মুক্তকথা প্রতিনিধি।। মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিশেষকরে সদর ও কুলাউড়া উপজেলায় গ্রেফতার আতঙ্কে ঘর-বাড়ি ছেড়েছেন ধানের শীষের কর্মীরা। নির্বাচনকে সামনে রেখে এমন জানা অজানা মামলায় নাজেহাল চায়ের রাজধানী পর্যটন জেলা ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা। কেবলমাত্র গ্রেফতার এড়াতে নিজ ঘরে নিশীযাপন না করে এক অজানা আতঙ্কে সময় কাটে অন্যত্র। এসব নেতা-কর্মীদের ধারাবাহিক গ্রেফতার হওয়াতে এখন এমন আতংক বিরাজ করছে জেলা জুড়ে।
বিএনপি ও ঐক্যফন্টের নেতাকর্মীদের অভিযোগ পুরানো মামলা ছাড়াও গায়েবী মামলা ও নতুন ভাবে মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়ে ঢালাও ভাবে তাদেরকে আটককরা হচ্ছে। তাই গ্রেফতার আতংক নিয়ে দিনে ভোটের মাঠে থাকলেও পুলিশি ধরপাকড় এড়াতে রাতে ঘর ছেড়ে অন্যত্র থাকছেন তারা। বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা ক্ষোভের সাথে বলেন আওয়ামীলীগ ও মহাজোটের নেতাকর্মীরা ঢালাও ভাবে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালালেও তাদের বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই। বরং উল্টো পুলিশ তাদের নানা ভাবে সহযোগিতা করছে।
তারা অভিযোগ করে বলেন পুলিশের কিছু অতিউৎসাহী কর্মকর্তাদের আচরনে শান্তিপ্রিয় এই এলাকা এখন আতংকের জনপদে পরিনত হতে চলেছে। প্রতিনিয়ত এমন ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্বেগ উৎকন্ঠার শেষ নেই। জেলা বিএনপির একাধিক নেতা বলেন গেল ৩-৪ দিন থেকে বিএনপি, ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী ও সর্মথকদের পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাদের এমন গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত থাকায় নেতা-কর্মীরা ভোটের মাঠে কাজ করতে পারছেন না। সরকারী দলের লোকজন অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ভাবে একের পর এক মামলা দিয়ে বিরুধী নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মাঠ ছাড়া করছেন।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান শনিবার সন্ধ্যায় জানান, পুলিশ নেতা-কর্মীদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে এখন দিন-দুপুরে তল্লাশি করছে। শুক্রবার রাত্রে জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি গাজী জাবেদ কে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিশেষ করে সদর উপজেলার মনুমূখ ও খলিলপুর ইউনিয়নে দিন-রাত তল্লাশী চালানো হচ্ছে।
মৌলভীবাজার ২ (কুলাউড়া) আসনে মহাজোটের নির্বাচনী অফিসে হামলা ও ভাঙচুরের একটি মামলায় ঐক্যফ্রন্টের ৫ জন নেতাকর্মীকে মঙ্গলবার রাতে কুলাউড়ার উত্তরবাজারস্থ আউটার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও গ্রেপ্তার আতঙ্কে রয়েছে শতাধিক নেতাকর্মী।
জানা গেছে, ১০ ডিসেম্বর থেকে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক এমপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ এর নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে নামে কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির দুই গ্রুপ। এরপর ১৭ ডিসেম্বর থেকে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে রাতে নেতাকর্মীর বাড়িতে হানা দিতে শুরু করে থানা পুলিশ। পুলিশি অভিযানে অনেক নেতাকর্মী নির্বাচনী প্রচারণা ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছেন।
ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির উপদেষ্টা ও উপজেলা বিএনপি (একাংশ) সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ এবং উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি ফয়েজ উদ্দিনের নামে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম লিখেছে যে এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা। তাদের অভিযোগ দলীয় প্রার্থীর পক্ষে তারা নির্বিঘ্নে প্রচারণা চালাতে পারছেন না।
ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির সহসভাপতি অ্যাড, আবেদ রাজার উদৃতি দিয়ে সংবাদমাধ্যম লিখেছে যে, নেতাকর্মীদের উপর যে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। তিনি তাদের মুক্তির দাবিও জানিয়েছেন।