এগুলো কিসের ইংগিত?
মুক্তকথা: শুক্রবার, ৪ঠা নভেম্বর ২০১৬।। সপ্তাহ শেষ হতে না হতেই আবারও নাসির নগরে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা চালানো হলো! এ ঘটনাতো কোন সময়ই স্বাভাবিক হবার কথা নয়। এটি নিশ্চিতভাবে বলা যায় উদ্দেশ্যমূলক ও পরিকল্পিত। স্থানীয় পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের লোকজন যে একেবারেই কিছু জানে না তা বিশ্বাস করার কোন কারণ নেই। স্থানীয় গোয়েন্দা কর্মচারী কর্মকর্তাদের অবশ্যই জানতে হবে কারা রয়েছে এর পেছনে ইন্দনদাতা। হতেই পারে তারা জানেন কিন্তু কাগজে-কলমে বলতে পারছেন না প্রমাণ হাতে নেই বলে। কিন্তু প্রকাশ্যে যিনি পুলিশের কাছে আবেদনকরে সময় নিয়ে মিছিল করলেন, প্রকাশ্য সভায় উস্কানীমূলক বক্তব্য দিলেন তার বিষয়ে তো নতুন কোন প্রমাণের আবশ্যকতা থাকার কথা নয়। তাকে পুলিশের নিয়ম মোতাবেক জিজ্ঞাসা করলে আসল তথ্য যে পাওয়া যাবে এ কথা তো প্রসাশনের কাউকেই চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে বা দেখিয়ে দেবার কথা নয়। তারা তো এতো বোকা নন অবশ্যই। তা’হলে স্বাভাবিক প্রশ্ন আসতেই পারে, তা’হচ্ছেনা কেনো? কোন সে কারণ তা মানুষ জানতে চায়।
ঘটনাটির যে বিবরণ ‘বাংলা ট্রিবিউন’ দিয়েছে তা হুবহু নিম্নে তুলে ধরা হল: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দুদের ঘরবাড়িতে আবারও হামলা চালানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ওই এলাকায় হিন্দুদের অন্ততঃ ছয়টি বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত হোসেন জানান, রাত আড়াইটা থেকে ৩টার মধ্যে হামলার এই ঘটনা ঘটে।
এদিকে, শুক্রবার (৪ঠা নভেম্বর) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক রেজওয়ানুর রহমান, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এ সময় পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য একটি চক্র কাজ করছে। কারা এ কাজ করেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবর নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের এক যুবকের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ছবি পোস্ট করা হয় যা মুসলমানদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার পর স্থানীয়রা ওই যুবককে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। খবর ছড়িয়ে পড়লে ৩০ অক্টোবর সকাল থেকে নাসিরনগর উপজেলা সদরের কলেজ মোড় এবং খেলার মাঠে একাধিক ইসলামি দলের নেতারা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। সমাবেশ চলাকালে হঠাৎ তিন থেকে ৪শ’ লোক সংঘবদ্ধ হয়ে এ ঘটনার জন্য হিন্দু পরিবারগুলোর ওপর চড়াও হয়। এসময় পুরো উপজেলা সদরের হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক পরিবার এবং তাদের মন্দিরের ওপর হামলা চালায় তারা।
অভিযোগ রয়েছে, হামলাকারীদের থামাতে পুলিশ, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। পরে রাতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কাজল দত্ত এবং নির্মল চৌধুরী বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। এসব মামলায় অজ্ঞাত ১২শ’ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ছবি ও সংবাদ: বাংলাট্রিবিউন থেকে সংগৃহীত।