মুক্তকথা সংবাদ নিবন্ধ।। বিগত আগষ্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে আমরা চিরতরে হারিয়েছি স্থানীয় ও জাতীয়ভাবে আমাদের সকলের প্রিয় তিনজন মানুষকে। গত ২৮ আগষ্ট হারিয়েছি আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন একুশের পদকপ্রাপ্ত লেখক সাংবাদিক, আমাদের কথায়, অমর কথাশিল্পী রাহাত খানকে। বাংলাদেশ আরেকজন রাহাত খানকে গড়ে তুলতে পারবে এটি কোনদিনই সম্ভব নয়। রাহাত খান একজনই ছিলেন। এই রাহাত খান আর কোনদিন আসবেন না আমাদের ভুল-ভ্রান্তির পথ দেখাতে।
|
গত ১২ সেপ্টেম্বর আমরা হারিয়েছি আমাদেরই স্থানীয় এক সুহৃদকে। যার পদচারণায় একসময় মুখরিত ছিল বড়লেখা উপজেলা। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তথা ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ গড়ে তোলার একনিষ্ঠ সেবক মোহাম্মদ আনোয়ার উদ্দীনের তিরোধান বড়লেখার মানুষ তথা পুরো বাংলাদেশ কোনকালেই পূরণ করতে পারবে না।
গত ১৮সেপ্টেম্বর আমরা হারিয়েছি দেশের একজন অবিম্বাদিত ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ইসলাম ধর্মীয় মহাজ্ঞানী শাহ আহমদ শফিকে। এই যাদেরকে আমরা হারিয়েছি তারা আর কোনদিন ফিরে আসবে না। এ দেশ থাকবে, এ মাটী থাকবে, শুধু দেহ নিয়ে থাকবে না সুখ্যাতির এ মানুষগুলো। তারা নিজেদের জীবনের মূল্যবান সময় দিয়ে নিজেদেরকে গড়ে তুলেছিলেন। আমাদের দিয়েছেন অনেক হয়তো পাননি কোনকিছুই, যা আমাদের দেয়া প্রয়োজন ছিল। তাদের এ স্থানগুলো অপূরণ থাকবে যুগ যুগ চিরকাল। হয়তো তাদের কেউ কেউ নতুন প্রজন্মের স্মরণে থাকবেন। তাদেরকে আমরা স্মরণে মূর্ত করে রাখি এটিই আমাদের কামনা।
এ তিন জন মানুষের তিরোধানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন এমপি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। প্রয়াত রাহাত খানের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করে মন্ত্রী তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে শোকবার্তায় লিখেন-“সাংবাদিকতা ও সাহিত্য জগতে রাহাত খানের অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
বড়লেখা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনোয়ার উদ্দিনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে ভিন্ন এক শোকবার্তায় মন্ত্রী বলেন- “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর আদর্শ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার একজন একনিষ্ঠ অনুসারী আনোয়ার উদ্দিনের মৃত্যু বড়লেখা উপজেলা আওয়ামী লীগের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। স্থানীয় আওয়ামী লীগে তাঁর মতো একজন নিবেদিতপ্রাণ ও ত্যাগী নেতার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। রাজনীতির পাশাপাশি এলাকার বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে তাঁর ভূমিকা উপজেলাবাসীর হৃদয়ে চির জাগরুক হয়ে থাকবে।”
হেফাজতে ইসলামের আমির, হাটহাজারী মাদ্রাসার দীর্ঘদিনের মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে মন্ত্রী লিখেন-“উপমহাদেশের বিখ্যাত আলেমে দ্বীন, বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসা সমূহের শীর্ষ সংগঠন আল হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া এর চেয়ারম্যান, বেফাকুল মাদারিস, বাংলাদেশের চেয়ারম্যান, আল-জামিয়াতুল আহলিয়া মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী, চট্টগ্রাম মাদ্রাসার সম্মানিত মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফী ছিলেন বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমে-দ্বীন। মওলানা আল্লামা আহমদ শফী দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোর মধ্যে প্রাচীন ও বৃহত্তম চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালক হিসেবে কওমি মাদ্রাসাগুলোর নেতৃত্ব দিয়েছেন। দেশে ইসলামী শিক্ষার বিস্তার ও স্বীকৃতি অর্জনে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য। সূত্র: সিনিয়র তথ্য অফিসার, দীপংকর বর স্বাক্ষরিত, পরিবেশ, বন জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, ঢাকা ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০।
|