একুশে পদকপ্রাপ্ত গুণী নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী জিনাত বরকতুল্লাহ আর নেই। বুধবার(২০ সেপ্টেম্বর) বিকাল পৌনে পাঁচটায় ধানমন্ডির নিজ বাসায় মারা গেছেন তিনি। খবরটি বাংলা দেশের প্রায় সবক’টি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে।
জানা গেছে, জিনাত বরকতুল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ও ফুসফুস সংক্রমণে আক্রান্ত ছিলেন। ২০২০ সালে তার স্বামী দূরদর্শন ব্যক্তিত্ব মুহম্মদ বরকতুল্লাহ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। সে সময় তিনিও করোনায় আক্রান্ত হয়ে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।
স্বাধীন বাংলাদেশে নৃত্যচর্চায় যে কয়জন অগ্রগণ্য ভূমিকা রেখেছেন, তাদেরই একজন জিনাত বরকতুল্লাহ। সত্তরের দশকের শুরুতেই তার নৃত্যচর্চার সূচনা। প্রথম দিকে তিনি শাস্ত্রীয় নৃত্যের তিনটি ধারা ভারতনাট্যম, কত্থক ও মণিপুরী নৃত্যে শিক্ষা লাভ করেন। কোরিওগ্রাফার গাজী আলিমুদ্দিন মান্নানের তত্ত্বাবধানে নৃত্যশিল্পী জিনাত বরকতুল্লাহ ৪ বছর বয়সে নাচ শেখা শুরু করেছিলেন। তিনি নানান ধরনের নৃত্যের ক্ষেত্রে পারদর্শিতা অর্জন করেন। লোকনৃত্যের সাথে অন্যান্য নাচধারার সমন্বয় ঘটিয়েছিলেন তিনি। একজন নৃত্যশিল্পী হিসেবে তিনি উত্তর কোরিয়ার ছয় মাস ব্যালে শিখেছিলেন।
অভিনয়ে জিনাত বরকতুল্লাহর পথচলা ১৯৮০ সালের ‘মারিয়া আমার মারিয়া’ নাটকের মাধ্যমে। এটি বিটিভিতে প্রচার হয়েছিল। পরবর্তীতে ‘ঘরে বাইরে’, ‘কথা বলা ময়না’, ‘অস্থায়ী নিবাস’, ‘বড় বাড়ি’সহ অন্তত ৮০টি নাটকে তিনি অভিনয় করেছিলেন বলে জানা যায়।
দেশে নৃত্যচর্চায় অসামান্য ভূমিকা রাখায় ২০২২ সালে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হন তিনি। এছাড়া শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, ইউনেস্কো পুরস্কারসহ বহু সম্মাননা লাভ করেছিলেন গুণী এই শিল্পী।