1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
চায়ের ১৮০ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ উৎপাদন - মুক্তকথা
রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩০ পূর্বাহ্ন

চায়ের ১৮০ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ উৎপাদন

বিশেষ প্রতিনিধি
  • প্রকাশকাল : মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ৪৪১ পড়া হয়েছে

দেশে চায়ের ১৮০ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেকর্ড

উৎপাদন ১০কোটি ২৯লাখ কেজি

দেশে চা শিল্পের ১৮০ বছরের ইতিহাসে রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন হয়েছে এবার। ২০২৩ সালে দেশের ১৬৮টি চা-বাগান থেকে ১০ কোটি ২৯ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়। করোনাকালীন দূর্যোগ, প্রাকৃতিক দূর্যোগসহ সৃষ্ট বিভিন্ন পরিস্থিতি মোকাবেলা করে বাম্পার এই উৎপাদনে চা সংশ্লিষ্ট সবাই বিস্মিত।

গত চা মৌসুমে রেকর্ড ভঙ্গ করে চা উৎপন্ন হওয়ায় মহাখুশি চা সংশ্লিষ্টরা। এ অবস্থায় চা রপ্তানীর উপর জোর দেয়া অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছেন চা শিল্পে সংশ্লিষ্ট সকলেই। তবে তারা মনে করেন চায়ের সঠিক মূল্য নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবী।

বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদের চেয়ারম্যান কামরান তানভীরুল রহমান বলেন, আমরা অত্যন্ত খুশী এই কারণে যে, আমরা যারা চা শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট আমরা আমাদের কষ্টের ফল পাচ্ছি। তবে উৎপাদনের পাশাপাশি উৎপাদকরা যাতে চায়ের ভালো দাম পায় সেই বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, চাহিদার উদ্বৃত্ত চা রপ্তানি করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। চা রপ্তানি করতে হলে মান বাড়াতে হবে।

চা-বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে ১০ কোটি কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এবারই প্রথম লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিশাল সফলতা এসেছে। ২০২৩ সালে দেশের বাগানগুলো থেকে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ কোটি ২০ লাখ কেজি। সেই হিসেবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আরো ৯ লাখ কেজি বেশি চা উৎপাদন হয়েছে। ২০২১ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯ কোটি ৬৫ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়। ২০২২ সালে ১০ কোটি কেজি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও উৎপাদিত হয় ৯ কোটি ৩৮ লাখ ২৯ হাজার কেজি।

এব্যাপারে জনতে চাইলে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক ইসমাইল হোসেন বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, চা-বোর্ড, বাগান মালিক, কর্মকর্তা কর্মচারী এবং আমাদের চা শ্রমিকসহ চা সংশ্লিষ্ট সকলের সর্বাত্বক প্রচেষ্টায় এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে আমাদের চায়ের এমন সাফল্য। যাকে বলে বাম্পার উৎপাদন। বিশেষ করে করোনাকালীন দূর্যোগ, প্রাকৃতিক দূর্যোগসহ সৃষ্ট সমস্যা মোকাবেলা করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এ ছাড়াও চায়ের গুণগত মান বৃদ্ধি, বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এবং উন্নতমানের চা উৎপাদনে আমরা আপোষহীন।

তিনি আরও বলেন, জাতির সর্বশ্রেষ্ট সন্তান, বাংলাদেশের পথ প্রদর্শক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে যেভাবে দেশ এগিয়ে গিয়েছে, ঠিক সেভাবেই বঙ্গবন্ধুর মানবিক হাতের ছোঁয়ায় আজ চা শিল্প এগিয়ে যাচ্ছে। উনারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানবিক নেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও চা বোর্ডের সময়োপযোগী কর্মতৎপরতায় আজ চায়ের অভাবনীয় সাফল্য।

চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিয়নের পরিচালক ড. রফিকুল ইসলাম মনে করেন, সব মিলিয়ে এই ইতিবাচক ফল পাওয়ার পেছনে রয়েছে সুষম আবহাওয়া, সঠিক পরিকল্পনা, পুরোনো গাছ সরিয়ে নতুন চারা রোপণ। বাগানগুলোর আয়তন এরই মধ্যে আড়াই শতাংশ হারে বৃদ্ধি করার চেষ্টা চলছে।

