১৫জন খনি শ্রমিকের আটকে পড়ার ১৮দিন পর ভারতীয় এসব খনি শ্রমিকদের আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব, তাদের বেঁচে থাকার আশা একেবারেই ছেড়ে দিয়েছেন। এমনকি কোন উদ্ধার অভিযানের নতুন পদক্ষেপ নিলেও তাদেরকে জীবিত পাওয়ার আশা নেই। গত এক সোমবার তারা তাদের হতাশার কথা ব্যক্ত করেন। এ নিয়ে খবর করছে রয়টার। ২৬ বছর বয়স্ক উমর আলি যে কি-না খনিতে আটকে পড়াদের মধ্যে একজন, তার চাচা বলেন-“আমাদের বাচ্চার লাশ দিন, যাতে আমরা আমাদের মনেরমত করে তাকে কবরস্ত করতে পারি।”
এই খনিশ্রমিকগন গত ১৩ই ডিসেম্বর মেঘালয় রাজ্যের বেআইনী একটি খনিতে আটকে যায় যখন খনিতে নিকটস্ত নদীর পানি ঢুকে পড়ে।
শিশু-কিশোরসহ হাজার হাজার শ্রমিক এ পর্যন্ত মারা গিয়েছে “ইঁদুরের গর্ত” বলে তথাকথিত এইসব খনিতে কাজ করতে গিয়ে। এসব খনিতে ছোট পরিসরের রাস্তায় বাঁশের তৈরী মই দিয়ে উঠা নামা করতে হয় অনেকটা হামাগুঁড়ি দেয়ার মত করে। অথচ এসব খনিতে অত্যন্ত নিম্নমানের কয়লা পাওয়া যায়।
আজ থেকে পুরো ৪বছর আগে গত ২০১৪সালেই সরকার এই নমুনার বেআইনী কয়লা উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছিল কিন্তু কিছু কিছু এলাকায় এখনও জীবনের ঝুঁকিপূর্ণ এসব কাজ চলছে। ভয়াবহ এই দূর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া ২৪ বছর বয়সের সাহেবআলী বলেছে কম হলেও এখনও কেউ কেউ বের হয়ে আসার সম্ভাবনা আছে। সে বলেছে ১৭জন কয়লা আহরণকারী এ দূর্ঘটনায় আটকা পড়েছিল। যদিও সরকার বলেছে ১৫জনের আটকা পড়ার কথা। যখন দূর্ঘটনা ঘটে সে সময়, সরু খনিগুহার খুব একটা গভীরে না থাকায় সে এবং আরো ৪জন বেঁচে গিয়েছে বলে জানায় সাহেব আলী।
কয়লাখনি শ্রমিকদের জন্য ভারত বিশ্বের মাঝে সবচেয়ে ভয়ানক দেশ। সরকারী হিসেবেই এখানে গত ২০১৭সালে গড়ে প্রতি ৬দিনে একজন করে শ্রমিক মারা গিয়েছিল বলে রয়টার লিখেছে।
অপরদিকে সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীগন জানিয়েছে যে ভূগর্ভস্ত গুহায় উদ্ধারকারীরা মাত্র ৩টি হেলমেট ও দু’টি কুড়াল পেয়েছে। দেশের নৌসেনাদের কথা উল্লেখ করে কর্মকর্তাগন জানান গত রোববারে ১৫জন নৌসাঁতারু ক্যামেরাসহ হরেক রকমের যন্ত্রপাতি নিয়ে খনির ভেতরে যায় কিন্তু কোন মানুষের হদিস করতে পারেনি। সূত্র: যারির হোসেন, রয়টার