মুক্তকথা সংবাদকক্ষ।। যুক্তরাজ্য সরকার আশঙ্কাজনক বিশৃঙ্খলায়। দেশ দূর্লঙ্ঘনীয় সঙ্কটে! এ অবস্থা কখনও কাম্য নয়। এই লেজে-গোবরে অবস্থায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তেরেশা মে ঘুড়ির নাটাই যে ভাবে টানছেন, যেকোন মূহুর্তে তা ফশকে যেতে পারে। এতোসবকিছু বুঝতে পারার পরও তিনি তার ইচ্ছের উপর কামড় খেয়ে বসে আছেন। তিনি কোন সমাধান দিতে পারছেন না আবার ছাড়তেও চাইছেন না। এ নিয়ে সম্ভবতঃ ৩ দফা সংসদে হারলেন। তার নিজের দলের বহু সাংসদগনই তাকে ভোট দেয়নি। তার এমন চাণক্য নীতিতে আপাততঃ তিনি সামলে নিলেন ঠিকই কিন্তু এর পর! ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার বিষয়ে তার দেয়া ব্যবস্থাপত্র সংসদ মানেনি। শ্রমিকদলতো তার সরকারের উপর অনাস্থা জানিয়ে দিয়েছে। মাত্র ১৯ ভোটের ব্যবধানে এই অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটে টিকে গেছেন তিনি। ৩২৫জন সাংসদের মাঝে ৩০৬জন তার প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবারে বিশাল ২৩০ভোটের ব্যবধানে তার সেই প্রখ্যাত ব্রেক্সিট ব্যবস্থাপত্র প্রত্যাখ্যাত হয় সংসদে। ৪৩২জন সাংসদ এ ভোটে অংশ নিয়েছিলেন। তেরেশা মে ২০২ভোট পেয়ে নিদারুণভাবে পরাজিত হয়েছিলেন। কিন্তু অনেকটা তৃতীয়বিশ্বের দেশের মত তিনি কামড় খেয়ে দাড়িয়ে আছেন।
২০১৬ সালের গণভোটে ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসার পক্ষে রায় আসে। সে হিসেবে আসন্ন মার্চের মধ্যে ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে আসার কথা। এই বেরিয়ে আসার পর ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের সাথে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের রূপ কি হবে সে বিষয়ে ইউনিয়ন নেতৃবর্গের সাথে তেরেশা মে’র যে চুক্তি হয়েছিল সেখানে কিছু শর্ত দেয়া ছিল। এসব বিষয় নিয়েই আজ ১৬ই জানুয়ারী সংসদের ভোটে প্রথমে তিনি হেরে গেলে শ্রমিকদল সাথে সাথে তার সরকারের উপর অনাস্থা প্রকাশ করে। অনাস্থার বিষয়ে সংসদে তিনি মাত্র ১৯ভোটে টিকে গেছেন এ দফায়।
এতোকিছুর পরও তিনি আজ বলেছেন যে তিনি ব্রেক্সিটের বিষয়ে কোন একটি সমঝোতায় আসতে অন্য দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করবেন। তার রাজনীতির এখানেই শেষ নয়। এতোবড় রাজনৈতিক ধাক্কা খাওয়ার পরও তিনি বলেছেন গণভোটের মতামতানুযায়ী ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার যে প্রতিশ্রুতি তিনি সাধারণ মানুষকে দিয়েছিলেন সে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে তিনি কাজ করে যাবেন ও করছেন। স্বভাবতঃই তার কাছে জানতে ইচ্ছে হয় এতোদিন কেনো তিনি সকলকে নিয়ে আলোচনার চিন্তায় গেলেন না। কোন মানুষদের স্বার্থে তিনি একা একা পথ হাটলেন। তার এই সময়ক্ষেপনের কারণে দেশের আভ্যন্তরীন ব্যবস্থায়, বিশেষ করে দ্রব্যমূল্যের লাগাম যে ছিঁড়ে গেছে তা কি তিনি বুঝতে পেরেছেন? এই দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির কারণে ধনবানদের কিছু যায় আসে না। সমস্যাগ্রস্থ হয়েছে মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্ত মানুষজন। এরাই হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ। এ ক্ষতির মাসুল কি প্রধানমন্ত্রী দেবেন?
শ্রমিক দলের বিরুধী নেতা জেরেমী করবিন বলেছেন সকল আলোচনার আগে তার সম্পাদিত ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার চুক্তি বাতিল করতে হবে। অন্য দু’টি বিরোধী দল করবীনের অনাস্থা প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছে। অবশ্য ওয়েস্টমিনস্টারের স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির এমপি তেরেশা মে’র পক্ষে কথা বলেছেন। হ্যা-হুতোশ্মী! রাজনীতির এ অস্থিরতায় দেশে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের দাম তৃতীয় দুনিয়ার দেশগুলোর মত বেড়ে গেছে। মানুষ অস্বস্থিতে ভোগছে। লন্ডনের এমনকোন গলি নেই যেখানে দু’একজন গৃহহীন ঘুমিয়ে থাকে না। দেশ গোল্লায় যাক, ডানে ডানে গলাগলি ভাব কি ছাড়া যায়!