ইংরেজরা বলে ‘ফ্লাওয়ার’। এই ফুল চেনেনা এমন মানুষ দুনিয়াতে আছে বলে মনে হয় না। পাগলও মনে হয় ফুল চেনে ও বুঝে। ফুলের এমন বাহার আর মানুষের এতো প্রিয়, সেই আদিকাল থেকেই। এ পৃথিবীতে মানুষের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু এই ফুল, তার জন্মলগ্নে কেমন ছিল আর দুনিয়ার লক্ষ লক্ষ বছর পাড়ি দিয়ে কিভাবে বিচিত্র রংয়ে ও নমুনায় বিকশিত হলো তার কিছুটা সুরাহা করেছেন বিজ্ঞানীগন।
আজ আমরা যাকে পুষ্প বলে অভিহিত করি সেই পুষ্পের জন্মের সূচনা প্রায় ১৪ কোটী বছর আগে এ পৃথিবীতে। তার পর বিবর্তনের বিভিন্ন ধারায় নতুন নতুন রূপ ও বর্ণে বিকশিত হয়েছে।
আমরা কেউই জানিনা, আদিতে জন্মলগ্নে ফুল দেখতে কেমন ছিল। তবে আধুনিক বিজ্ঞান ও কম্পিউটারের অনুকরণীয়ক্রম বিদ্যার গুণে এখন আমরা একটা ধারণা পেয়েছি যে জন্মলগ্নে ফুল কেমন ছিল। আর আশ্চর্য্যজনকভাবে জন্মলগ্নে ফুল, আধুনিক সময়ের জঙ্গলে বা বাগানে যে ফুল দেখি অবিকল সে ফুলের মতই ছিল!
আন্তর্জাতিক এক দল বিজ্ঞানী, ডিএনএ সহ ফুলের বিকাশ ধারা বুঝার জন্য যা যা করণীয় সবই করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে পর্যায়ক্রমে অনুকরণীয়ক্রম পদ্বতির মাধ্যমে আদি রূপের দিকে গিয়ে পাওয়া গেছে তত্ত্বগতভাবে যাকে বলা যায় এক ও অভিন্ন এক রূপ। আর তা’তে বিজ্ঞানীরাও বিস্ময়ে হতবাক হয়েছেন।
কম্পিউটারের অনুকরণীয়ক্রম পদ্বতির পরীক্ষায় নাম না জানা সেই ফুলে পুরুষ ও নারীগুণ উভয়ই একত্রে ছিল বলেই বিজ্ঞানীদের ধারণা।
শুধু কি তাই! সেই আদিতে জন্মের সূচনায়ই তিন পাতার পাপড়ি মধ্যে সুন্দর সুবিন্নস্ত সাজানো পত্রমূলাবর্তে দু’রঙ্গা কুঁড়ি। ফুল নিয়ে পরীক্ষার এই ফলাফল, ফুলের অনুক্রমিক বিকাশধারা অতীতে যা চিন্তা করা হতো এবং পড়ানো হতো, হুবহু অবিকল সেই আগের গবেষনার ফলাফলের মতই। এক কথায়, নব্য এই গবেষণার আগে ফুল নিয়ে বিজ্ঞানীগন যা ভাবতেন পরীক্ষার পর হুবহু তাই পাওয়া গেছে। নতুন এই গবেষণার সমন্বয়ক জোয়ের্গ স্কোয়েনেনবার্গার এমন কথাই বলেছেন এবং গবেষণার এই ফলাফল গত মঙ্গলবার ১ আগষ্ট বিজ্ঞান সাময়িকী “নেচার কমুনিকেশনস” এ প্রকাশিত হয়।
এখনও ফুলের ক্রমবিকাশধারা নিয়ে অনেক কিছুই মানুষের অজানা রয়ে আছে। যেমন কিভাবে? পুরো বন্য অবস্থায় থেকেও এমন বিভিন্নরূপী হতে পারলো? ফুলের ফসিলের গবেষণার এখনও শেষ হয়নি। হয়তো সেই গবেষণায় ফুলের এ দীর্ঘসূত্রি রহস্যের উন্মোচন হতে পারে। বিজ্ঞানীগন অবশ্য ফুল গবেষণার অগ্রগতিতে আশাবাদি। ‘পেরিস সোদ’ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ফুল গবেষণার মূল ব্যক্তিত্ব প্রফেসর হর্বে সকোয়েত বলেন, “আমি বিস্ময়ে চমকাইয়া উঠবো না যতক্ষন পর্যন্ত না আমি বুঝতে পারবো যে ফলাফলটা একটু যুক্তিমত ভাল কিছু।” সূত্র: এটলাসঅবসকোরা। অনুবাদ- হারুনূর রশীদ