেপথ্য কারণ অনেক কিছু হলেও মূল কারণ নৈতিকতা ও আদর্শ। চেয়ারম্যান মিলন বখত আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তৃণমূলের নেতা। জাতির জনক ববঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর সংগঠন ছাত্র লীগ, যুব লীগের রাজনীতির মাধ্যমে সমগ্র জেলায় তাঁর পরিচিতি হয়েছে আদর্শে অবিচল আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপোষহীন সৎ আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে। স্পষ্টবাদী ব্যক্তিত্বের অধিকারী মিলন বখত সম্প্রতি বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনগর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। মেজাজী চরিত্রগুণে আলোচিত-সমালোচিত হলেও এলাকার জনগণের ন্যায় বিচার প্রতিষ্টায় তিনি অতুলনীয়। এলাকার মাস্তান, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, সরকারী দলের ও প্রশাসনের দুর্নীতিবাজরা তাঁর সততার ভয়ে তটস্থ থাকেন। বিগত ২৩ মে ২০২০ তারিখে সরকারের ঈদ উপহার হিসেবে ১০০ জন অসহায় পরিবার নির্বাচন করে নগদ সহায়তার আয়োজন করেন ইউনিয়ন পরিষদ। পরিষদের আয়োজনের সাথে আরও ১০০ পরিবারকে সমপরিমান বেসরকারি সহায়তার জন্য সংযুক্ত করে মোট ২০০ পরিবারের প্রতিনিনিধিকে পরিষদ প্রাঙ্গণে নিয়ে আসা হয় দুপুর ২:৩০ টায়। একইসময়ে সকল ওয়ার্ডের মেম্বারগণসহ বেসরকারি দাতাদের প্রতিনিনিধিরাও উপস্থিত থাকেন ইউনিয়ন পরিষদে। উপস্থিত সকলের সম্মুখে পরিষদের মহিলা মেম্বার সুফিয়া বেগমও তার দু’টো যুবক ছেলে-সহ তাহারলামুয়া এলাকার ৫০ – ৬০ জনের অধিক জনগণ নিয়ে পরিষদে প্রবেশ করেন এবং সহায়তা গ্রাহিতাদের নির্ধারীত ২০০ জনের তালিকার বাইরে আরও অধিক ৬৮ জনকে ত্রাণ সহায়তা প্রদানের জন্য চেয়ারম্যানের উপর চাপ প্রয়োগ করেন। তার এই বিশৃঙ্খল আব্দারের প্রকৃত কারণ চেয়ারম্যান মিলন বখত তাৎক্ষণিক বুঝে উঠতে পারেননি। চেয়ারম্যান তখন উল্লেখিত মহিলা সদস্যের নিকট জানতে চান যে, এই বিশৃঙ্খল আচরণের কারণ কি? পরিষদের সদস্যগণের বাছাইকৃত তালিকার বাইরে কাউকে ত্রাণ দেয়া কিভাবে সম্ভব? উভয়ের যুক্তি-তর্কের মাঝখানে মাহিলা মেম্বারের ছেলেরা চেয়ারম্যান মিলন বখতকে নাজেহাল করে আক্রমনে উদ্যত হলে উপস্থিত জনতা চেয়ারম্যানকে রক্ষা করেন। এবং এরূপ অপ্রত্যাশিত সন্ত্রাসী ঘটনায় জনতা বিক্ষোব্ধ হলে মহিলা মেম্বার তার ছেলেদেরসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী দলবল নিয়ে দ্রুত পরিষদ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন। যাবার সময়ে টেবিলের উপর রাখা ১০ হাজার টাকার বাণ্ডিলের ৪ বাণ্ডিল (৪০ হাজার টাকা) ও পরিষদের দু’টি চেক নিয়ে যায়। চেয়ারম্যান মিলন বখত ঘটনার প্রেক্ষিতে থানায় ফোন করলে জনৈক দারোগা সিপাইসহ এসে এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পেয়ে থানায় মামলা দিতে বলেন। বিকেল ৩:৩০ টার সময় চেয়ারম্যান থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে আসেন। কিন্তু তিনি বাসায় চলে আসার পর ওসি আব্দুল হাসিম চেয়ারম্যানকে ফোন করে জানান যে, উল্লেখিত মহিলা মেম্বার তাঁর বিরুদ্ধে থানায় মামলা