মৌলভীবাজার মনু সেচ প্রকল্পের আওয়াতাধীন রাজনগর উপজেলায় ৪টি পানি নিষ্কাশনের চেক গেইট বিকল হয়ে পড়েছে। চাহিদা মতো পানি না পাওয়ায় বোরো চাষাবাদ করতে পারছেন না কৃষকরা। নষ্ট হচ্ছে ধানের চারা। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাশীনহতায় উপজেলার ৫’শ একর জমিতে বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এদিকে ওই গেইট মেরামত না হলে বর্ষা মৌসুমে পানি জমাট বেঁধে সংশ্লিষ্ট এলাকায় আউশ-আমন চাষা বাঁধে ক্ষতির আশংকা রয়েছে।
জানা যায়, হাওর ও হাওরের উপরীভাগের অনাবাদি কৃষি জমি চাষাবাদের আওতায় আনতে ১৯৭৫ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড মনু নদীর উপরে সুইচ গেইট বসিয়ে সেচ প্রকল্প স্থাপন করে। এই সেচ প্রকল্পের আওতায় রাজনগর উপজেলায় ৮টি সেচ খাল স্থাপন করা হয়। বর্তমানে ৪টি খালে পানি নিষ্কাশনের চেক গেইট মোটামুটি সচল থাকলেও উপজেলার ঘড়গাঁও সেচ খাল (আর.এল.৪) এর এল-১ তৃতীয় ধাপের গেইট, জামুরা সেচ খাল (আর.এল,৬ ও ৭) এর চেক গেইট ও কুবঝাড় সেচ খাল(আর.এল ২) বিকল।
সরেজমিন দেখা যায়, এর মধ্যে ঘড়গাঁও সেচ খালের তারশেয়ারী গেইট ও জামুরা চেক গেইটের যন্ত্রাংশ নষ্ট হওয়ায় বিকল হয়ে পড়েছে। বড় গাঁও থেকে কুবঝাড় পর্যন্ত সেচ খালটি দখল-দূষনে ব্যবহারের অনুপযোগী। যার ফলে বিকলকৃত খাল দিয়ে পানি নিষ্কাশন হচ্ছেনা। এই খালের পানি দিয়ে বিগত বছর গুলোতে বোর আবাদকৃত কৃষি জমিতে পানি সংকটে এ বছর বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
ঘড়গাঁও সেচ খাল এর আওতাধীন উপকারভোগী পশ্চিমভাগ গ্রামের শাহ আলম মিয়া, কানিকিয়ারি গ্রামের ছালিক মিয়া, সুবিদপুর গ্রামের লুৎফুর ও ভুমিইড়া গ্রামের ছাদিক বলেন, পানির অভাবে এলাকায় প্রায় ১’শ একর জমিতে বোরো চাষাবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সচল করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডে একাধিক বার যোগাযোগ করেও কাজ হচ্ছেনা।
জামুরা সেচ খাল এর আওতাধীন সোনাটিকি গ্রামের চানু মিয়া, সুপ্রাকান্দি গ্রামের খালিছ মিয়া বলেন, অন্যান্য বছর পৌষ মাসের মধ্যে আমরা বোরো রোপন শেষ করি। এ বছর পৌষ মাস গিয়ে মাঘ মাস চলে যাচ্ছে কিন্তু এখনও জমিতে পানি পাচ্ছিনা। এদিকে ধানের চারার বয়স বেশি হয়ে যাওয়ায় চারা লাল হয়ে গেছে। কয়েক দিনের মধ্যে যদি পর্যাপ্ত পানি না পাওয়া যায় তাহলে চারা নষ্ট হয়ে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাজনগর উপজেলার দায়িত্বরত সম্প্রসারণ উপ-পরিদর্শক মো. জাকির হোসেন বলেন, চেক গেইটের যন্ত্রাংশ নষ্টের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত রির্পোট করছি। কিন্তু কোন কাজে আসছেনা।
রাজনগর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ইফফাত আরা ইসলাম বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করার পরেও বিকল হওয়া গেইটগুলো ঠিক হচ্ছেনা। অনেক স্থানে কৃষকরা পানির জন্য সমস্যায় পড়ছে।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহি প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান বলেন, বরাদ্দ এসেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ হবে।