লন্ডন: সোমবার, ২৬শে অগ্রহায়ণ ১৪২৩।। আজ সোমবার ১২ই ডিসেম্বর কালজয়ী একটি গানের লেখক কলামিষ্ট আবদুল গাফফার চৌধুরীর জন্ম দিন। ১৯৩৪ সালের ১২ই ডিসেম্বর তিনি বরিশাল জেলার উলানিয়া গ্রামে (উলানিয়া চৌধুরী বাড়ী) জন্ম গ্রহন করেন। ৮ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়।
গাফ্ফার চৌধুরী বাল্যে লিখা-পড়া করেছেন মাদ্রাসায়। উলানিয়া জুনিয়র মাদ্রাসায় তিনি ৬ষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে পরে হাইস্কুলে যান। ১৯৫০ সালে সেই সময়ের মেট্রিক পাশ করে ঢাকা কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে ১৯৫৮ সালে বিএ পাশ করেন।
তার কাছ থেকেই জানা যায়, ১৯৫০ সালে তিনি সেই সময়কার দৈনিক ইনসাফ পত্রিকায় কাজ নিয়ে সাংবাদিক জীবনের শুরু করেন। সেই থেকে শুরু করে ১৯৭৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত দীর্ঘ ২৪ বছর পূর্বপাকিস্তান ও বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার সাথে সুনামের সাথে কাজ করেছেন। চুয়াত্তরের অক্টোবরে তিনি এই বিলেতে চলে আসেন। স্বাধীনতার আগে পূর্বপাকিস্তান আমলে তিনি দৈনিক আজাদ, মাসিক সওগাত, দৈনিক সংবাদ, দৈনিক ইত্তেফাক ও সাপ্তাহিক পূর্বদেশে সাংবাদিকতার বিভিন্ন দায়ীত্বশীল পদে কাজ করেন।
সাংবাদিকতা করতে গিয়েই তিনি “কংগ্রেস হিতৈষী” পত্রিকার সম্পাদক কংগ্রেস নেতা দূর্গামোহন সেন থেকে শুরু করে প্রখ্যাত লেখক শামসুদ্দীন আবুল কালাম, সওগাত সম্পাদক মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, দৈনিক আযাদের মালিক সম্পাদক মাওলানা আকরম খাঁ, ইত্তেফাকের মালিক সম্পাদক তফাজ্জুল হোসেন মাণিক মিয়া, ইংরেজী দৈনিক অবজারভারের মালিক সম্পাদক হামিদুল হক চৌধুরী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মত ব্যক্তিত্বের সান্নিধ্যে আসার সুযোগ লাভ করেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি কলকাতায় থেকে মুজিব নগর সরকারের মুখপত্র “সাপ্তাহিক জয়বাংলা”য় কাজ করেছেন।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তির সাথে মিলে তিনি সম্পাদক হয়ে প্রকাশ করেছিলেন “দৈনিক জনপদ” যা বেশীদিন স্থায়ী হয়নি।
বিলেতে আসার পর দীর্ঘদিন তাকে স্ত্রীর অসুস্থতা ও রুটি-রুজীর জন্য সাংবাদিকতা অঙ্গন থেকে দূরে থাকতে হয়। অনেক পরে ১৯৮৭ সালের এক সময় বেশ কিছু উদ্যোক্তা নিয়ে লন্ডনে প্রকাশ করেন “সাপ্তাহিক নতুন দিন” যা এখনও প্রকাশনা চালিয়ে যাচ্ছে তবে ভিন্ন মালিকানায়। এরপর ১৯৯০ সালে “নতুন দেশ” এবং ১৯৯১ সালে “পূর্বদেশ” নামে দু’টি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন কিন্তু এগুলো ব্যবসা সফল না হওয়ায় বন্ধ হয়ে যায়।
বলতে গেলে প্রায় ৬৬ বছরের লেখা-লেখি আর সাংবাদিকতার অনুশীলনের এক দূর্লভ অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ জনাব চৌধুরী এ পর্যন্ত বেশ কয়েকখানা পুস্তক রচনা করেছেন তার মধ্যে চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান, নাম না জানা ভোর, নীল যমুনা ও শেষ রজনীর চাঁদ উল্লেখযোগ্য।
সুপ্রিয় কলামিষ্ট গাফ্ফার চৌধুরী এ পর্যন্ত একুশে পদক ও ইউনেস্কো পুরস্কার সহ ৭টি পুরস্কারে অলংকৃত হয়েছেন। তিনি দীর্ঘায়ূ হন।
তথ্যসূত্র: তার সাথে যোগাযোগ ও একটি ওয়েব সাইট থেকে।)