নিয়ে এসেছেন এবং উপর মহলের নির্দেশে মামলাটি এফআইআর করতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁর দাখিলকৃত মামলা নথিভুক্ত করতে তিনিও(চেয়ারম্যান) যেন উপর মহলে তদবির করেন। অনুসদ্ধানে ঘটনার নেপথ্য অনেক কারণ বেরিয়ে আসছে। মহিলা মেম্বার সুফিয়া বেগমকে দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক ও চেয়ারম্যান মিলন বখতকে নাজেহাল করার এই ঘটনাটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত। এর পেছনে রয়েছে একসময়ের ছাত্রদল নেতা, জেলার উদীয়মান শিল্পপতি জনৈক রাজাকারপুত্র ও চেয়ারম্যান মিলন বখত এর রাজনৈতিক প্রতিদন্দী একটি একটি অশুভকর চক্রের কালো হাত। কোনটা সত্য? চেয়ারমেনের উপর আক্রমণ না সুফিয়া বেগমকে লাথি মারা! সুফিয়া বেগম দ্বারা ৪০হাজার টাকা নিয়ে যাওয়া না সুফিয়া বেগমের ২৫হাজার টাকার গলার সোনার হার ও নগদ ৩হাজার টাকা চুরি যাওয়া! না-কি সবগুলো অভিযোগই ভূঁয়া! মূল দ্বন্দ্ব রাজনীতিতে?এমন ঘটনার পেছনের ঘটনা কি ছিল জানতে গিয়ে আমাদের বিশেষ প্রতিনিধি স্থানীয় সূত্রের উল্লেখ করে লিখেন যে, চেয়ারম্যানের সাথে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের গভীর সখ্যতা থাকায় চেয়ারম্যান একটু বেশী বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তার এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কেউ সাহস পাচ্ছেনা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউপি সদস্য জানান নির্বাচনের পর থেকেই চেয়ারম্যান তাদের প্রতি খারাপ আচরণ করছেন। চেয়ারম্যান তাদেরকে কোনো বিষয়ে কথা বলতে দেননা। সরকারী-বেসরকারী ত্রাণের ক্ষেত্রেও তিনি স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে ইউনিয়ন পরিচালনা করেন। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান মিলন বখত অভিযোগটি অস্বীকার করে বলেন এলাকার এক আমেরিকা প্রবাসীর সাথে সুফিয়া বেগমের পূর্ব শত্রুতা ছিলো। এলাকার গন্যমান্য লোক একাধিকবার সমাধানে বসলে সে তাদের অসন্মান করে। আমিও অনেক চেষ্টা করেও সমাধান করতে পারিনি। এর পর থেকে ঐ মহিলা সদস্য আমার উপর ক্ষিপ্ত। এক প্রশ্নের উত্তরে চেয়ারম্যান বলেন অফিসে বসে আমি মাষ্টার রোলের নাম লিখছিলাম পাশে বসে ঐ মহিলাও লিখছিলো। হঠাৎ করে সে ও তার লোকজন আমার উপর চড়াও হয়। তখন উপস্থিত লোক মহিলাকে কিছু ধাক্কাধাক্কি করে আমাকে রক্ষা করে। রাজনগর থানার ইনচার্জ আবুল হাশেম জানান উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মনসুর নগর ইউপি চেয়ারম্যান মিলন বখত আমাকে ফোন করে বলেন একদল সন্ত্রাসী উনার উপর হামলা করে চেগ ও টাকা নিয়ে যাচ্ছে, সাথে সাথে সেখানে ফোর্স নিয়ে হাজির হই। গিয়ে জানতে পারি ইউপি মহিলা সদস্যকেই চেয়ারম্যানের লোকেরা মারধোর করেছে। এ ঘটনায় রাজনগর থানায় ইউপি মহিলা সদস্য সুফিয়া বেগম লিখিত অভিযোন দিয়েছেন। অন্যদিকে এ বিষয়ে রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা পাল বলেন বিষয়টি আমি অন্য মাধ্যমে শোনেছি। পরিষদের কেউ লিখিত বা মৌখিকভাবে জানালে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো। |