দেশের চা শিল্পে এই সাফল্যের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা-বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম এনডিসি উৎফুল্ল হয়ে বলেন, দলগতভাবে কাজ করার ফল আমরা পেয়েছি। বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনা এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও চা বোর্ডের সঠিক পরিকল্পনা এবং এর সঠিক বাস্তবায়নের ফলেই চায়ের উৎপাদন বাড়তে শুরু করেছে। এবার সব রেকর্ড ভঙ্গ করে সর্বোচ্চ উৎপাদন সম্ভব হয়েছে বাগান মালিক, শ্রমিক, চা-বোর্ডের কর্মকর্তাদের সবার সমন্বিত চেষ্টার ফলে।

অদূর ভবিষ্যতে উৎপাদন আরও বাড়বে বলে আমার বিশ্বাস। এখানে চা বোর্ড যেটি করেছে, সঠিক পর্যবেক্ষণ, পরিদর্শন এবং সমতল অঞ্চলে বিশেষ প্রণোদনা দেয়া, সঠিক সময়ে সার প্রদান, বিনামূল্যে চারা বিতরণ, প্লাকিং এবং প্রুনিং মেশিন দেয়া।

চেয়ারম্যান বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বাগানগুলোতে পুরোনো চা-গাছ সরিয়ে নতুন গাছ লাগানোয় নজর দেওয়া হয়েছে। বাজারে অবৈধ পথে আসা চা যাতে ঢুকতে না পারে, বাগানমালিক ও শ্রমিকদের স্বার্থও যাতে সুরক্ষিত হয়, সে সব দিকেও খেয়াল রাখা হয়েছে। তিনি আরো জানান, সমতলে চা চাষের প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। বিনা মূল্যে চারা ও মেশিনারিজ বিতরণ করা হয়েছে। ফলে উত্তরাঞ্চল ও সমতলেও চা চাষের পরিমাণ বেড়েছে।

চা বোর্ড চেয়ারম্যান আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে চা রপ্তানী করা। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমর দুটি বিষয়ের প্রতি খুবই গুরুত্ব দিয়েছি। একটি বিষয় হলো চায়ের গুণগত মান উন্নয়ন এবং অপরটি উৎপাদন বৃদ্ধি করা। পরিমান আমরা বৃদ্ধি করতে পেরেছি কিন্তু গুণগত মান উন্নয়নে আমরা কিছুটা পিছিয়ে আছি। তবে আমরা শুরু করেছি। ইতোমধ্যে অনেক সাফল্য আমাদের রয়েছে। এ কারণে আমাদের রপ্তানি কিছুটা হলেও বেড়েছে। এর মধ্যে ১১ লক্ষাধীক কেজি চা আমরা রপ্তানী করেছি। যা গত ২/৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

২০১৭-১৮ সাল পর্যন্ত প্রতিবেশী ভারত, শ্রীলঙ্কা, কেনিয়াসহ অন্যান্য দেশের তুলনায় দেশের চা উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি তুলনামূলক কম ছিল। ইদানীং চা-বোর্ডের নানা ইতিবাচক পদক্ষেপ, অনুকূল আবহাওয়ার কারণে গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে চা উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে প্রবৃদ্ধি বাড়তে থাকে। একই সময়ে দেশের উত্তরাঞ্চলের সমতল এলাকার বাগানগুলোতেও চা উৎপাদন বাড়তে থাকে। আধুনিক সেচ ব্যবস্থা, শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ, চা বিপণনে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধিও উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

১৮৪৩ সালে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তীরে প্রথম চা তৈরি এবং পান করা হয়। বাণিজ্যিকভাবে প্রথম চা চাষ শুরু হয় ১৮৫৭ সালে সিলেটের মালনীছড়া চা বাগানে। সিলেট অঞ্চলের সুরমা নদী উপত্যকা পূর্ব বাংলার চা উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পায়। চা চাষ নিম্ন ত্রিপুরা (বর্তমান কুমিল্লা) এবং উত্তর বঙ্গের পঞ্চগড়েও শুরু হয়।

তবে ১৮৫৪ সালে সিলেটে মালনীছড়ায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চা চাষের জন্য বাগান প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯০৫ সালে প্রকাশিত আসাম ডিস্ট্রিক্ট গেজেটিয়ারস, সিলেট-এ বলা হয়, সিলেটের মালনীছড়ায় প্রথম বাণিজ্যিকভাবে চা চাষ শুরু হয় ১৮৫৭ সালে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) হিসাবে, বিশ্বে ৪৭টি দেশে চা উৎপাদিত হয়। লন্ডনভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল টি কমিটির সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, চা উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে অষ্টম। এক দশক আগে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল দশম।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT