খায়রুলের মা-বাবাকে পুলিশ আটক করেছে
হারুনূর রশীদ: রাত ১১.২৬: সোমবার ৪ঠা জুলাই ২০১৬::
কার কথা জানিনা। তবে বহুমুখে শুনেছি, এখনও যে শুনি না তা নয়। “ইসলাম জিন্দা হুগা হর কারবালা কি বাদ!” তাইতো দেখা যায় খায়রুলরা প্রাণ দেয় অ-কাতরে প্রফুল্ল চিত্তে। নিব্রাশরা পথ হারিয়ে জীবন খুঁজে অন্ধকারের পৈশাচিক খুনোখুনীতে। খায়রুলরা নিজেরাই বুঝতে পারেনা তাদের আত্মাহুতি একশ্রেণীর প্রাণীকূলের নন্দনকানন তৈরী করে দিয়ে যায়। এরা ধর্মের মাথায় বসে নিজেদের এডেনের বাগান নির্মাণ করে ধর্মের নিজস্ব ব্যাখ্যার পথ ধরে খায়রুলদের রক্ত ঝরিয়ে। মহামতি নজরুলের কথাই তাই উচ্চারণ করতে ইচ্ছে হয়-“হায়রে ভজনালয়! তোমার শীর্ষে চড়িয়া ভন্ড গাহে স্বার্থের জয়।”
হায়রে ধর্ম! হায়রে শান্তি! ইদানিং তোমাকে কায়েম করতে গিয়ে যুবককে হতে হয় নরপিশাচ বর্বর জঙ্গি। জিম্মি করে কেটে কেটে খুন করতে হয় নিরপরাধ নিরীহ মানুষকে। কারণ এরা তোমাকে আত্মস্ত করেনা, পারেনা হৃদয়ঙ্গম করতে! তোমার অনাদি অনন্ত শান্তির মর্মবাণী এদের কর্নকুহরে পৌঁছে না। এরা ভাবে, কিছুই হবে না, খুন-খারাবী না হলে!
এমনি এক ধর্মান্ধ মন্ত্রে দীক্ষিত উজ্জীবিত খায়রুল আজ শহীদি দওরজায় হেসে হেসে প্রবেশ করেছে। খায়রুলের মাদ্রাসার সতীর্থরা নিশ্চয়ই তার এই অপমৃত্যুকে অমূল্য শহীদি দওরজায় পৌঁছার জন্য গোপনে হলেও মহান আল্লাহ’র কাছে দু’হাত তুলে তার পারলৌকিক শান্তি ও বেহেস্ত কামনা করেছে।
খায়রুল কি আগে জানতো তার এই অন্ধ ধর্ম চর্চ্চা তার তরে এমনি এক পাশবিক বলিদানের কর্মযজ্ঞ ঠিক করে রেখেছে? নিশ্চয়ই তা নয়। কিন্তু তার পরেও তাকে মরতে হয়েছে খুনী আখ্যা নিয়ে। আর খুনীইতো।
গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে নরবলি যজ্ঞে জেনেশুনে অংশ নেয়া এই খায়রুলের বাড়ী বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলার চোপনিগর ইউনিয়নের বৃ-কুষ্টিয়া গ্রামে। ইত্তেফাক সূত্রে জানা-বাবা দিনমজুর আবু হোসেন। ভাই-বোন ৩জনের মধ্যে খায়রুল ছিল বড়। খায়রুল বৃ-কুষ্টিয়া দারুল হাদিস সালাদিয়া কওমি মাদরাসায় পড়াশুনা করেন। পরে বিহিগ্রাম ডিইউ সেন্ট্রাল ফাজিল মাদরাসা থেকে দাখিল পাশ করেন। পুলিশ তার বাবা-মা’কে আটক করেছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। মা-বাবার প্রতি এইতো ছেলের প্রতিদান!