গত ১২মে ২০২৩ইং তারিখে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের(বাংলাদেশ) দপ্তর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে, কর্ণেল খন্দকার নাজমুল হুদার কন্যা নাহিদ ইজহার খান এমপি কর্তৃক গত ১০ মে দায়েরকৃত এক মামলায় শহীদ কর্ণেল তাহেরের নাম যুক্তকরার বিষয়ে জাসদের বক্তব্য শিরোণামে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন। আমরা তার হুবহু এখানে তুলে দিলাম। -সম্পাদক
-জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি আজ এক বিবৃতিতে কর্ণেল খন্দকার নামজুল হুদার কন্যা নাহিদ ইজহার খান এমপি কর্তৃক গত ১০ মে বুধবার রাতে শেরেবাংলা নগর থানায় ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর তার পিতা কর্ণেল খন্দকার নাজমুল হুদা, কর্ণেল এটিএম হায়দার ও ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করাকে স্বগত জানিয় বলেছেন, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যা, ৩ নভেম্বর জেলখানায় চার জাতীয় নেতা হত্যা, ৭ নভেম্বর হুদা-হায়দার-খালেদ হত্যাকাণ্ড, ৭ নভেম্বর পরবর্তীতে সশস্ত্র বাহিনীর অভ্যন্তরে উশৃংখল অফিসারদের দ্বারা সংঘটিত সকল হত্যা-খুন-গুমের ঘটনার তদন্ত ও বিচার হওয়া জরুরী। তারা বলেন, কর্ণেল খন্দকার নাজমুল হুদার মেয়ে নাহিদ ইজহার খান এমপি যে মামলা দায়ের করেছেন, সে মামলায় তার পিতা সহ তিনজন অফিসারের হত্যাকারী হিসাবে মেজর আব্দুল জলিল, মেজর আসাদ উজ্জামান, কর্ণেল সিরাজ, মেজর মুক্তাদিরের নাম উল্লেখ করেছেন। উল্লেখিত চারজনই অফিসার, তারা জেসিও বা এনসিও নন। তারা কেউই তৎকালে সেনাবাহিনী থেকে অবসর প্রাপ্ত কর্ণেল তাহেরের অধীনস্থ কোন কমাণ্ডে ছিল না।
জনাব ইনু ও শিরীণ আখতার বলেন, ৭ নভেম্বর ছিল সশস্ত্র বাহিনীর উশৃংখল অফিসারদের বিশৃংখল উন্মত্ততার বিরুদ্ধে সিপাহীদের রক্তপাতহীন, মানবিক ও সুশৃংখল প্রতিবাদ।
জাসদ নেতৃবৃন্দ বলেন, সেনাবাহিনীর আলোচ্য টু ফিল্ড আর্টিলারি কখনোই কর্ণেল তাহেরের নেতৃত্বে, কর্তৃত্বে বা দখলে ছিলো না। সিপাহীগন বিদ্রোহ করেন ৬ নভেম্বর দিবাগত রাতে অর্থাৎ ৭ নভেম্বর প্রথম প্রহরে রাত একটায়। বিদ্রোহ সংগঠিত করার পর বিদ্রোহী সিপাহীগন কর্ণেল তাহেরকে দূর্গবাড়ীতে(ক্যান্টনমেন্টে) টু ফিল্ড আর্টিলারি হেডকোয়ার্টারে নিয়ে যান। কর্ণেল তাহের সেখানে রাত ৩:৩০টা পর্যন্ত অবস্থান করেন এবং বন্দিদশা থেকে মুক্ত জিয়াকে পরদিন সকালে শহীদ মিনারে গিয়ে বিদ্রোহী সিপাহীদের পক্ষে অবস্থান নেয়ার ঘোষণা দেয়ার আহ্বান জানিয়ে ক্যান্টনমেন্ট ত্যাগ করে এলিফ্যান্ট রোডে নিজ বাসভবনে চলে আসেন। ৭ নভেম্বর সকালে যখন হুদা-হায়দার-খালেদকে হত্যা করা হয়, টু ফিল্ড আর্টিলারি তখন জিয়া ও মীর শওকতের নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বে তাদেরই অনুসারিদের দখলে ছিল।
জাসদ নেতৃবৃন্দ বলেন, মামলায় যে কয়জন অফিসারের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তারা সবাই অফিসার ছিলো; তারা কেউই এনসিও বা জেসিও ছিলো না। তারা কেউই তৎকালে সেনাবাহিনী থেকে অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল তাহেরের কমাণ্ডে ছিলো না। তারা কর্ণেল তাহের বা জাসদের সাথেও যুক্ত ছিল না। তারা সকলেই প্রকাশ্যে জিয়ার একান্ত অনুসারী ছিলো। এসব তথ্য ও সত্য উদ্ঘাটিত, উন্মোচিত, প্রকাশিত হবার পরও এ মামলায় কর্ণেল তাহেরকে হুকুমের আসামী হিসাবে উল্লেখ করা বোকামি। কর্ণেল তাহেরের নাম মামলায় যুক্ত করার ফলে প্রকৃত ঘটনা, তথ্য, সত্য আড়াল হবে; প্রকৃত খুনীরা সুবিধা পাবে।
জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যা, ৩ নভেম্বর জেলখানায় চার জাতীয় নেতা হত্যা, ৭ নভেম্বর হুদা-খালেদ মোশাররফ-হায়দার হত্যা, ৭ নভেম্বর পরবর্তীতে সশস্ত্র বাহিনীর অভ্যন্তরে উশৃংখল অফিসারদের দ্বারা সংগঠিত সকল হত্যা-খুন-গুমের ঘটনার প্রকৃত তথ্য জাতির সামনে উন্মোচন করার জন্য জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠন ও স্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান। তারা বলেন, তারা সংসদ সদস্য হিসাবে জাতীয় সংসদেও এ দাবি উত্থাপন করেছেন।