লন্ডন: বুধবার, ৫ম পৌষ ১৪২৩।। সত্যি কি চীনদেশ আমেরিকাকে ডিঙ্গিয়ে বৃহৎ শক্তিধর রাষ্ট্র হতে পারবে?
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র হতে পারে বৃহৎ শক্তিধর রাষ্ট্র তবে এটাই ঠিক যে দেশটি ফুল দিয়ে সাজানো বিছানা নয়। আমেরিকার শিক্ষার মান অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় নিম্নমানের। এরপর আমেরিকা বিশ্বের সেরা কয়েদখানা। দুনিয়ার কোন দেশ তার এতো নাগরীককে কয়েদ করে রাখেনা। আমেরিকায় প্রতি ৮০০ জনে ৭৬০ই কয়েদী।
গত ৫০ বছর যাবৎ আমেরিকার সাধারণ মানুষের জীবনমান নেমেই চলেছে। জাতিসংঘের একটি সংস্থা জীবনমানের এই “হিউমেন ডেভেলাপমেন্ট ইন্ডেক্স”(এইচডিআই) মাত্রা জরিপে রাখে। তাদের জরিপে আমেরিকা উন্নত জীবনযাপন মানের বেলায় ৮ম দেশ। মাত্র হংকং আর সিঙ্গাপুরের উপরে।
অত্যন্ত যুক্তিসংগত কারণেই ১.৪ বিলিয়ন মানুষের দেশ চীন যারা এই কয়েক দশক আগেও গরীব ছিল, তারা কখনই আশা করেনা হঠাৎ করে ওই স্তরে পৌছে যাবে। দূর্ভাগ্যবশতঃ দারীদ্রতা আমেরিকায় বেড়েই চলেছে। শতকরা ৩০ ভাগ শিশু আমেরিকায় দারিদ্রতার মধ্যে বসবাস করে আসছে, যখন চীনাদের দারীদ্রতার হার মাত্র ১০ভাগ এবং প্রতি বছর তারা ১০লাখ মানুষকে দারীদ্রসীমার বাইরে নিয়ে আসতে সক্ষম হচ্ছে। এই জীবনমানের বিষয়টি একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ জরিপ বিষয় আর চীনারা এ ক্ষেত্রে মার্কিনীদের ছাড়িয়ে গেছে বেশ আগেই।
বৈজ্ঞানিক চর্চ্চায় আমেরিকার তালিকায় চীনা দ্বিতীয় উত্তম দেশ। বিজ্ঞান চর্চ্চার কাজে আমেরিকার পরে আর জার্মানীর আগেই চীনাদের স্থান। গবেষণা ও উন্নয়ন ক্ষেত্রেও চীন দ্বিতীয় বৃহত্তম খরচকারী দেশ।
সবেমাত্র চীনারা ৭ম বারের মত বিজয়ী হলো এ বছরও দুনিয়ার সেরা দ্রুতচলা কম্পুটার নির্মাতা দেশ হিসেবে। আমেরিকান কৃতকৌশল ছাড়া কেবলমাত্র চীনাদের নির্মিত ‘প্রসেসর’ ব্যবহার করে আমেরিকারটার চেয়ে ৬গুন বেশী দ্রুতচলা কম্পিউটার নির্মাণ করেছে চীন। সম্বভতঃ চীনারা কারিগরী কৌশলেও এগিয়ে যাওয়ার পথে রয়েছে।
অবশ্য, ভবিষ্যৎ-এ কি রয়েছে কেউ ই জানে না। উভয় দেশই খুব শক্তভাবে একে অপরের সাথে ব্যবসায় জড়িত রয়েছে এবং উভয় দেশই এই সুন্দর সম্পর্ক থেকে লাভবান হচ্ছে।
সবশেষ বলতে হয় এটা কি কোন বিষয় হতে পারে? দুনিয়ার সকল খ্যাতিমান বিশ্বশক্তিধর রাষ্ট্রের কেউই আজ নেই। সকল শক্তিই একসময় শেষ প্রান্তে এসে পৌছায়। রোমানরা একসময়ের জগদ্বিখ্যাত ছিল। মোগল, অটোমান এবং বৃটিশগন সকলেই এক একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত দুনিয়া শাসন করেছেন। কিন্তু সময়ে সময়ে সব কিছুই বদলায়। (কৌড়া ডাইজেষ্ট থেকে অনুদিত। অনুবাদক-হারুনূর রশীদ।)(HDI=হিউমেন ডেভেলাপমেন্ট ইন্ডেক্স, RD=রিসার্স এন্ড ডেভেলাপমেন্ট)