চা গাছ ছেঁটে ফেলার এই পদ্ধতিকে বলা হয় প্রুনিং। তবে স্থানীয় ভাষায় বলা হয় ছাঁটাই। মৌলভীবাজারের চা বাগানগুলোতে এখন চলছে প্রুনিং এর কাজ। এসময় বাগানের সেকশন জুড়ে চা গাছগুলোর মাথা কেটে ছেঁটে ফেলা হয়। প্রাকৃতিক কারণে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে চা বাগানের উৎপাদন প্রক্রিয়া বন্ধ থাকে। কমলগঞ্জের ফুলবাড়ি চা বাগান ও চাম্পারা চা বাগানের সেকশনগুলোতে দেখা গেলো নতুন পদ্ধতির ছাঁটাই। টিলা অফিসের আওতাধীন নারী-পুরুষ চা শ্রমিকরা প্রুনিং এর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। পুরো চা গাছ ছাঁটাই না করে প্রতিটি চা গাছে একটি করে ডাল রেখে দেওয়া হচ্ছে।
প্রকৃতির এ সহজাত নিয়মে এসময়টিতে চা গাছের শাখায় শাখায় শুভ্র ফুল আসে। গাছে ফুল আসার কারণে চা পাতার উৎপাদন কমে যায়। বছরের এসময়টি চা গাছের মাথা প্রায় আড়াই ফুট উচ্চতায় ছেঁটে রং লাগিয়ে পলিথিন দিয়ে মাথা বেধে দেয়া হয়। এরপর ফাঙ্গাস থেকে চা গাছ রক্ষায় শৈলচূন ছিটিয়ে দেয়া হয়।
প্রুনিং করার পর চা বাগানের চিরাচরিত সবুজের প্রকৃতি ধূসর বর্ণ ধারণ করে। এরপর বৃষ্টির আগে ভাগে বাগানে জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। এতে করে বর্ষার শুরুতে চা গাছগুলো নতুন পত্র পল্লবীতে ছেয়ে যায়। আবার চেনা সবুজ প্রকৃতির রূপ ধারণ করে। এই চিরাচরিত নিয়মের মধ্যে দিয়ে চা বাগানগুলোতে আরো এক নতুন বছরের উৎপাদনের পথে যাত্রা শুরু হয়।
প্রুনিং রয়েছে নানা ধরনের যেমন- কলার প্রুনিং(গলাকাটা ছাঁটাই), মিডিয়াম প্রুনিং(মধ্যম ছাঁটাই), লাইট প্রুনিং(হালকা ছাঁটাই), লো প্রুনিং(নিচু ছাঁটাই), ক্লিন প্রুনিং(পরিষ্কার ছাঁটাই)। গাছের বয়স, মাটির উর্বরতা প্রভৃতি দিক বিবেচনা করে প্রতিটি সেকশনের জন্য আলাদা আলাদা প্রুনিং নির্বাচন করা হয় বলে জানা যায়।
চায়ের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে এমন পদ্ধতি দেশের ১৬৭টি চা বাগানের প্রায় সবগুলোতেই প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। প্রুনিং করা হয় কয়েকটি পদ্ধতিতে। এর মধ্যে চা গাছের বয়স হিসাব করে চা গাছের মাথা ছাঁটাই করা হয়ে থাকে। এছাড়া চা পাতা চয়নে সুবিধার জন্য একজন মানুষের কোমর উচ্চতায় ছাঁটাই করা হয়ে থাকে। আবার কলম করার কাজেও প্রুনিং করতে হয়।
কমলগঞ্জের চাম্পারা চা বাগানের সহকারি ম্যানেজার রাহেল রানা বলেন, ‘চা উৎপাদন বৃদ্ধি, চা গাছকে পাতা চয়নকারির সুবিধারতে উচু যায়গাতে রাখা এবং রোগ জীবানু আক্রমন কমনোর জন্য প্রুনিং একটি অত্যাবশকীয় কাজ। এজন্য প্রয়োজনীয় সেচের ব্যবস্থা, মাটিতে যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্য উপাদান প্রভৃতি বিষয়গুলো প্রুনিং পরবর্তী সময়ে নজরে রাখতে হয় বলে জানান তিনি।’
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের সোনালী ব্যাংক শমশেরনগর শাখায় আনুষ্ঠানিকভাবে বকেয়া কৃষি ঋণ আদায় ও নতুন করে ঋণ বিতরণ করা হয়। বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় সোনালী ব্যাংক শমশেরনগর শাখায় বকেয়া কৃষি ঋণ আদায় ও নতুন কৃষি ঋণ বিতরণ করা হয়।
সোনালী ব্যাংক শমশেরনগর শাখার ব্যবস্থাপক সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার রিপন মজুমদারের সভাপতিত্বে বকেয়া ঋণ আদায় ও নতুন ঋণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সোনালী ব্যাংক সিলেট বিভাগীয় জেনারেল ম্যানেজার মো. জামান মোল্লা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সোনালী ব্যাংক মৌলভীবাজার আ লিক অফিসের জেনারেল ম্যানেজার দুলন চক্রবর্তী, সোনালী ব্যাংক মৌলভীবাজার আ লিক অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মো. ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া, সোনালী ব্যাংক সিলেট অ রের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মো. বদরুল আলম।
আলোচনা পর্বে সোনালী ব্যাংক উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা বলেন, সব সময় কম শোধে সোনালী ব্যাংক কৃষকদের ঋণ প্রদান করছে। কৃষকরা এ ঋণ গ্রহন করে সময়মত ঋণ পরিশোধ করলে কৃসকন আবার নতুন করে ঋণ গ্রহন করতে পারছেন। কৃষকরা ঋণ গ্রহন করে দেশের কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে সমৃদ্ধির চাকাকে সচল রাখছেন বলে বক্তারা বলেন। এমনিভাবে গত ২০১১ সালে কৃষি ঋণ গ্রহন করে পর্যায়ক্রমে আজ বকেয়া ঋণ আদায় হয়েছে ৩ লাখ ১০ হাজার ৫৭০ টাকা। আবার আজ নতুন করে নারী পুরুষ মিলিয়ে ১২জন কৃষককে মোট ৬ লাখ ৫৩ হাজার টাকা কৃষি ঋণ দেওয়া হয়েছে।