এইবেলাডটকম: ভারতের জম্মু কাশ্মীর রাজ্যের রাজধানী শ্রীনগর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সামবাল শহরের ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে ঝিলাম নদী।
নদীর পাড়ে একটি শিবমন্দির। ওই মন্দিরটিতে বেশ কয়েক বছর ধরে ছিল না কোনো ভক্তের আনাগোনা। বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলার জের ধরে নব্বইয়ের দশকের দিকে পালিয়ে গিয়েছিলেন মন্দিরের পণ্ডিতরাও।
তবে স্থানীয় সময় শুক্রবারের দৃশ্য ছিল ভিন্ন। সেদিন ছিল কাশ্মীরি পণ্ডিতদের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান শিবরাত্রি। কিন্তু গ্রামে ছিলেন না কোনো পণ্ডিত।
এমন অবস্থায় পূজা আয়োজনের দায়িত্বে ছিল ওই গ্রামের মুসলিম বাসিন্দারা। তাদের মধ্যে যুবকরা পরিষ্কার করল অনেকদিন ধরে পড়ে থাকা মন্দির।
এরপর ইমতিয়াজ আহমেদ নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা শুরু করেন প্রার্থনা। পানি ঢালা হলো শিবলিঙ্গের ওপর। এ ছাড়া দেবতা শিবের উদ্দেশে ফল ও মিষ্টিও উৎসর্গ করা হয়।
এখানেই শেষ নয়। ওই শহরের মুসলিমরা এর পর প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়ালেন ওই মন্দিরের দরজায়। কেউ যেন শিবরাত্রির অনুষ্ঠান অংশগ্রহণে বাদ না পড়ে সে জন্য পণ্ডিতদের ফিরে আসার আহ্বান জানানো হয় ওই প্ল্যাকার্ডগুলোতে।
সংস্কৃতিকে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতেই ওই আয়োজন বলে জানান ইমতিয়াজ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এ কারণেই আমরা মন্দিরের ভেতরে প্রবেশ করি। সেটা পরিষ্কার করি।
পণ্ডিতদের মতো হয়তো পারিনি। তবে মুসলিম হিসেবে যতটুকু করা সম্ভব আমরা করেছি। আমরা আমাদের মতো করে সম্মান দিয়ে পূজা করেছি।’
মনজুর আহমেদ নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘তারা (পণ্ডিত) আমাদের শরীর ও আত্মারই অংশ, যা আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। আজ আমরা তাদের কাছে একটি বার্তা পাঠিয়েছি। অনুগ্রহ করে আপনারা উত্তর দিন। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি।’