লন্ডন: রোববার, ২ বৈশাখ ১৪২৪, ১৬ এপ্রিল, ২০১৭ : তুরস্কে আজ রোববার গণভোট হয়েছে। তার ফল যদি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান প্রস্তাবিত সাংবিধানিক পরিবর্তনের পক্ষে যায়, তবে তুরস্কের শাসনপদ্ধতিতে এক মৌলিক পরিবর্তন ঘটে যাবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। মোট ১ লাখ ৬৭ হাজার ভোট কেন্দ্রে প্রায় ৫ কোটি ৫০ লাখ ভোটার ভোট দিচ্ছেন। আজ রোববার সন্ধ্যায় ফলাফল ঘোষণা করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা গেছে যে ৯০ভাগ বেলট গোনা হয়েছে এবং এই ৯০ ভাগের শতকরা ৫২.৭ ভাগ পেয়েছেন “হ্যাঁ” ভোট অর্থাৎ এরদোগান সরকারের পক্ষে এবং “না” ভোট পেয়েছে ৪৭.৩ ভাগ। এই ফলাফলের ফলে আগামী ২০২৯ সাল অবদি এরদোগানই ক্ষমতায় থাকবেন বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।
এই গণভোটে প্রেসিডেন্ট এরদোগানের ক্ষমতা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বিরোধীরা এটা ঠেকানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে পার্লামেন্টে বিতর্ক চলাকালে উভয়পক্ষের এমপিদের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে।
এই সাংবিধানিক পরিবর্তনে তুরস্কের পার্লামেন্টারি পদ্ধতি বদলে প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির সরকার প্রবর্তনের কথা আছে। প্রেসিডেন্ট হবেন নির্বাহী প্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধান। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের সাথেও তার সম্পর্ক বজায় থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর ভুমিকা বিলুপ্ত করে দুই বা তিন জন ভাইস প্রসিডেন্টের পদ তৈরি করা হবে।
প্রেসিডেন্ট হাতে পাবেন নতুন ক্ষমতা। তিনি মন্ত্রীদের নিয়োগ দেবেন, বাজেট তৈরি করবেন, সিনিয়র বিচারপতিদের অধিকাংশকে তিনিই নিয়োগ দেবেন। এ ছাড়া তিনি যে কোন সময়ে ডিক্রি জারি করে কিছু বিষয়ে আইনও করতে পারবেন।
প্রস্তাবিত সাংবিধানিক পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট একাই জরুরি অবস্থা জারি করতে পারবেন, পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে পারবেন। নতুন এই ব্যবস্থায় পার্লামেন্ট আর মন্ত্রীদের ব্যাপারে তদন্ত করতে পারবে না। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠদের ভোটে এমপিরা প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন। প্রেসিডেন্টের বিচারের জন্য দুই-তৃতীয়াংশ এমপির সমর্থন লাগবে।
এমপিদের সংখ্যা ৫৫০ থেকে বাড়িয়ে ৬০০ করা হবে। প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন একই দিনে হবে। একজন প্রেসিডেন্ট দু’মেয়াদের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। তবে এরদোগানের সমালোচকরা বলছেন, এতে স্বৈরশাসন কায়েম হবে ও গণতন্ত্রের মৃত্যুঘন্টা বাজবে।
আজ গণভোটের সময় গুলিতে ৩জন মারা গিয়েছেন বলে “বিবিসি”র খবর।